বইমেলায় মুজিব ইরমের ‘পয়ারপুস্তক’

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২০

অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০ এ প্রকাশিত হয়েছে কবি মুজিব ইরমের কবিতার বই ‘পয়ারপুস্তক’। ‘চৈতন্য’ থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মাসুক হেলাল। মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ৫৫০-৫৫১ নম্বর চৈতন্যের স্টলে পাওয়া যাবে ‘পয়ারপুস্তক’।

কবিতার এ বইটির বিষয়ে মুজিব ইরম বলেন, “পয়ারপুস্তককে আমার ১৬তম প্রথম কবিতার বই বলতে চাই। কেননা একটা বই-ই তো আমি লিখতে চাই জীবনভর। আর আমার তো বেদনার শেষ নেই। আমি তো হাছন, করিম, রাধারমণের দেশের লোক। কথা ছিল, আমিও শ্রীহট্টে জন্মে গান বাঁধবো, দোতারা নিয়ে ঘুরবো হাওরে-বাঁওড়ে। সিলটি জবানে, নাগরী হরফে লিখবো পুঁথি ও পয়ার। মালজোড়া, পীরমুর্শিদীর টানে ঘরহারা হবো, নারীছাড়া, সংসারছাড়া হবো! গাইবো বন্ধুয়ার সুরত।”

ইরম আরো বলেন, “এসব কিছুই হলো না! কবিতা কবিতা করে বাড়িছাড়া, দেশছাড়া হলাম। তবুও কী কবিতার দেখা পেলাম! লিখতে পারলাম কবিতা, অধরা সুরত! এই হাহাকার, কবিতা লিখতে না পারার হাহাকার, গান ও সুর বাঁধতে না পারার হাহাকার থেকে, বেদনা থেকে লিখেছি এই সব কবিতা, এই পয়ারপুস্তক। যখনই পয়ার লিখতে বসি, সেই পয়লা পুস্তক থেকে আজ পর্যন্ত, মনে হয়, এই লেখাগুলোই মূলত নিজের জন্যে লিখছি। আর সব লিখেছি, লিখছি অন্যের জন্যে। আর এসব ভাবতে ভাবতে লিখতে থাকি পয়ার, লিখতে থাকি নিজের জন্যে কতো কিছু না-লিখতে পারার বেদনা। মনে হয় এই বইটি নিজের। আর সব পরের।”

উল্লেখ্য, মুজিব ইরমের প্রথম কবিতার বই ‘মুজিব ইরম ভনে শোনে কাব্যবান’ প্রকাশিত হয় ১৯৯৬ সালে, বাংলা একাডেমি থেকে। তার প্রকাশিত অন্যান্য কবিতার বইগুলো হচ্ছে, ‘ইরমকথা’ ১৯৯৯, ‘ইরমকথার পরের কথা’ ২০০১, ‘ইতা আমি লিখে রাখি’ ২০০৫, ‘উত্তরবিরহচরিত’ ২০০৬, ‘সাং নালিহুরী’ ২০০৭, ‘শ্রী’ ২০০৮, ‘আদিপুস্তক’ ২০১০, ‘লালবই’ ২০১১, ‘নির্ণয় ন জানি’ ২০১২, ‘কবিবংশ’ ২০১৪, ‘শ্রীহট্টকীর্তন’ ২০১৬, ‘চম্পূকাব্য’ ২০১৭, ‘আমার নাম মুজিব ইরম আমি একটি কবিতা বলবো’ ২০১৮ এবং ‘পাঠ্যবই’ ২০১৯।

‘মুজিব ইরম ভনে শোনে কাব্যবান’ গ্রন্থের জন্য কবি পেয়েছেন ‘বাংলা একাডেমি তরুণ লেখক প্রকল্প পুরস্কার ১৯৯৬’। বাংলা কবিতায় সার্বিক অবদানের জন্য পেয়েছেন ‘সংহতি সাহিত্য পদক ২০০৯’, ‘কবি দিলওয়ার সাহিত্য পুরস্কার ২০১৪’। ‘কবিবংশ’ গ্রন্থের জন্য পেয়েছেন ‘ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার ২০১৪’। ‘শ্রীহট্টকীর্তন’ গ্রন্থের জন্য পেয়েছেন ‘সিটি-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার ২০১৬’। মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস ‘জয় বাংলা’র জন্য পেয়েছেন ‘এম নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৭’। কবিতা ও কথাসাহিত্যে সার্বিক অবদানের জন্য পেয়েছেন ‘শালুক সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯’। এছাড়া পেয়েছেন বাংলা একাডেমি ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ পুরস্কার ২০১৭’।