আবু তাহের সরফরাজের ৮ কবিতা

প্রকাশিত : জুলাই ২৬, ২০২৫

জ্ঞানী আর গুণী

জ্ঞানী ছিল ছটফটে
গুণী ছিল চুপচাপ
দুই ভাই ইশকুলে পড়ালেখা করে।

জ্ঞানী পড়ে,
‘আমাদের যুগে আমরা যখন খেলেছি পুতুলখেলা
তোমাদের যুগে তোমরা তখন লেখাপড়া করো মেলা।’

গুণী পড়ে,
‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র
এই পৃথিবীর সবার কাছেই শিখছি দিবারাত্র।’

ছায়াসঙ্গী

যেভাবে হাঁটছ সেভাবেই হাঁটতে থাকো
ছায়ার দিকে তাকিও না
তুমি না তাকালেও তোমার দেহের সাথে
সেও চলেছে পথ থেকে পথে, বেপথে

একথা তোমাকে মাথায় রাখতেই হয়
আর তাই, তুমি হাঁটতে থাকো ছায়াসঙ্গী হয়ে।

চাঁদ

সূর্যের আলোয় চাঁদ দ্যাখা যায় না
যদিও সে আছে, তবু অনুজ্জ্বল

সূর্য ডুবে গেলে প্রকাশ পায় তার ঔজ্জ্বল্য
রাত্রির স্তব্ধতায়, মহাবিশ্বের নিঃসীম নির্জনে

এসময় চাঁদ নিজেই অনন্য!

সঞ্চয়

যা পেলাম আর যা পেলাম না
তা সকলই আমার সঞ্চয়

আলোর আড়ালে আঁধার
আঁধারের আড়ালে আলো
         এই সেতু
পেরিয়ে যেতে যেতে আমি
গোধূলির সূর্যাস্ত দেখেছি।

মহাপ্রাণের কেন্দ্রে

মানুষের পুর্নজন্ম হলে মানুষের আয়ু বাড়ে
এই যাত্রায় স্মৃতি-বিস্মৃতি কেটে যায়
                     কোনও কোনও প্রাণের
এই প্রাণই পৌঁছতে পারে মহাপ্রাণের কেন্দ্রে।

কামভাব

হাতের স্পর্শ পেলে অতলান্ত জল
বালিকা প্রণয়ী হয় জ্বালিয়ে অনল।
শীৎকারে ফুল ফোটে শীতের বাগানে
শীত জানে কার মন শরীরের গানে
মুখরিত, প্রাণ পায় চাঁদের শিথানে
কামভাব চুরি করে কোন ভাব আনে?

তোমার চোখে

তোমার চোখে বৃষ্টিজল
তোমার চোখে ছলাৎছল

চোখে কীসব মায়া!

আমার চোখে সূর্য ডোবে
কে এসে এই দৃশ্য ছোঁবে?

পাতার ওপর গড়িয়ে পড়ে
এক চিলতে ছায়া।

বিষণ্ণ বেড়াল

মুখুজ্যে বাড়ি থেকে যে বেড়াল এসেছিল
তা এখন তোমার বেড়াল।
তুমি তাকে খাওয়াচ্ছ
তুমি তার সঙ্গে খেলা করছ।

তুমিও যে একটা বিষণ্ণ বেড়াল।