এবার বইমেলায় ৬০ কোটি টাকার বই বিক্রি

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : মার্চ ০২, ২০২৪

অমর একুশে বইমেলা ২০২৪ শেষ হয়েছে। বাংলা একাডেমির তথ্যমতে, অতিরিক্ত দুইদিনসহ ৩১ দিনে মেলায় বই এসেছে ৩৭৫১টি। এ বছর মেলায় আনুমানিক ৬০ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। ১ মার্চ পর্যন্ত মেলায় এসেছেন প্রায় ৫৯ লাখ দর্শনার্থী।

শনিবার বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে একাডেমির উপপরিচালক শাহেদ মন্তাজ এ বছরের রিপোর্ট উপস্থাপনকালে এসব তথ্য জানান।

কয়েক বছরে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ বছরই সর্বোচ্চ রেকর্ড সংখ্যক বই বিক্রি হয়েছে। ২০২৩ সালে আনুমানিক ৪৭ কোটি, ২০২২ সালে সাড়ে ৫২ কোটি, ২০২১ সালে ৩ কোটি ১১ লাখ এবং ২০২০ সালে ৮২ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়।

এছাড়া সমাপনী অনুষ্ঠানে ২০২৩ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক বই প্রকাশের জন্য কথাপ্রকাশকে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার-২০২৪ পুরস্কার দেওয়া হয়। বইমেলায় নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্যপ্রকাশ (প্যাভিলিয়ন), নিমফিয়া পাবলিকেশন (২-৪ ইউনিট), বেঙ্গল বুকসকে (১ ইউনিট) শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৪ প্রদান করা হয়।

এছাড়া ২০২৩ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে শৈল্পিক ও গুণমান বিচারে সেরা বই বিভাগে মনজুর আহমদ রচিত ‘একুশ শতকে বাংলাদেশ: শিক্ষার রূপান্তর’ গ্রন্থের জন্য প্রথমা প্রকাশন, মঈন আহমেদ রচিত ‘যাত্রাতিহাস বাংলার যাত্রাশিল্পের আদিঅন্ত’ গ্রন্থের জন্য ঐতিহ্য এবং আলমগীর সাত্তার রচিত ‘কিলো ফ্লাইট’ প্রকাশের জন্য জার্নিম্যান বুকস মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৪ দেওয়া হয়।

শিশুতোষ বইয়ের মধ্য থেকে ২০২৩ এ গুণমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার ২০২৪ দেওয়া হয় ‘ময়ূরপঙ্খিকে’।

বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহাম্মদ নুরুল হুদা স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান ও সচিব খলিল আহমদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

শেষদিন মেলা প্রাঙ্গণে মানুষের ভিড় দেখা যায়। স্টল ও প্যাভিলিয়নের বিক্রয় কর্মীদের ব্যস্ততাও চোখে চোখে পড়ে। শেষদিন সর্বোচ্চ বিক্রি হয়েছে বলে জানান বিক্রয়কর্মী ও প্রকাশকরা। অন্যদিকে আগামী বছরও বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার আয়োজন করার চেষ্টা করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান।

রাজধানীর বেইলি রোডে নিহতদের স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তিনি বলেন, “পৃথিবীর ঘুরে এমন একটি বইমেলা কেউ খুঁজে পাবেন না। এই বইমেলা আমাদের আবেগের ও জাতিসত্তার মেলা। ১ ফেব্রুয়ারি বইমেলার উদ্বোধনী আয়োজনে এসেছিলাম। জীবনে চিন্তাও করিনি বইমেলার সমাপনী আয়োজনে আমি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে হাজির হবো।”

বইমেলা স্থানান্তরের বিষয়ে তিনি বলেন, “বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বইমেলা এখন ঐতিহ্য হয়ে গেছে। এই বইমেলা প্রস্থানের বিষয়ে কথা উঠেছে। আমরা কোনো না কোনো ব্যবস্থা করে বইমেলা এখানে রাখার ব্যবস্থা করবো।”