মাৎসু বাশো

মাৎসু বাশো

মাৎসু বাশোর একতোড়া হাইকু

প্রকাশিত : মে ২৭, ২০২৪

বাতাসের প্রতিটি ঝাপটায়
প্রজাপতিটা জায়গা
পাল্টায় উইলো গাছে।

ঝেকে বসছে হেমন্ত
পাশের বাড়ির মানুষটা
কেমন আছে সে?

তুষার ছাওয়া মধ্যরাতে
চোখ বুজতে কাকতাড়ুয়ার
জীর্ণ জামা জড়াই গায়ে।

এ পথে এসো!
একা লাগে— শরৎ
শেষের দিকে।

হলুদ পাহাড়ের গোলাপ
পাপড়ি ঝরে পড়ে
জলপ্রপাতের গর্জনে।

হাঁটতে হাঁটতে
উঁচু গিরিপথে হৃদয়হরণ—
বুনো বেগুনি ফুল।

দিনভর ধূসর বৃষ্টিতে
হলিহক খুঁজে চলে
সূর্যের অদৃশ্য পথ।

প্রজাপতির ওড়াউড়ি
রোদভরা এক মাঠে
আর কী চাই।

পপির সাদা ফুল
ডানাভাঙা প্রজাপতির
স্মরণচিহ্ন যেন।

হেমন্ত এলো কতদিন
হলো শুয়োপোকাটি তবু
হলো না প্রজাপতি।

পতঙ্গটিকে প্রজাপতি
না বানিয়েই
গভীর হচ্ছে হেমন্ত।

শস্য মৌসুমে সূর্যের নিচে
পুষ্প— কত না অচেনা
পাখি ও প্রজাপতির কাছে।

কাহিল হয়ে গ্রামের পথে
সরাইখানা খুঁজি, পেলাম শুধু
ওস্টেরিয়া ফুল।

সরু, কী চিকন
তার ডাল শিশির ভারে নত—
ক্ষুদে হলুদ ফুল।

এমনকি পাতারাও স্থির
কী অপূর্ব গ্রীষ্মের
এ কুঞ্জবন।

নড়েচড়ে ওঠো, হে সমাধি
হেমন্ত বাতাস
আমারই বিলাপ ধ্বনি।

না পুষ্প না চাঁদ
সে শুধু পান করে
একা একাকী।

চেরি ফোটার দিনেও
উদাস ওক গাছ
যেন মহৎ আরও।

বসন্তের পুষ্পরা
বুদ্ধমূর্তির তলে
ক্লান্ত যেন কিছুটা।

সবদিক থেকে বাতাসে
আসছে উড়ে চেরির পাপড়ি
ডাহুক হৃদে।

বসন্ত, বড় তাড়াতাড়ি!
তার জন্য দৃশ্য বুনছে
বড়ই গাছ আর চাঁদ।

বসন্ত সকাল!
কুয়াশা জালে
নামহীন পর্বত!

তাজা বসন্ত!
জগত মাত্র ন`দিন বয়সী—
এই মাঠঘাট আর গিরিমালা!

ভাঁটা-লাগা ভোর
কাদার গভীরে নেমেছে
উইলো শেকড়।

কবি পরিচিতি: জাপানের এদো সময়কালের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবি মাৎসু বাশো ১৬৪৪ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। মারা যান ১৬৯৪ খ্রিস্টাব্দের ২৮ নভেম্বর। শত বছরের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের পর তাকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ হাইকু কবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার কবিতা বিশ্বজুড়ে খ্যাত। জাপানের স্মৃতিস্তম্ভ ও ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে তার অনেক কবিতা উৎকীর্ণ রয়েছে।