হাবীবুর রহমানের দুটি ছড়া

প্রকাশিত : জুন ১৭, ২০২০

কবি ও সাংবাদিক হাবীবুর রহমানের আজ মৃত্যুদিন। ১৯৭৬ সালের ১৭ জুন তিনি ঢাকায় মারা যান। তার জন্ম ১৯২৩ সালের ১ জুলাই, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট থানার পালিশ গ্রামে। ছাড়পত্রের পক্ষ থেকে তার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে তার রচিত দুটি ছড়া পুনর্মুদ্রণ করা হলো:

কেমন বড়াই

লোকটা শুধু করত বড়াই—
‘দেখে নিতাম লাগলে লড়াই !’
উইঢিবিতে মারতো ঘুষি
চোখ পাকিয়ে জোরসে ঠুসি।
বাহু ঠুকে ফুলিয়ে ছাতি
বলতো, ‘আসুক বাঘ কি হাতি !
আমি কি আর কারেও ডরাই?
ভাঙতে পারি লোহার কড়াই।’
শুনে সবে কাঁপতো ডরে,
খিল লাগিয়ে থাকত ঘরে।
একদিন এক ভোরের বেলায়
বেবাক লোকের ঘুম ভেঙে যায়,
ঘর ছেড়ে সব বাইরে এসে
বাড়িয়ে গলা দেখল শেষে;
ঢিবির পাশে বাঁধের গোড়ায়,
লোকটা কেবল গড়িয়ে বেড়ায়।

সকাল

কাঁচা কাঁচা রোদ মাখা সকালবেলা,
আকাশে ভাসালো আজ আলোর ভেলা।
গাছে গাছে চিকচিক
আলো হাসে ফিকফিক
চালে চালে ঝিকঝিক এ কোন্ খেলা,
কাঁচা সোনা রোদ মাখা সকালবেলা।

শাখে শাখে সে আলোর পরশ লাগে,
দিকে দিকে যেন কোন্ জীবন জাগে।
ফুলে ফুলে উতরোল
জাগরণ কলরোল
বাতাসেতে হিল্লোল প্রভাতি ফাগে,
দিকে দিকে জীবনের পরশ লাগে।

এসো আজ মুঠি মুঠি মাখি সে আলো,
ধুয়ে যাক মুছে যাক মনের কালো।
এ আলোর কুমকুম
দিয়ে যাক রাঙাচুম
মনজুড়ে রেখে যাক অনেক ভালো,
এসো ভাই মুঠি মুঠি মাখি এ আলো।