ইসলামোফোবিয়া নিয়ে মুখ খুললেন পোপ

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ০৩, ২০২৫

ইউরোপে ইসলামোফোবিয়া হলো বিভিন্ন ধর্মের লোকদের বাদ দেওয়ার প্রচেষ্টা বলে মন্তব্য করেছেন পোপ লিও চতুর্দশ। তুরস্ক ও লেবানন সফর শেষ করে মঙ্গলবার বিশেষ বিমানে রোমে ফেরার সময় বিমানে থাকা সাংবাদিকদের তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

পোপ লিও বলেন, “ইউরোপে ইসলামোফোবিয়া হলো বিভিন্ন ধর্ম বা জাতিগত পটভূমির লোকদের বাদ দেওয়ার প্রচেষ্টার অংশ। লেবাননে খ্রিস্টান ও মুসলমানদের সহাবস্থান ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার জন্য শিক্ষা। প্রকৃত সংলাপ ও শ্রদ্ধার পথ অনুসরণ করতে হবে।”

 

তিনি আরও বলেন, “`আমি জানি, মাঝে মাঝে ইউরোপে ভয় থাকে। কিন্তু প্রায়ই তারাই এই ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় যারা অভিবাসনের বিরোধিতা করে এবং যারা অন্য দেশ, অন্য ধর্ম বা অন্য জাতিগত পটভূমি থেকে আসা লোকদের বাদ দেওয়ার চেষ্টা করে।”

 

পোপ বলেন, “মুসলিম ও খ্রিস্টানদের মধ্যে সংলাপ ও বন্ধুত্ব সত্যিই সম্ভব। আমি মনে করি, লেবানন বিশ্বকে যে মহান শিক্ষা দিতে পারে তা হলো, এটি এমন একটি দেশ যেখানে ইসলাম ও খ্রিস্টধর্ম উভয়ই বিদ্যমান ও সম্মানিত, যেখানে সহাবস্থান ও বন্ধুত্ব সম্ভব।”

 

তিনি আরও বলেন, “দুই দিনে আমরা যে গল্পগুলো শুনেছি, মুসলিম ও খ্রিস্টানদের একে অপরকে সাহায্য করার সাক্ষ্য, এমনকি ধ্বংসপ্রাপ্ত গ্রামগুলোতেও। সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা, যা ইউরোপ বা উত্তর আমেরিকাতেও শোনা উচিত। সম্ভবত আমাদের একটু কম ভীত হওয়া উচিত এবং প্রকৃত সংলাপ ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা বৃদ্ধির উপায়গুলো সন্ধান করা উচিত।”

 

লেবাননে ইজরায়েলের আক্রমণ বন্ধে এবং এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি সম্ভব কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে পোপ বলেন, “হ্যাঁ, আমি বিশ্বাস করি যে, টেকসই শান্তি সম্ভব।”

 

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার সম্পর্ক ব্যবহার করে লেবাননে আক্রমণ বন্ধ করতে সাহায্য করতে চান কিনা, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি আপনার উল্লেখ করা কিছু নেতার সঙ্গে কথা বলা শুরু করেছি, এমনকি খুব সীমিত উপায়েও। আমি ব্যক্তিগতভাবে বা ভ্যাটিকানের মাধ্যমে তা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করি।”

 

তিনি লেবাননের হিজবুল্লাহ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন বলে জানান।

 

পোপ বলেন, “আমাদের কাজ মূলত এমন কিছু নয়, যা আমরা প্রকাশ্যে ঘোষণা করি। এটি বরং পর্দার আড়ালে পরিচালিত একটি কার্যকলাপ। প্রকৃতপক্ষে, আমরা এরই মধ্যে এটি করে আসছি এবং আমরা পক্ষগুলোকে অস্ত্র ও সহিংসতা ত্যাগ করতে, সংলাপের টেবিলে বসতে এবং এমন সমাধান খুঁজে বের করতে রাজি করার চেষ্টা চালিয়ে যাব, যা সহিংসতা জড়িত নয় এবং জনগণের জন্য আরও কার্যকর এবং উন্নত হতে পারে।”

 

ন্যাটো ও রাশিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও ইউক্রেনের জন্য ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাব সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে পোপ বলেন, “এই বিষয়টি অবশ্যই বিশ্ব শান্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে ভ্যাটিকানের সরাসরি সম্পৃক্ততা নেই, কারণ আমরা ন্যাটোর সদস্য নই এবং এখন পর্যন্ত পরিচালিত সংলাপে আমরা সরাসরি ভূমিকা পালন করিনি। তবুও আমরা বারবার যুদ্ধবিরতি, সংলাপ এবং যুদ্ধের অবসানের আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু আজ, আমরা বহুমাত্রিক সংঘাতের মুখোমুখি।”