কবি খেট থি

কবি খেট থি

কবি খেট থি-কে হত্যার প্রতিবাদে আজ শাহবাগে কবিতাপাঠ

রহমান মুফিজ

প্রকাশিত : মে ১২, ২০২১

তীব্র দমন-পীড়নের মুখেও গণতন্ত্রের জন্য নিরবচ্ছিন্ন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের মানুষ। রাজপথে প্রতিদিন ঝরছে গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রাণ। বিক্ষোভে অংশ নিতে গিয়ে সামরিক জান্তার গুলিতে এ পর্যন্ত মারা গেছে প্রায় আটশো মানুষ। এরপরও প্রতিবাদ স্তিমিত হয়নি।

এ প্রাণপাত কেবলই গণতন্ত্রের জন্য; মুক্তির জন্য। সামরিক জান্তা কেবল রাজপথে গুলি চালিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না, প্রতিদিন বিক্ষোভের সংগঠকদের তো বটেই, অনবরত গুম করে চলেছে গণতন্ত্রের লড়াইয়ে প্রেরণাদানকারী অজস্র লেখক, বুদ্ধিজীবী ও কবি-সাহিত্যিককে।

সর্বশেষ তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে সেখানকার গণতন্ত্রের আন্দোলনে নিবেদিত ও সোচ্চার কবি খেট থি-কে। মিয়ানমারের সব খবর বিশ্বগণমাধ্যমে উঠে আসছে না। চরম দমনপীড়নের মধ্যে বিশ্বস্ত ও অপ্রাতিষ্ঠানিক নানা সোর্স থেকে যেসব তথ্য উঠে আসছে তাতেই দেশটির সামরিক জান্তার বর্বরোচিত চিত্রই ধরা পড়ছে।

পৃথিবীতে নিকট অতীতে গণতন্ত্রের জন্য এত প্রাণক্ষয় আর কোথাও ঘটেনি, যেমনটা ঘটছে আজ মিয়ানমারে। অথচ মিয়ানমার সামরিক জান্তার এ বর্বর অবস্থান ও পাইকারি দরে মানুষ হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তো দূরের কথা, সৌজন্যবশত নিন্দাও জানাচ্ছে না এ অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলো।

আঞ্চলিক রাজনীতি, আঞ্চলিক স্বার্থ, কূটনীতি আসলে কার জন্য? মানুষের জন্য নাকি নিপীড়ক শাসকগোষ্ঠীর জন্য? শাসকদের স্বার্থগত সিন্ডিকেটই যদি শেষ কথা হয়, মানুষ এবং তার স্বাধীনতার প্রসঙ্গ যদি গৌণ হয়ে ওঠে তবে রাষ্ট্র, রাষ্ট্রসংঘ, জাতিপুঞ্জের আঞ্চলিক ঐক্য এইসব প্রত্যয়কে মানুষ কেন মেনে নেবে?

মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী মানুষের আন্দোলন এই দেশের ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারবিরোধী অর্থাৎ গণতন্ত্রকামী মানুষেরও প্রেরণাদায়ী শক্তি। এ আন্দোলনের শহীদ কবি খেট থি আমাদেরই আত্মজ। আসুন খেট থি হত্যার বিচার দাবির মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের বর্বরোচিত দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান ব্যক্তি করি।

সহংতি জানাই মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী মানুষের লড়াইয়ে। সেইসঙ্গে দেশ ও দেশের বাইরে সব ধরনের অগণতান্ত্রিক, ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে নিজেদের শক্তিকে সংহত করি। আজ বুধবার বিকেল ৪টায় শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘরে কবিতা পাঠের আয়োজন করা হয়েছে। আসুন, প্রতিবাদে অংশ নিই।