বইমেলায় গণমাধ্যমে অদ্ভুত ক্যারেক্টার ছাড়া কিচ্ছু নেই

রোকনুজ্জামান মনি

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪

এবারের বইমেলায় মুশতাক-তিশা, সাবরিনা আর টিপু সুলতানদের যেভাবে প্রমোট করা হচ্ছে বা তাদের নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে— এর প্রভাব কিন্তু দীর্ঘমেয়াদিই হবে। তাদের বিশেষ কোনো বিষয় থাকলে সেটা মিডিয়া কাভারেজ পেতেই পারে। কিন্তু বইমেলা কেন্দ্রিক তাদের যেভাবে কাভারেজ দেওয়া হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে বইমেলা মানে শুধু এই মানুষগুলোই। এরাই এবারের সেরা লেখক! ফলে এদের প্রতিভার ঝলকানিতে অন্য নতুন লেখকরা যেমন কোণঠাসা, তেমনি নতুন পাঠকরা ভ্যাবাচেকা!

এই ঘটনাগুলোর মধ্যদিয়েই আমরা কিন্তু বইমেলার প্রাসঙ্গিকতা থেকে ছিটকে পড়ছি। এমনকি নতুন ভালো লেখক কিংবা বইয়ের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগও অনেক কমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা গণমাধ্যমে বইমেলা ঘিরে এসব অদ্ভুত ক্যারেক্টারের উপস্থিতির বাইরে আর কিচ্ছু নেই।

ফলে কী হলো, যে লেখক দীর্ঘদিন সময় দিয়ে কোনো বই লিখলেন সে আজ এসব অদ্ভুত ক্যারেক্টারের আড়ালে চাপা পড়লেন। ফলে সামনে তার সাহিত্যচর্চার ধৈর্য থাকবে কীনা সে প্রশ্নকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই! আর প্রকৃত অর্থেই যারা সাহিত্যচর্চা করছেন তাদের প্রণোদনা না দিয়ে, সাহিত্য সমৃদ্ধি প্রত্যাশা করা অযৌক্তিক ছাড়া আর কিছুই নয়।

অন্যদিকে, যারা বয়সে তরুণ, নতুন পাঠক কিংবা আমার মতো কম বই পড়া অংশ তারা কিন্তু এসব হইচইয়ের মধ্যে খুব সহজে ভালো বইয়ের সন্ধান পাচ্ছে না। আবার তারা এসব অব্যবস্থাপনা বা বিরক্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখিও হতে চায় না। তাহলে তারা কী করবে, হয় তারা অন্য কোনো উপায়ে পছন্দের বই সংগ্রহ করবে অথবা যে বিষয়গুলোতে ঝামেলা কম সেদিকে ঝুকবে। ফলে একটা সময় যেয়ে টিকটক আর ফেসবুক লাইভ করার জন্য কিছু হ্যালো গাইস মেলায় গেলেও পাঠক কমে আসবে।

এর দরুণ কী ফলাফল আসতে পারে? তা দেখতে চাইলে, যেভাবে সব চলছে সেভাবেই চলতে থাকুক। ফল পাইলে হাততালি দিয়ে মুড়ি খাওয়া যাবে!

লেখক: সংবাদকর্মী