ইজরায়েরি হামলায় গাজায় একদিনে নিহত ৮২

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : জুন ২১, ২০২৫

ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় নারী ও শিশুসহ ৮২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

নিহতদের ৩৪ জন সরাসরি ত্রাণ নেওয়ার সময় হামলার শিকার হয়। হামলার স্থানগুলো ছিল গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন পরিচালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের আশপাশে। এই ফাউন্ডেশনটি ইজরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিতর্কিত সংস্থা।

সবচেয়ে ভয়ারবহ প্রাণঘাতী ঘটেছে গাজার কেন্দ্রে। যেখানে খাবার সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করা সাধারণ মানুষের ওপর ইজরায়েলি বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে ২৩ জন নিহত হয়। এছাড়া দক্ষিণ গাজায় আরেকটি হামলায় ১১ জন নিহত হয়।

গাজার দেইর আল-বালাহ শহরের পশ্চিমে একটি আবাসিক ভবনে ইজরায়েলি বিমান হামলায় অনেকেই হতাহত হয়। একই দিনে গাজা শহরে ইজরায়েলি বোমা বর্ষণের তীব্রতা বাড়ায় ২৩ জনের প্রাণহানি হয়।

গাজা সরকারের গণমাধ্যম দপ্তর জানিয়েছে, ২৭ মে থেকে কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৪০৯ জন সহায়তা প্রত্যাশী ইজরায়েলি হামলায় নিহত ও ৩,২০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।

জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা বারবার খাবার ও পানি বিতরণের কেন্দ্রগুলোতে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এলডার বলেন, “গাজার পরিস্থিতি বিপর্যয়কর এবং পানির পরিকাঠামো ভেঙে পড়ায় মানবসৃষ্ট খরা তৈরি হয়েছে। গাজার মাত্র ৪০ শতাংশ খাবার পানির সরবরাহব্যবস্থা এখনও সচল আছে। শিশুদের পিপাসায় মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে।”

এলডার আরও বলেন, “গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে নির্দিষ্ট সময়সূচি না থাকায় এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে এবং অনেক সময় তারা গোলাগুলির মুখে পড়ে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে মানুষ ভুলভাবে ভেবে ত্রাণকেন্দ্র খোলা আছে মনে করে সেখানে ছুটে গেছে, আর তখনই তারা হামলার শিকার হয়েছে।”

যদিও গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন দাবি করেছে, তারা কোনো ঘটনা ছাড়াই তিনটি কেন্দ্রে ৩০ লাখ খাবার সরবরাহ করেছে। তবে জাতিসংঘ বলেছে এই সংস্থার উপস্থিতিই ‘বিপর্যস্ত পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলছে’—বিশেষ করে মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত চলা ইজরায়েলি অবরোধে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়েব এরদোগান ইজরায়েলের সামরিক অভিযানকে উন্মত্ততা আখ্যা দিয়ে বলেন, “এই উন্মাদনা দ্রুতই এমন এক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে যেখান থেকে আর ফেরার পথ নেই। এই উন্মত্ততা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বন্ধ করতে হবে।”

এরদোগান আরও বলেন, “ইজরাইল নিজেই যেখানে গাজায় ৭০০ এর বেশি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে সেখানে তারা ইরানি হামলায় হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নিয়ে যে সমালোচনা করছে, তা পুরোপুরি ভণ্ডামি।” সূত্র: আল জাজিরা