ফারুক সুমন

ফারুক সুমন

ফারুক সুমনের ৫ কবিতা

প্রকাশিত : আগস্ট ০৮, ২০২০

মৃৎভাণ্ডে রেখে যাই হৃৎচিহ্ন  

অস্বীকার করতে করতে
এক আগরবাতি জ্বলা সন্ধ্যায়
আচমকা আমায় তুমি দিয়েছ স্বীকৃতি
তারপর এও বলেছ
`তোমার কবিতা আমার ভালো লাগে।`

এভাবেই ভীষণ শম্বুক গতিতে
ঈর্ষামুখগুলো কবিতামিত্র হয়
রোদ ওঠে, ফুল ফোটে
কবিতাশ্রমে বুঁদ হয়ে বসে
মৃৎভাণ্ডে রেখে যাই হৃৎচিহ্ন।

মেঘের ভাষ্য

এই বর্ষায় মেঘের ভেলায়
বাহিত হয়েছে কিছু মেঘময় দিন
প্রতি অঙ্গে ভেজা অনুভব
মেঘসংঙ্গের গোপন সংকেত
মেঘের সহাস্য ভাষ্যে জেনেছি
মেঘমানচিত্র মানে কামের কুহক।

মেঘও জানে
ভালোবাসা ব্যতীত বর্ষণ যে ধর্ষণের মতো!
বর্ষণ বঞ্চিত সময় ভীষণ যন্ত্রণার
মেঘের তাই মেঘের মতোই
থমথমে কালো কষ্ট
নিঃসীম আকাশে এত ওড়াউড়ি
মেঘ সেখানেই বৃষ্টি হয়ে ঝরে
যেখানে শুধুই ভালোবাসার সংশ্রব।

সম্পর্ক

রাতদিন টাকার ঘ্রাণে যা হয়
ক্রমশ ভাঙে তীর
নদীও শুকিয়ে যায়
শান কমে মরিচা জমে
শানিত ছোরায়।

তরতাজা লতাও অমনোযোগিতায়
একদিন ঢলে পড়ে
মাথা রাখে শূন্যতায়।

এভাবে অলক্ষ্যে, হাওয়ায়
মুছে যায় সম্পর্কের দাগ
আমাদের সম্পর্কগুলো পরিচর্যায় থাক।

কী কাণ্ড দেখ ব্রহ্মাণ্ডে

ওই তো বিবেকের ডালে
হাওয়ায় নড়ে হারিকেন
ভেতরে কম্পমান আলো।

অজপাড়া গাঁয়ে বসে
দেখি এই বঙ্গদেশে
কথার উত্তাপে ফোটে খৈ।

হাসিতে হারিয়ে যায় হাওয়া
ঠিকানাবিহীন পরোয়ানা নিয়ে
নেমে আসে নৈঃশব্দ্য ঘুম।

উনুনের বদলে উঠানে উঠানে
রান্না হয় তোষামোদ, অলীকলতা
কথার উত্তাপে ফোটে খৈ।

মদিরাক্ষী

ঘুমহীন এক রূপসী নদী
তার বক্ষে বসে কামার্ত মাছি
দেখছে মথিত ঢেউ, ঢেউসঙ্গম
বিভ্রান্ত কচুরিপানা ক্রমশ ভেসে
ভাঙাকূলে আছড়ে পড়ে।

লালচোখে তার মদিরার ঘোর
নদীবক্ষে মদিরাক্ষী
বারবার ঝুঁকে পড়ে জলের ওপর।