মাননীয়, আপনাকে বলছি

রাজীব জবরজং

প্রকাশিত : আগস্ট ০৭, ২০১৮

মাননীয়, আপনাকে বলছি, আপনার কাছে জনগণ দাবি তুলেছিল যুদ্ধাপরাধের বিচার করেন। আপনি বা আপনার সরকার তা করতে উদ্যোগী হলেন। আপনার সরকারই যুদ্ধাপরাধের বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করায় জনতা প্রতিবাদ করেছিল। একইসাথে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিল। আপনি বা আপনার সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেননি। কেন করেননি, সে প্রশ্নের উত্তর মানুষ খুঁজতে গিয়ে যা পেয়েছিল, তাও তো খুব স্পষ্ট মাননীয়।

আপনাদের প্রয়োজনে আপনারা কখনো এরশাদের মতো স্বৈরতান্ত্রিক বদমাশকে ব্যবহার করবেন, আবার কখনো জামায়াতের মতো একটি সন্ত্রাসী মৌলবাদী সংগঠনকে ব্যবহার করবেন। জামায়াত নিষিদ্ধ করলে তো আপনারা আজকে নিজেরা সহিংসতা ছড়িয়ে নিজেদেরকে তুলশি তলার শুয়োর দাবি করতে পারতেন না। তাই না?

ছিঃ মাননীয়, জনগণ হিপোক্রিট বলছে আপনাকে, আর লজ্জা লাগছে আমার। গণমাধ্যমে আপনাদের নোংরামি ও সহিংসতার খবর দেখা যাচ্ছে না। ব্যক্তিপর্যায়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে মানুষজন জানছে কোথায় কী হচ্ছে। আপনার ক্যাবিনেট থেকে গণমাধ্যমকে আপনার তথ্যমন্ত্রী আপনাদের মনমতো নিয়ন্ত্রণ করছেন। এই তথ্য জনগণকে বাড়ি গিয়ে বলা লাগে না এখন। জনগণ বোঝে, কীভাবে কি হয়!

মাস মিডিয়া এই টার্মটির ধারণা পনেরো বছর আগের মতো নেই মাননীয়। এই সময়ে মাস মিডিয়া মাস পিপলের হাতেই। অর্থাৎ জনগণই তথ্য, এবং জনগণই তার তথ্যের অধিকার নিশ্চিত করবে তার ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে। তারমানে মাননীয়, দুনিয়ার মানুষ কিন্ত আপনার নোংরামি জেনে যাচ্ছে । এই জেনে যাওয়া ঠেকানোর মতো আধুনিক আপনি নন।

মাননীয়, যে রাষ্ট্র তার জনগণকে কোনোরকমের নিরাপত্তাই দিতে পারে না, সেই রাষ্ট্রযন্ত্রের ড্রাইভিং সিটে বসে বসে দোল খেতে আপনার লজ্জা লাগে না? আমার খুব লজ্জা লাগছে মাননীয়, যখন দেখি, আপনি সত্যের মুখোমুখি না হয়ে বারবার এড়িয়ে যাচ্ছেন। বলপ্রয়োগ করছেন এই দোল খাওয়াটাও আরো লম্বা সময় ধরে উপভোগ করতে।

আজকে রাস্তায় বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলোর উপর হামলা হচ্ছে জানলাম। আপনারা বলছেন তাদের দাবি মেনে নেয়ার পরও কেন তারা রাস্তায়? একবার ভেবে দেখুন মাননীয়, এই বাচ্চা শিশুগুলোও আপনাকে আর বিশ্বাস করতে পারছে না। আপনার লজ্জা হচ্ছে না মাননীয়? আমার কিন্তু লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে। আপনার প্রতি করুণা মাননীয়।

লেখক: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী কবি

 

মনের জানালা বিভাগে পাঠকের মনের কথাই প্রকাশিত হয়। এজন্য ছাড়পত্র পরিবার দায়ী নয়।