আবু তাহের সরফরাজের মুখ ও মুখোশের কবিতা

প্রকাশিত : মে ০৫, ২০২০

মুখ ও মুখোশ

হয়তো আমি নিজের কাছে ভদ্রবেশি মুখোশ
হঠাৎ যদি জিগেশ করো, ‘মুখটা কোথায় লুকোস?’
বলব না তা, বলার মতো মুখটা যে আর নেই
মুখের গড়ন নানান বরণ— মোদ্দা কথা এই।

মানুষ আমি মানুষ তুমি এই যে মানব দেহ
মানুষ কীনা ভাবছে না কেউ, করছে না সন্দেহ।
মানুষ ছাড়া সকল প্রাণী ন্যাংটো খোলামেলা
এই পৃথিবীর নিয়ম মেনে করছে বাঁচার খেলা।

ভদ্রবেশি পোশাক পরে মানুষই একমাত্র
ন্যাংটো হয়ে ঘুরছে তবু দেখছে না কেউ গাত্র!

আমাদের বাড়ি

আমাদের বাড়ি ছেলেবেলা ছিল
আমাদের বাড়ি শৈশব
আমাদের বাড়ি বয়েসি এখন
আমাদের বাড়ি নেই সব।

রোদ আর ছায়া দুই সহোদরা
আমাদের বাড়ি এসে
লুটোপুটি খেতো মায়ের আঁচলে
আমাদের বুক ঘেঁষে।

পুরনো সে রোদ নতুন এখন
উত্তাপ খুবই তার
ছায়ার শরীরে নেই আর সেই
ছায়ার অলঙ্কার।

দুই মানুষ

দুই মানুষের হাঁটাচলা
আগুন এবং শিল্পকলা
দুই মানুষের ঘর
কাঁপতেছে থত্থর।

এক মানুষের ইচ্ছেগুলো
পথের বারুদ পথের ধুলো
আরেক কণ্ঠস্বর
তবু, মাথার ওপর ঝড়।

আরেক মানুষ শস্যমোদির
গেরস্ত সে, হয় না অধীর
তৈরি করে ঘর
তবু, ভাঙে তাহার পর।

দুই মানুষের পরম্পরা
শরীর ভেঙে শরীর গড়া
শিল্পিত সুন্দর
তবু, দ্বন্দ্ব পরস্পর।

রাই

কৃষ্ণ যদি চুড়োয় ওঠে
চিনবে তাকে রাই?
চিনতে যদি নাই সে পারে
কার কী এসে যায়।

মেঘের মতো সেও তো কালো
আর কালো সেই রাত
রাই জানে, আর কেউ জানে না
উঠবে কিনা চাঁদ।

কৃষ্ণ যদি কালো তবে
পল্লবিত চোখ
কার ইশারায় ডাক দিয়েছে
ভাবছে কিছু লোক।

ভাবুক ওরা, কার কী তাতে
বৃন্দাবনে একা
রাই পেয়েছে হঠাৎ করেই
কৃষ্ণবাবুর দেখা।

রাই বলে কেউ ডাক দিয়েছে
দূর অতীতের কালে
সেই ঘোরে আজ সম্মোহিত
কৃষ্ণ সুধা ঢালে।