
গাজাবাসীকে অনাহারে রাখার প্রস্তাব ইসরায়েলি মন্ত্রীর
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : আগস্ট ২৫, ২০২৫
ইজরায়েলের কট্টর ডানপন্থী মন্ত্রীরা গাজায় চলমান যুদ্ধ কৌশল নিয়ে সেনাপ্রধান ইয়াল জামিরের সঙ্গে মন্ত্রিসভার বৈঠকে তীব্র বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় তারা প্রকাশ্যে গাজার জনগণকে অনাহারে রাখার প্রস্তাব দেন।
চ্যানেল–১২ এর খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় শনিবার রাতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ ঘটনা ঘটে। বৈঠকের আলোচ্য সূচিতে ছিল ‘অপারেশন গিদিওন’স চ্যারিয়টস–২’, যেখানে গাজায় ব্যাপক হামলার পাশাপাশি গণ উচ্ছেদের পরিকল্পনা করা হয়।
অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানান। তিনি সেনাপ্রধানকে উদ্দেশ করে বলেন, “আমরা আপনাদের দ্রুত অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছি। আমার মতে, তাদের অবরুদ্ধ করুন। যারা সরে যাবে না, তাদের যেতে দেবেন না। পানি নয়, বিদ্যুৎ নয়—তাদের অনাহারে মরতে দিন কিংবা আত্মসমর্পণ করতে দিন। আমরা এটাই চাই। আর আপনারা সেটা করতে পারবেন।”
কিন্তু সেনাপ্রধান জামির এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, “নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া সামরিকভাবে অবাস্তব। যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতির ওপরই অভিযান নির্ভর করছে। আমরা খান ইউনিস ও রাফাহসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছি। তাই সুপরিকল্পনা ও সময় অত্যন্ত জরুরি।”
এ সময় জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির আলোচনায় হস্তক্ষেপ করে সেনাপ্রধানকে উদ্দেশ করে প্রশ্ন তোলেন, “আপনি কি সামরিক অ্যাডভোকেট জেনারেলের ভয়ে আছেন?”
পরে স্মতরিচ অভিযোগ করেন, “জামির রাজনৈতিক সরকারের নির্দেশ অমান্য করছেন।” তনি সেনাপ্রধানকে উদ্দেশ করে বলেন, “এটা কি রাজনৈতিক নেতৃত্বের নির্দেশনা নয়? আপনি হামাসকে পরাজিত করতে চান না?”
জবাবে জামির ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “আপনি কিছুই বোঝেন না। ব্রিগেড বা ব্যাটালিয়ন কী, তা জানেন না। এতে সময় লাগে।”
চ্যানেল–১২ জানায়, এ সময় প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও বৈঠকে উপস্থিত জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীরা—ইসরায়েল কাতজ ও রন ডারমার—নীরব থাকেন। তারা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান চাপের কথা উল্লেখ করেন এবং দ্রুত সমাধান চাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন।
টাইমস অব ইজরায়েলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মন্ত্রিসভা মঙ্গলবার ফের বৈঠকে বসবে। সেখানে গাজায় নতুন সামরিক অভিযান ও সম্ভাব্য বন্দি বিনিময় চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবর থেকে গাজায় ইজরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬২ হাজার সাতশোর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ভয়াবহ অভিযানে গোটা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখানে চলছে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি