
ইরান যাতে তেল বেচতে না পারে সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : জুলাই ৩১, ২০২৫
ইরানের জাহাজ পরিবহন শিল্পকে লক্ষ্য করে নতুন করে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে একশোর বেশি ব্যক্তি, কোম্পানি ও জাহাজ, যারা ইরানের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে মার্কিন প্রশাসনের দাবি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে ইরানের ওপর চাপ বাড়ানোর অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে জুন মাসে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে চালানো বিমান হামলার পর এটি আরও তীব্র হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য হলো, ইরান যাতে তেল বেচতে না পারে এবং যে অর্থ দেশটির শাসনব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখছে সেটিকে থামানো।
নতুন এই নিষেধাজ্ঞায় মূলত মোহাম্মদ হোসেইন শামখানির মালিকানাধীন শিপিং স্বার্থকে টার্গেট করা হয়েছে। তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা আলি শামখানির পুত্র।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ একে ২০১৮ সালের পর থেকে ইরানকে ঘিরে সবচেয়ে বড় নিষেধাজ্ঞা কার্যক্রম হিসেবে অভিহিত করেছে। ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, মোহাম্মদ হোসেইন শামখানি জটিল মধ্যস্থতাকারী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কন্টেইনার জাহাজ ও ট্যাংকার পরিচালনা করেন, যা ইরান ও রাশিয়ার তেলসহ বিভিন্ন পণ্য বিশ্ববাজারে বিক্রি করে।
বিভাগটির অভিযোগ, তেহরানের প্রভাবশালী সংযোগ ও দুর্নীতির মাধ্যমে শামখানি কয়েক দশমিক বিলিয়ন ডলার মুনাফা অর্জন করেছেন, যা ইরানের সরকারকে সহায়তা করতে ব্যবহার করা হয়।
এই নিষেধাজ্ঞায় ১৫টি শিপিং কোম্পানি, ৫২টি জাহাজ, ১২ জন ব্যক্তি এবং ৫৩টি প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করা হয়েছে— যারা ১৭টি দেশে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে পানামা, ইতালি ও হংকংসহ অনেকে।
মার্কিন এক কর্মকর্তা বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা ইরানের জন্য তেল বিক্রি করা অনেক কঠিন করে তুলবে। তবে এর ফলে বিশ্ব তেলবাজারে দীর্ঘমেয়াদী কোনো অস্থিরতা হবে না। বছরের শুরুতে দৈনিক ১৮ লাখ ব্যারেল থেকে ইরানের তেল রপ্তানি কমে বর্তমানে দৈনিক ১২ লাখ ব্যারেলে নেমে এসেছে। আমরা আরও পদক্ষেপ নিচ্ছি যাতে এই সংখ্যা আরও কমিয়ে আনা যায়।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই বলেন, “এসব নিষেধাজ্ঞা ইরানি জাতির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুতার স্পষ্ট উদাহরণ। এ নিষেধাজ্ঞা ইরানের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে আঘাত হানার দুষ্টচক্র।”