প্রাচ্য, পাশ্চাত্য ও ইসলাম

পর্ব ১

ভাষান্তর: সাঈদ ওবায়দুল্লাহ

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ২২, ২০২২

আলিজা আলী ইজেতবেগোভিচের বিখ্যাত বই ‘ইসলাম বিটুইন ইস্ট এন্ড ওয়েস্ট’ পড়তে গিয়ে পৃথিবীর প্রচলতি মতাদর্শগুলির সাথে সাথে ইসলামকে নতুনভাবে জানা ও বোঝার আগ্রহ জন্মেছে। বইটির নির্বাচিত কিছু অংশ ক্রমান্বয়ে অনুবাদের ইচ্ছা আছে। –আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ

বইটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে
আজকের দুনিয়া প্রবল মতাদর্শিক লড়াইয়ের মুখোমুখি। আমরা সবাই এর সাথে কোনো না কোনো ভাবে জড়িত আছি– হয় এর অংশীদার হিসাবে অথবা এর শিকার হিসাবে। এই বিশাল দ্বন্দ্বে ইসলামের অবস্থান কী? বর্তমানের এই দুনিয়া গঠনে ইসলামের ভূমিকা কী? এই বইটি আংশিকভাবে এই প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবে।

বর্তমান বিশ্বে তিনটি অবিচ্ছেদ্য দৃষ্টিভঙ্গি প্রচলিত আছে: ধর্মীয়, বস্তুবাদী এবং ইসলামিক। এরা তিনটি মৌলিক সম্ভাবনাকে প্রতিফলিত করে–বিবেক, প্রকৃতি ও মানুষ। আবার তাদের প্রত্যেকেই নিজেকে প্রকাশ করে তিন ধর্মে– খ্রিস্টধর্ম, বস্তুবাদ ও ইসলাম। প্রাচীনতম সময় থেকে এখন পর্যন্ত যত সব মতাদর্শ, দর্শন এবং শিক্ষা আমাদের কাছে আসছে সেগুলিকে উপরোক্ত তিনটি মৌলিক বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গির যে কোনো একটিতে রাখা যেতে পারে। প্রথম সম্ভাবনা আত্মাকে অস্তিত্বের সূচনা বিন্দু হিসাবে গ্রহণ করে, দ্বিতীয়টি পদার্থকে, এবং তৃতীয়টির যুগপৎ আত্মা এবং বস্তুকে অস্তিত্বের সারসত্তা হিসাবে ধরে নেয় । যদি শুধুমাত্র বস্তু বিদ্যমান থাকে, তাহলে শুধুমাত্র বস্তুবাদ হবে পৃথিবীর দর্শন। এর বিপরীতে যদি আত্মা বিদ্যমান থাকে, তাহলে মানুষেরও অস্তিত্ব আছে, এবং আমরা জানি মানুষের জীবন ধর্ম এবং নৈতিকতা ছাড়া অর্থহীন।

ইসলাম হলো আত্মা ও বস্তুর ঐক্যের নাম, যার সর্বোচ্চ রূপ হলো মানুষ নিজেই। মানুষের জীবন তখনই পূর্ণ হয় যদি এতে শারীরিক এবং আধ্যাত্মিক উভয় ইচ্ছাগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকে। মানুষের ব্যর্থতা, হয় তার জৈবিক চাহিদায় ধর্মীয় প্রভাবের অস্বীকারের কারণে নতুবা আধ্যাত্মিক ইচ্ছায় বস্তুবাদী প্রভাবের অস্বীকার করার কারণে।

আমাদের পূর্বপুরুষরা বলতেন, পৃথিবীতে দুটি সারসত্তা আছে– মন ও বস্তু। যার অধীনে তারা দুটি উপাদান, দুটি বিশ্বব্যবস্থাকে বুঝতেন। এইগুলির উত্স এবং প্রকৃতি ভিন্ন এবং যা একে অপরের থেকে উদ্ভূত হয় না এবং একটিকে অন্যটিতে রূপান্তরিত করা যায় না। দ্বৈতবাদ মানুষের নিকটতম অনুভূতি, তবে এটি সর্বোচ্চ মানব দর্শন নয় । অন্যদিকে, পৃথিবীর মহান দর্শন-রচনাগুলি অদ্বৈতবাদী। মানুষ দ্বৈতভাবে বিশ্বকে অনুভব করে কিন্তু অদ্বৈতবাদ সমস্ত মানুষের চিন্তার সারমর্মে রয়েছে। দর্শন দ্বৈতবাদের সাথে একমত নয়। বাস্তবে যেহেতু আমরা মানুষ তাই আমরা বেঁচে আছি দুটি বাস্তবতা নিয়ে। আমরা এই দুই জগতকে অস্বীকার করতে পারি, কিন্তু তাদের কাছ থেকে পালাতে পারি না।

অতএব প্রশ্ন দাঁড়ায়, আমরা দুটি জীবন যাপন করি কিনা? এর উত্তর সহজ হয়ে যায় যদি বুঝতে পারি আমরা আসলেই এই দুই জীবন নিয়ে বসবাস করছি। এর মধ্যেই ইসলামের চূড়ান্ত অর্থ নিহিত রয়েছে। জীবন দ্বৈত। যে মুহূর্ত থেকে মানুষ উদ্ভিদ বা প্রাণীতে পরিণত হয়নি, মানুষ মানুষ হয়েছে, যে মুহূর্ত থেকে সে ‘কালু বালা’ (মানুষকে পৃথিবীতে পাঠানোর পূর্বে আত্মার জগতে মানুষসহ সকল প্রাণীর আত্মাকে আল্লাহ জিজ্ঞাস করেছেন, ‘আলাসতু বি রাব্বিকুম- আমি কি তোমাদের প্রভু নই?’ ‘কালু বালা- তারা বলল, হ্যাঁ’। তার মানে তখন সবাই আল্লাহকে প্রভু হিসেবে স্বীকার করেছে। কুরআন ৭ :১৭২) এর সাক্ষী হয়েছে, যখন থেকে নৈতিক বিধিবিধান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যখন থেকে মানুষকে জান্নাত থেকে বিদায় করে প্রথিবীতে বাস করার অনুমতি দেয়া হয়েছে তখন থেকেই মানুষের পক্ষে ট্যাকনিকালি অসম্ভব হয়ে উঠেছে একটিমাত্র জীবন যাপন করার।

আমাদের কাছে কোন যৌক্তিক প্রমাণ নেই যে অন্য পৃথিবীর অস্তিত্ব আছে। কিন্তু আমাদের একটি স্পষ্ট অনুভূতি আছে যে মানুষ শুধুমাত্র উৎপাদন এবং গ্রাস করতে জন্ম হয় নাই। বিজ্ঞানী বা চিন্তাবিদ যারা সত্য আবিষ্কারের চেষ্টা করেন তারা একা চিন্তা করে সেই উচ্চতর জীবন খুঁজে পায় না। কিন্তু নিজেদের জীবনকে সত্যের সন্ধানে ব্যয় করা এবং শারীরিক জীবনযাপনকে অবহেলা করা- মানুষের অস্তিত্বের একটি উচ্চতর রূপ।

মানব ইতিহাসের চিন্তাধারা- ভাববাদ এবং বস্তুবাদ দুটি সমান্তরাল ধারায় বহমান - তাদের অবিরাম পারস্পরিক শত্রুতা সত্ত্বেও, তারা কোন অপরিহার্য অগ্রগতি দেখাতে পারে নাই। ভাববাদ প্রথমে প্লেটো দিয়ে শুরু হয় এবং খ্রিস্টান চিন্তাবিদদের মধ্য দিয়ে চলে মধ্যযুগ পর্যন্ত। এই ধারায় তারপরে একে একে আসেন আল-গাজালি, দেকার্ত, ম্যালেনব্রাঞ্চ, লিবনিজ, বার্কলে, ফিচে, কুডওয়ার্থ, কান্ট, হেগেল, মাখ এবং বার্গসন। বস্তুবাদী লাইন হিসাবে উপস্থাপন করা যেতে পারে- থ্যালেস, অ্যানাক্সিমান্ডার, হেরাক্লিটাস, লুক্রেটিয়াস, হবস, গ্যাসেন্ডি, হেলভেটিয়াস, হলবাখ, দিদেরট, স্পেন্সার এবং মার্ক্স। মানুষের চিন্তার এই দুটি ধারা - মানবতাবাদ এবং প্রগতিকে প্রতিনিধিত্ব করে। পশ্চিমাদের মতে ধর্ম মানুষকে প্রগতির দিকে ধাবিত করে না এবং বিজ্ঞান মানুষকে মানবতাবাদের দিকে নিয়ে যায় না।

যাই হোক, বাস্তবে বিশুদ্ধ ধর্ম বা বিশুদ্ধ বিজ্ঞান বলতে কিছু নাই। উদাহরণস্বরূপ বিজ্ঞানের কিছু উপাদান ছাড়া কোনো ধর্ম নাই এবং কিছু ধর্মীয় উপাদান ছাড়া কোন বিজ্ঞান নাই। এই বাস্তবতা এমন একটি মিশ্রণ তৈরি করে যেখানে প্রকৃত উৎস খুঁজে পাওয়া কঠিন বা একটি ধারণা বা প্রবণতার সত্যিকারের জায়গা পাওয়া জটিল। সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেই আমাদের উদ্দেশ্য এবং তাদের বিশুদ্ধ গঠনে পৌঁছানো। আমরা এই দুটি ব্যবস্থা খুঁজে পাব- দুটি অভ্যন্তরীণভাবে যৌক্তিক এবং বদ্ধ নির্দেশনা হিসাবে। কিন্তু আমাদের অনেকের কাছে এই ছবিটি আশ্চর্যজনক মনে হবে। এমনকি তারা একে অপরকে মোজাইক শিল্প হিসাবে ব্যাখ্যা করে- যেখানে খালি জায়গাটিকে বিপরীত যুক্তি ব্যবহার করে পূরণ করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বস্তুবাদ দাবি করে যে শুধুমাত্র বস্তুনিষ্ঠ বিষয়গুলি সমস্ত ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর প্রধান চালক। তেমনিভাবে এর বিপরীতে বিরোধী মতামত পাওয়াও প্রত্যাশিত।

প্রকৃতপক্ষে, সংক্ষিপ্ত অনুসন্ধানের পরে আমরা খুঁজে পাই ইতিহাসের তথাকথিত বীরত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা। উদাহরণস্বরূপ কার্লাইলের মতে, পৃথিবীর সব ঐতিহাসিক ঘটনা শক্তিশালী চরিত্র - নায়ক দ্বারা প্রভাবিত। বস্তুবাদীদের মতে, "ইতিহাস মাথার উপর দিয়ে হাঁটে না। কিন্তু অন্যদের মতে বেশ বিপরীত ভাষ্যও আছে। যারা বলে- প্রতিভাবানেরাই ইতিহাস তৈরি করে।

পূর্ববর্তী উদাহরণগুলোতে আমরা দেখতে পাই, ঐতিহাসিক বস্তুবাদ খ্রিস্টান ব্যক্তিত্ববাদের বিরুদ্ধে, এবং একই যুক্তিতে, সৃষ্টিবাদ বিবর্তনের বিরুদ্ধে, আদর্শ স্বার্থের বিরুদ্ধে, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অভিন্নতা, সমাজের বিরুদ্ধে ব্যক্তিত্ব এবং আরও অনেক কিছু। ধর্ম এবং বস্তুবাদ হল পৃথিবীর দুটি প্রাথমিক দৃষ্টিভঙ্গি, যার কোনটিকেই আর বিভক্ত করা যাবে না। একের অপরের সাথে মেশানোও যাবে না। এই ক্ষেত্রে কোরান থেকে একটি চিত্র ব্যবহার করা যায়, দুই সমুদ্র একে অপরের উপর বিজয়ী হতে পারে না। (কোরান ৫৫: ১৯-২০)।

বিশ্বের উপরোক্ত দুটি দৃষ্টিভঙ্গি কোনো একটির পক্ষে উপযুক্ত যুক্তি খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। তারা নিজেদের মধ্যে নিজেরা উভয়ই যুক্তিযুক্ত ব্যবস্থা এবং অন্য কোন এমন যুক্তি নাই যা তাদের ওপর দাঁড়াতে পারে এবং বিচার করতে পারে। নীতিগতভাবে এবং বাস্তবে শুধুমাত্র মানুষের জীবন তাদের ওপরে। বেঁচে থাকা এবং সর্বোপরি সম্পূর্ণ এবং ন্যায়পরায়ণভাবে বেঁচে থাকা যে কোনো ধর্ম বা সমাজতন্ত্রের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। খ্রিস্টধর্ম পরিত্রাণের প্রস্তাব দেয় , কিন্তু এটি শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ পরিত্রাণ। সমাজতন্ত্র শুধুমাত্র বাহ্যিক পরিত্রাণ প্রদান করে । এই দুটি সমান্তরাল, বিরোধী বিশ্বের মুখোমুখি হয়ে আমরা অনুভব করি তাদের উভয়কেই আমাদের মেনে নিতে হয়। লক্ষ্য থাকে তাদের মধ্যে নতুন প্রাকৃতিক ভারসাম্য খুঁজে বের করা। এই দুটি বিপরীত শিক্ষাব্যবস্থা মানুষের ভাগ্য, সত্য এবং জীবন তাদের মধ্যে ভাগ করে নেয়।

জীবনের কিছু সত্য ঘটনা বা তথ্য আছে যার ওপর ভর করে কেউ কেউ জীবনকে সাজিয়ে তোলে, নিজের দর্শন যাই হোক না কেন। মানুষ এইগুলি শিখেছে তার সাধারণ জ্ঞান এবং তার সাফল্য বা ব্যর্থতা পরখ করে। এই বিষয়গুলো হলো- পরিবার, বস্তুগত নিরাপত্তা, সুখ, ন্যায়পরায়নতা, সত্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, স্বাধীনতা, আগ্রহ, ক্ষমতা, দায়িত্ব এবং এরকম আরো কিছু। যদি যদি আমরা এই উপাত্তগুলি বিশ্লেষণ করি, আমরা দেখতে পাব যে তারা একটি সাধারণ অক্ষরেখার চারপাশে জড়ো হয় এবং একটি বাস্তবসম্মত সিস্টেম তৈরি করে। সিস্টেমটি ভিন্নধর্মী এবং অসম্পূর্ণ হতে পারে কিন্তু এটি ইসলাম ধর্মকেই স্মরণ করিয়ে দেয়।

মার্কসবাদ পরিবার ও রাষ্ট্রকে প্রত্যাখ্যান করেছে, কিন্তু বাস্তবে এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধরে রেখেছে। প্রতিটি বিশুদ্ধ ধর্ম এই পৃথিবী সম্পর্কে মানুষের উদ্বেগকে বাতিল করে, কিন্তু জীবিত মানুষের আদর্শ হিসাবে সামাজিক ন্যায়বিচার এবং একটি উন্নত বিশ্বের জন্য সংগ্রাম করে। মার্ক্সবাদ কিছু মাত্রায় ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং ধর্মের কিছু ব্যবহার গ্রহণ করে। বাস্তব জীবনে এটা স্পষ্ট যে মানুষ সেই অনুযায়ী একটি নিয়মিত ও রীতিমাফিক দর্শনকে ভিত্তি করে জীবনযাপন করতে পারে না।

প্রশ্ন হলো, তারা কোনো উপায় খুঁজে বের করতে পারবে কি না এবং তাদের মত তারা রয়ে যাবে কি না?। বাস্তব জীবনে নিজেদের মানিয়ে নিতে, তারা একে অপর থেকে ধার করে। খ্রিস্ট ধর্ম, যা আজ একটি চার্চে পরিণত হয়েছে, সেটি কথা বলতে শুরু করেছে কাজ, সম্পদ, ক্ষমতা, শিক্ষা, বিজ্ঞান, বিবাহ, আইন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার সম্পর্কে। আর অন্যদিকে বস্তুবাদ, যা সমাজতন্ত্র এসেছে, সেটি মানবতাবাদ, নৈতিকতা, শিল্প, সৃষ্টি, ন্যায়বিচার, দায়িত্ব, স্বাধীনতা ইত্যাদি সম্পর্কে কথা বলে।

বিশুদ্ধ মতবাদের পরিবর্তে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহারের জন্য তাদের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। তাই ধর্ম ও বস্তুবাদ উভয়েরই বিকৃতি ঘটেছে এক ধরনের আইন অনুযায়ী। উভয় ক্ষেত্রেই সমস্যা একই- জীবনের একটি মাত্র দিক কীভাবে আমাদের জীবনে বাস্তবায়িত হবে- যেখানে জীবন আরো জটিল?

তত্ত্বগতভাবে, একজন মানুষ খ্রিস্টান বা বস্তুবাদী হতে পারে, আবার মৌলবাদীও হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে কেউই ধারাবাহিক নয়, খ্রিস্টানও নয় বস্তুবাদীরাও নয়। আধুনিক ইউটোপিয়ান দেশ, চীন, কোরিয়া এবং ভিয়েতনাম যারা নিজেদেরকে ধরে রেখেছে মার্কসবাদী শিক্ষার সবচেয়ে উজ্জ্বল উদাহরণ হিসাবে, তাদেরও আছে আপস এবং অসঙ্গতির ইতিহাস। নতুন নৈতিকতা গঠনের জন্য তারা সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের খুব একটা ভরসা রাখতে পারে নাই। এর পরিবর্তে তারা তাদের প্রচলিত ঐতিহ্যগত নৈতিকতা মেনে নিয়েছে বিশেষ করে তাদের বিনয় এবং বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ করার মাধ্যমে। এভাবে আমরা উগ্র মার্কসবাদের পাশে ধর্মের দুটি মূলনীতি খুঁজে পাই।

কিছু সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ভালো কাজকে পুরস্কৃত করা হয় বস্তুগত পুরস্কারের পরিবর্তে নৈতিক পুরস্কার দিয়ে। তবে এই নৈতিক পুরস্কার বস্তুবাদী দর্শন দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। একইভাবে মানবতাবাদ, ন্যায়বিচার, সাম্য, স্বাধীনতা, মানবাধিকারের জন্য আশা এবং আকাঙ্ক্ষা- এসবের প্রকৃত উৎস হলো ধর্ম । অবশ্যই প্রত্যেকেরই সেভাবে বাঁচার অধিকার আছে যেভাবে সে সবচেয়ে ভালো মনে করে। তবুও, সঠিকভাবে পৃথিবীকে বোঝার জন্য বিশ্ব শাসনকারী ইডিয়োলজিগুলির অর্থ এবং উৎপত্তি জানা জরুরি।