পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতির নির্দেশ পুতিনের

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : নভেম্বর ০৬, ২০২৫

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সম্ভাব্য পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার বিষয়ে প্রস্তাব তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়া আর কোনও পারমাণবিক বিস্ফোরণ পরীক্ষা চালায়নি।

 

বুধবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোউসোভ পুতিনকে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক মন্তব্য ও পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক পরীক্ষার জন্য অবিলম্বে প্রস্তুতি নেওয়া উপযুক্ত হবে। আর্কটিক অঞ্চলের নোভায়া জেমলিয়া ঘাঁটিতে অল্প সময়ের নোটিশেই এমন পরীক্ষা চালানো সম্ভব।”

 

জবাবে পুতিন বলেন, “আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, গোয়েন্দা সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট বেসামরিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিচ্ছি, এই বিষয়ে অতিরিক্ত তথ্য সংগ্রহ এবং নিরাপত্তা পরিষদে তা বিশ্লেষণ করে যৌথভাবে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি সংক্রান্ত প্রস্তাব তৈরি করতে।”

 

বিশ্বে উত্তর কোরিয়াই একমাত্র দেশ যারা ২১ শতকে পারমাণবিক বিস্ফোরণ পরীক্ষা চালিয়েছে। পিয়ংইয়ং পরীক্ষা চালায় ২০১৭ সালে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা সতর্ক করে বলছে, নতুন করে এ পরীক্ষা শুরু হলে তা বিশ্ব রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা বাড়াবে।

 

জাতিসংঘের নিরস্ত্রীকরণ গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক আন্দ্রে বাকলিৎসকি এক্সে লিখেছেন, “এটি হবে প্রতিক্রিয়া-চক্রের সেরা উদাহরণ। কেউই এটা চায় না, কিন্তু তবুও আমরা সেই পথে যেতে পারি।”

 

যুক্তরাষ্ট্র শেষ ১৯৯২ সালে, চীন ও ফ্রান্স ১৯৯৬ সালে, আর সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৯০ সালে পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর রাশিয়া কোনও বিস্ফোরণ পরীক্ষা করেনি।

 

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, “অন্য দেশগুলোর পরীক্ষার ঘটনায় আমি আমাদের যুদ্ধ বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি সমানভাবে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করতে। প্রক্রিয়াটি অবিলম্বে শুরু হবে।”

 

তবে ট্রাম্প স্পষ্ট করেননি তিনি পারমাণবিক বিস্ফোরণ পরীক্ষার কথা বলেছেন কিনা, নাকি পারমাণবিক সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের উড্ডয়ন পরীক্ষা বোঝাতে চেয়েছেন।

 

সম্প্রতি রাশিয়া তার নতুন বুরেভেসনিক পারমাণবিক চালিত ক্রুজ মিসাইল পরীক্ষা করেছে, যা পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। দেশটি আরও পারমাণবিক হামলা অনুশীলন ও পারমাণবিক চালিত পোসেইডন সুপার-টর্পেডো পরীক্ষা চালিয়েছে।

 

যেসব পরীক্ষায় অস্ত্রের ডেলিভারি সিস্টেম যাচাই করা হয়, সেগুলোর সঙ্গে পারমাণবিক বিস্ফোরণ জড়িত থাকে না। কিন্তু স্নায়ুযুদ্ধের সময় যে ধরনের বিস্ফোরণ পরীক্ষা চালানো হয়েছিল, তাতে ভয়াবহ পরিবেশগত ক্ষতি হয়েছিল। আন্তর্জাতিক মহল আশঙ্কা করছে, নতুন করে এমন পরীক্ষা শুরু হলে আবারও সেই বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। সূত্র: রয়টার্স