কবি বিনয় মজুমদারের আজ জন্মদিন

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯

কবি বিনয় মজুমদারের আজ জন্মদিন। মায়ানমারের মিকটিলা জেলার টোডো শহরে  ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম বিপিনবিহারী মজুমদার, মায়ের নাম বিনোদিনী।

বিনয়রা ছিলেন ছয় ভাইবোন, তিনি ছিলেন সবার ছোট। তার ডাকনাম মংটু। ১৯৪২ সালে বিনয়কে বাংলাদেশের একটি স্কুলে ভর্তি করা হয়। ১৯৪৪ সালে তিনি প্রথম বিভাগে ছাত্রবৃত্তি পরীক্ষায় পাশ করেন।

১৯৪৬ সালে তাকে বৌলতলী উচ্চবিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৪৮ সালে দেশভাগের সময় তারা সপরিবারে ভারতের কলকাতায় চলে যান। সেখানে ১৯৪৯ সালের জানুয়ারি মাসে তাকে কক্রিক রো-রতে অবস্থিত মেট্রপলিটন ইনস্টিটিউটে (বউবাজার ব্রাঞ্চ) নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়।

প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হবার পরে, ১৯৫১ সালে আইএসসি (গণিত) পড়ার জন্য প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৭ সালে তিনি ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে পাশ করেন। শোনা যায়, তার পাওয়া নম্বর আজও কেউ নাকি ভাঙতে পারেনি।

১৯৫৮ সালের জানুয়ারি মাসে, অর্থাৎ ছাত্রজীবন সমাপ্ত হবার কয়েকমাস পরেই এনবিএ থেকে প্রকাশিত হয় ‘অতীতের পৃথিবী’ নামক একটি অনুবাদ গ্রন্থ। এই বছরেই গ্রন্থজগৎ থেকে বের হয় তার প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘নক্ষত্রের আলোয়’।

বৌলতলি হাই-ইংলিশ স্কুলের ম্যাগাজিনে প্রথম তার কবিতা প্রকাশিত হয়। ত্রিপুরা গভর্নমেন্ট কলেজে অল্প কিছুদিন শিক্ষকতা করার পর স্থির করেন, শুধুই কবিতা লিখবেন। লেখা শুরু করেন ‘ফিরে এসো চাকা’। এই সময় তিনি দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টেও কিছুদিন কাজ করেন। তখন থেকেই মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ দেখা যায়।

১৯৬৬ সালে লিখতে শুরু করেন ‘অঘ্রানের অনুভূতিমালা’ ও ‘ঈশ্বরীর স্বরচিত নিবন্ধ’। বিশটি কাছাকাছি কাব্যগ্রন্থ লিখেছিলেন। যার মধ্যে ‘ফিরে এসো চাকা’ তাকে সবচেয়ে বেশি খ্যাতি দিয়েছে। এছাড়া ‘নক্ষত্রের আলোয়, গায়ত্রীকে’, ‘অধিকন্তু’, ‘ঈশ্বরীর’, ‘বাল্মীকির কবিতা’, ‘আমাদের বাগানে’, ‘আমি এই সভায়’, ‘এক পঙক্তির কবিতা’, ‘আমাকেও মনে রেখো’ ইত্যাদি রচনা করেছিলেন।

১৯৬২-৬৩ সালে বিনয় মজুমদার হাংরি আন্দোলনে যোগ দেন এবং তার কয়েকটি কবিতা হাংরি বুলেটিনে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীকালে ১৯৬৩ সালের শেষদিকে তিনি শক্তি চট্টোপাধ্যায় এবং সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের কার্যকলাপে বিরক্ত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি হাংরি বুলেটিন প্রকাশ করে কলকাতা কফিহাইসে বিলি করার পর হাংরি আন্দোলন ত্যাগ করেন।

দীর্ঘ রোগভোগের পর বিনয় মজুমদার ২০০৬ সালের ১১ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর কয়েক বছর আগে তাকে রবীন্দ্র পুরস্কার এবং একাডেমি পুরস্কার দেয়া হয়।