যৌন নিপীড়নের বিচার না পেয়ে আত্মহত্যা ঢাকা স্ট্রিমের ডিজাইনারের

ঢাকার ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা স্ট্রিমের গ্রাফিক্স ডিজাইনার স্বর্ণময়ী বিশ্বাসের (২৬) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বর্ণময়ীর এক সহকর্মী জানান, শনিবার সন্ধ্যার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন স্বর্ণময়ী। এর আগে শুক্রবারও ঘুমের ওষুধ খেয়ে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

সহকর্মীদের কাছ থেকে জানা গেছে, সম্প্রতি কর্মক্ষেত্রে ঢাকা স্ট্রিমের বাংলা বিভাগের প্রধান দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হন মর্মে প্রধান সম্পাদক ইফতেখার মাহমুদ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছিলেন স্বর্ণময়ী।

সহকর্মীরা আরও জানায়, অভিযুক্তকে শাস্তি না দিয়ে কর্মক্ষেত্রে পুনর্বহাল করেন প্রধান সম্পাদক। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি স্বর্ণময়ী। পরে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। স্বর্ণময়ী বিশ্বাসের মরদেহ উদ্ধার করে ধানমন্ডির পপুলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্বর্ণময়ীর আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে ঢাকা স্ট্রিমের বাংলা বিভাগের প্রধানকে বিচারের আওতায় আনার দাবি উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে বিষয়টি ঘিরে।

স্বর্ণময়ী বিশ্বাসের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ। তিনি ঢাকার গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।

স্বর্ণময়ী বিশ্বাসের বড় ভাই সৌরভ বিশ্বাস বলেন, “আমার বোন ঘরের ভেতর থেকে লক করে অবস্থান করছিল। দীর্ঘ সময় দরজা বন্ধ থাকায় তাকে খুলতে বললেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বাসায় থাকা চাবি দিয়ে দরজা খুলে দেখা যায়, সে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে রয়েছে। পরে আমরা তাকে পপুলার হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”

ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম বলেন, “পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও মামলা হয়নি। মরদেহের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মামলা করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “মৃতের দুই হাতে ছুরি বা ব্লেড দিয়ে কাটা একাধিক দাগ রয়েছে। তার গলায়ও কালো দাগ আছে।”