নাঈমুল হাসান হিমেলের কবিতা ‘শাপ’
প্রকাশিত : নভেম্বর ২২, ২০১৮
গত পরশুর কথা মনে আছে তোমার?
দুপুর গড়িয়ে বিকেল, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা
তারপর? তারপর অন্ধকার ,
মিষ্টি জোনাকি নয়
নয় জোৎস্নার মৃদু স্পর্শ
আমার হাতে জুটেছিল একরাশ ভেজা ঘাস
মনে আছে তোমার?
ঘাস গুলোতে শিশিরে কোমল স্পর্শ ছিল না
ছিল কিছু উষ্ণ রক্ত,
সেই রক্তে আমার কেঁপে উঠে ছিল প্রাণ
মনে আছে তোমার?
আমি আতকে উঠেছিলাম।
প্রিয়তমা, লাল টিপ পরে ছিল হয়ত,
হয়ত খোপার ফুল গুলোর স্নিগ্ধতা
রাঙিয়ে ছিল তার সমস্ত মুখাবয়ব
হয়ত কম্পমান ঠোঁটগুলো
লজ্জায় আরও লাল হয়েছিল।
হয়ত ওড়নাটা মৃদু বাতাসে উড়ছিল
সামলাতে হিমশিম প্রিয়তমা।
নিজেকে সামলাতে ব্যর্থ প্রিয়তমা।
যৌবন যার প্রখর যথার্থই ধৈর্য তার কম।
তুমি কল্পনা করেছ?
গভীরে গিয়েছিলে তুমি?
আমি চোখ বুলিয়ে ছিলাম সে ঘরে
ঘরের ভেতন যে প্রাণ ছিল
প্রাণের ভেতর কি আশাই না ছিল!
কি স্বপ্নই না ছিল!
কি ঘোরেই না মিলে ছিল তারা!
ভালবাসা ভালবাসা আর ভালবাসা!
পবিত্র বহিঃপ্রকাশ
কি লোভই না ছিল চার চোখে!
শুধু উপেক্ষিত ছিল বাস্তবতা।
মৃদু হাসিতে, লাজুক চোখে
প্রস্থান হয়ত প্রিয়ার,
কে জানে হয়ত অজানা গৌরব
মাখা হাসি ছিল প্রিয়র ঠোঁটে
হয়ত যৌবনের সুখ
গৌরব করে বলেছিল বন্ধুদের
যৌবন সুখের গল্পের ভাবনার
উল্লাস করেছিল সদ্য
যৌবন বিজয় করা ছেলেটা
আমি তাকে দেখতে চাই।
হ্যাঁ, আমি তোমাকে বলছি
আমি তাকে দেখতে চাই।
তুমি ভেবেছ কখনও
এই গৌরব এই আনন্দ এই লোভ
এই ভালবাসা
কত দিন স্থায়ী হয়েছিল?
কি নির্মম বাস্তবতা ফূড়ে বেরিয়ে এসেছিল?
হয়ত কয়েক মুহূর্ত
প্রিয়ার লাজুক চোখে ভয় জেগেছিল
অনূভব করে ছিল বাস্তবতার অস্তিত্ব।
নিজের ভেতরে এক অচেনা সত্ত্বা।
হয়ত ভয়ে ভয়ে হয়ত
সুখের ছটায় বলে ছিল প্রিয়কে
সে অস্তিত্বের কথা
প্রিয় কি গ্রহণ করেছিল?
ভেবে দেখেছ তুমি?
আমি বলছি এক বার ভাবো
আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না
আমার চোখ অন্ধকার হয়ে আসছে
কি পাপ ছিল সে বাস্তবতার?
পলিথিনে মুড়ে পরে রয়েছে এই মাঠে
এই ঘাসে,
বাস্তবতা মুখ থুবড়ে পরে রয়েছে।
একটা ফুলের কলি
ফোটার আগেই বোঁটা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।
যার রক্ত আমার হাতে
ঘাসে, পথে
আমি ভাবতে পারছিনা
একটা জীবন মুখ থুবড়ে পরে আছে
হত্যা করা হয়েছে তাকে
কোন থানায় মামলা হয় নি
কোন আদালতের নথিতে লিপিবদ্ধ হয়নি
এই হত্যার কথা
কেউ শাস্তি পায় নি।
তুমি ভেবে দেখেছ?
যে গর্ভে আমি তুমি
নিরাপদ ছিলাম
সেই গর্ভেই তাকে হত্যা করা হয়।
পাপ মুক্ত হতে
কি পাপই না করি আমরা!