ইজরায়েল হামলা বন্ধ করলে আলোচনায় প্রস্তুত ইরান: পাকিস্তান
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : জুন ১৭, ২০২৫
ইজরায়েল হামলা বন্ধ করলে ইরান আলোচনায় ফিরতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। সোমবার সিনেট অধিবেশনে তিনি এ কথা জানান।
ইসহাক দার বলেন, “ইজরায়েল আর কোনো হামলা না চালালে আলোচনার টেবিলে ফিরবে তেহরান। এমন বার্তা আমি পেয়েছি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির কাছ থেকে।”
তিনি আরও বলেন, “ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, ইজরায়েল যদি আর কোনো আক্রমণ না চালায় তাহলে তারা আলোচনায় ফিরতে প্রস্তুত। আমরা এই বার্তাটি অন্যান্য দেশগুলোর কাছেও পৌঁছে দিয়েছি। এখনো সময় আছে, ইজরায়েলকে থামানো ও ইরানকে আলোচনায় ফেরানো সম্ভব।”
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই সংকটে পাকিস্তান সবসময় কূটনৈতিক চ্যানেল চালু রাখতে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সফল আলোচনা নিশ্চিত করা।”
তিনি আরও বলেন, “পুরো সংকটকালে ওমান ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন। ইজরায়েলি হামলার আগে ও পরেও আমি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে প্রথম হামলার পরই স্পষ্ট করে বলেছিলেন, এই হামলার জবাব দেওয়া হবে।”
ইসহাক দার বলেন, “এই পরিস্থিতি কোনো খেলা নয়। এটি ভয়াবহ সংঘাত। সবার উচিত দায়িত্বশীল আচরণ করা। এখন অযথা উত্তেজনা ছড়ানোর সময় নয়। ভুয়া তথ্য ব্যাপকভাবে ছড়ানো হচ্ছে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০১১ সালের একটি পুরনো সাক্ষাৎকারকে বর্তমান সময়ের ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ। ইজরায়েল পারমাণবিক হামলা চালালে পাকিস্তানও পারমাণবিক জবাব দেবে, এই বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও দায়িত্বজ্ঞানহীন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ১৯৯৮ সালেই পরিষ্কার করে বলেছিলাম, আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র শুধুমাত্র আত্মরক্ষার জন্য। পাকিস্তানের পারমাণবিক নীতি সম্পূর্ণ প্রতিরক্ষামূলক। এটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।”
ইসহাক দার বলেন, “পাকিস্তান কখনোই পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ সংক্রান্ত চুক্তি (এনপিটি) স্বাক্ষর করেনি এবং স্বাধীন পরমাণু নীতিই অনুসরণ করছে। পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা আন্তর্জাতিক আইনে গুরুতর অপরাধ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে একটি ক্রাইসিস ইউনিট সক্রিয় করেছে এবং সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।”
শুক্রবার থেকে ইজরায়েল ইরানের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি, পারমাণবিক স্থাপনা ও আবাসিক এলাকায় ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে। এতে অন্তত ২২৪ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও বেসামরিক নাগরিক।
জবাবে ইরান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। যাতে ইজরায়েলে এখন পর্যন্ত ২৪ জন নিহত হয়েছে বলে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে। ইজরায়েলকে কখনোই স্বীকৃতি দেয়নি ইরান। বরাবরই তারা অভিযোগ করে আসছে, ইজরায়েল গোপনে তাদের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় ও বিজ্ঞানীদের হত্যা করে। সূত্র: জিও নিউজ
























