রুদ্র হক

রুদ্র হক

রুদ্র হকের পাঁচটি কবিতা

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ২৩, ২০২০

শরীর এক আশ্চর্য জাহাজ

শরীর এক আশ্চর্য জাহাজ
তোমার দ্বীপ সীমান্ত ছেড়ে
সে গিয়েছে উত্তাল ঝড়ে

ক্যাপ্টেন বলছে—
অন্তহীন এই ঘূর্ণির ভেতর
উত্তাল জলরাশির ভেতর
জাহাজের গলুই অবিরাম ফুঁসে উঠতে ভালোবাসে

এই কথা শুনে
হা হা হাসছে ডাইনির আকাশ
প্রিয়, শরীর এক আশ্চর্য জাহাজ...

মানুষ খুব নৃশংস

মানুষ খুব নৃশংস
আমি মানুষের দলে নাই
আমি ভাসমান মেঘের বিছানায় শুয়ে
স্বর্গে চলে যাব
স্বর্গে ভূস্বামীদের ভিড়
দিকে দিকে শত্রুহীন রাজ্যবিস্তার
আমি তাদের দলে নাই
আমি তৃণভোজী মুখের ক্লান্ত দুপুরে
প্রান্তরে বাঁশি বাজাবো...

নিরপরাধ ঘুম

আমি এক নিরপরাধ ঘুম
পৃথিবী আমাকে জাগিয়ে তোলে
হাতে অস্ত্র তুলে দেয়
দাঁতে শুয়োরের চর্বি কেটে কার্তুজ ভরা রাইফেল
কাঁধে তুলে দিয়ে বলে, মারো
আমি দিগন্তের দিকে হাজারো গুলি ছুঁড়ে দেখেছি
কোথাও কোনো শত্রুপক্ষ নেই
শত্রুহীন স্বপ্নহীন একটা দীর্ঘদিন
আমি বয়ে নিয়ে গেছি সমুদ্রের কাছে
উল্লাসে ফেটে পড়া দস্যুর দল
সর্বস্ব ছিনিয়ে নিতে গিয়ে দেখেছে
বুকে কোনো মানচিত্র নেই
চোখের খুব গভীরে
একটা পথ দূরে যেতে যেতে
দূরে যেতে যেতে
শূন্যে মিলে গেছে...

স্বপ্নের ভেতর

আজও স্বপ্নের ভেতর তোমাকে জড়িয়ে ধরেছি
সে এক আজব শহর
আজব গলির অন্ধকার; আমার
স্বপ্নের ভেতর রোজ দ্রুতগামি চাঁদ ডুবে যায়
মেঘের কালি ঝরে পড়ে গাছে গাছে
ছোরা হাতে আমাকে তাড়ায় অন্ধ বাদুর ঝাঁক

আজও স্বপ্নের ভেতর নিজেকে মরে যেতে দেখেছি
আমার হা থেকে উড়ে গেছে
রঙিন ডানার প্রজাপতি দল...

ঘুম ভাঙো সকাল

ঘুম ভাঙো সকাল
পৃথিবীর গায়ে হিমহিম জ্বর
হাওয়া কুয়াশায় খুব খুকখুক
যেন কোনো অশীতিপর
বয়েসী দুপুরের কাছে গিয়ে জেনেছি
কী করে পুরনো ব্যথার কাছে ফিরে যেতে হয়

আজ সন্ধ্যার কাছে যাব
সন্ধ্যা শেখাবে ব্যথার নির্যাস থেকে
কী করে হয় সুর ও সুরা
গরলে আগুন জ্বেলে কী করে হতে হয় নিরুদ্দেশ ফানুস...