
করোনা ভাইরাস প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ব্যর্থতা
রাহমান চৌধুরীপ্রকাশিত : মে ১৯, ২০২০
বলতে আর দ্বিধার নেই, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভূমিকা অকার্যকর। প্রথম থেকেই প্রতিষ্ঠানটি ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ এরকম একটা জায়গায় অবস্থান করছে। নিজের সুবিধার স্বার্থে সেটা করে করুক, কিন্তু করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যসেবার জায়গা থেকে মানুষের সামনে সে কোনো যথাযথ পরিকল্পনা বা দিকনির্দেশনা রাখতে পারেনি। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে তার অবস্থান কখনোই মানুষের মনে আশা জাগায়নি, ঠিক তেমনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোনো সামগ্রিক দিক নির্দেশনা দিতে পারেনি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাঙা রেকর্ড বাজানোর মতো করে বারবার যা বলছে তা হলো, লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন আর সাবান-পানি দিয়ে বিশ সেকেণ্ড হাত ধোয়া বা হ্যাণ্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, হাঁচি হলে রুমাল দিয়ে বা হাতের কনুই দিয়ে নাক ঢাকা।
বিশ সেকেন্ডই সাবান পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে কেন, কেন বিশ সেকেন্ডের কম নয়, বিশ সেকেন্ড হাত ধুলে কী হবে; সাধারণ মানুষের কাছে সেটাও তারা স্পষ্ট করতে পারেনি। স্পষ্ট করার চেষ্টাও করেনি। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের সঙ্গে বিশ সেকেন্ড হাত ধোয়ার সম্পর্কটা কোথায়, কেন বিশ সেকেন্ড সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়াটা জরুরি বিরাট সংখ্যক সাধারণ মানুষ তা জানে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটা জানানোর জন্য তেমন কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। বহু মানুষের কাছে বিশ সেকেন্ড কতেটা সময় বুঝতে কঠিন হবে, কারণ সকল নাগরিকরা রাষ্ট্রের কাছে এত সুযোগ সুবিধা পায়নি যে চট করে সব কথার সঠিক মানে ধরতে পারবে। বিশ সেকেন্ড না বলে কথাটা হওয়া দরকার ছিল বিশ সেকেন্ডের বেশি। নিরক্ষর দরিদ্র মানুষের কথা বাদ দিলাম, বিশ সেকেন্ডের বেশি সময় সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুলে করোনা ভাইরাস কীভাবে অকার্যকর হয়, সেটা যথেষ্ট সনদধারী শিক্ষিত বহু মানুষ পর্যন্ত জানেন না।
সমাজের অগ্রগণ্য বহু জনের সঙ্গে কথা বলে এ ধারণা আমার হয়েছে। না জানাটা তাদের ত্রুটি নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেমন ব্যাপারটা পরিষ্কার করেনি সাধারণের কাছে, স্থানীয় গণমাধ্যম বা চিকিৎসরা পর্যন্ত সেটা স্পষ্ট করে বলছেন না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো প্রতিষ্ঠানগুলি হচ্ছে সমাজের ক্ষমতাবানদের জায়গা। সেখানে যারা কাজ করেন তারা নিজেদেরকে ভাবেন সমাজের অগ্রণী, মনে করেন তাদের মতো মহান ক্ষমতাধর জ্ঞানী মানুষদের নির্দেশে বিশ্ব চললে জনগণের উপকার হবে। ফলে নির্দেশ দিয়েই তারা খালাস, মন করেন সঠিক নির্দেশ দিয়ে বিশ্বের বিরাট উপকার করে ফেলেছেন। কিন্তু সবটা না বুঝে সে নির্দেশ মানুষ কেন অন্ধের মতো পালন করবে, সে বিবেচনায় তারা যান না। তাদের শিক্ষার অহঙ্কার বা তাদের প্রাপ্ত শিক্ষা তাদেরকে এটাই শিখিয়েছে, তাদের অনুসরণ করলেই দেশ ও জাতির মঙ্গল। যদি উদ্দেশ্য সৎ বা মহৎ হয় তবুও অন্ধ অনুকরণে সঠিক ফল পাওয়া যায় না। নিশ্চয় বিশ সেকেন্ড সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া খুবই কার্যকর করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে, কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ জানে না সেটা কেন বা কীভাবে কার্যকর। ফলে যারা অন্ধ অনুবরণে হাত ধুচ্ছে, আমি আমার চারদিকের মানুষের ক্ষেত্রে দেখেছি খুব ভুলভাবে সেটা পালিত হচ্ছে।
বাজার থেকে ফিরে কেন হাত ধোবে, কেন গোসল করবে বা কাপড়চোপর ধুয়ে ফেলবে সেটাও তাদের কাছে পরিষ্কার নয়। ফলে সব কিছু তারা করছে কিন্তু কোনোটাই সঠিকভাবে নয়। ধর্ম পালন করার মতো অন্ধভাবে নির্দেশ পালন করে চলেছে। কিন্তু দরকার ছিল চিত্রের সাহায্যে বারবার সবাইকে দেখানো যে, সাবান পানি দিয়ে হাত ধুলে করোনা ভাইরাসটি কী সঙ্কটে পতিত হয়। সাবান পানি আর করোনা ভাইরাসের সম্পর্ক কী আর কীভাবে সেটা করোনা ভাইরাসকে অকার্যকর বা ধ্বংস করে দেয়। সত্যি বলতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করেন কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সকলেই নিজেদের ভোগবিলাস আর সুযোগ সুবিধা নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে। ফলে জনগণের সেবায় এসব প্রতিষ্ঠান খুব কার্যকর হয় না; কিছু গৎবাঁধা গবেষণা, কিছু গৎবাঁধা কার্যক্রম পালন করে চলে। তাতেই তারা তৃপ্ত থাকে। বেতন নেবার জন্য কাজ করে, মানুষের মঙ্গলের জন্য নয়। আমার এক বন্ধু কিছুদিনের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় গবেষণা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বেশি দিন কাজ করেননি। তাঁর বন্ধু তখন হুর বড় পদ দখল করে আছে। কিন্তু দিল্লিতে যখন কাজ করতে গেলেন, দিল্লি হুর কর্তা ব্যক্তিটি আমার বন্ধুটি সম্পর্কে জানতেন যে, তিনি সবসময় নিজের অর্থে জনগণের স্বার্থে বহু গবেষণা করে সুনাম আর সম্মান অর্জন করেছেন। দিল্লির কর্তাটি তাই শুরুতেই আমার বন্ধুকে বলে দিয়েছিলেন, তিনি যেন গবেষণা প্রস্তবনার বাইরে গিয়ে বিপ্লবী কিছু করার চেষ্টা না করেন। আমাদের এ বন্ধু প্রচুর প্রাপ্তিযোগ থাকা সত্ত্বেও সেখানে আর চুক্তি শেষ হবার পর থাকেননি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রথমে বলেছে, যারা করোনা ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত নয়, তাদের মাস্ক পরার দরকার নেই। সেই কথা শুনে অন্ধভাবে বাংলাদেশের আইসিডিআর বলে দিল যারা করোনা রোগী নয় তাদের মাস্ক পরার দরকার নেই। সাধারণের মাস্ক পরা নিয়ে ব্যঙ্গ করতে পর্যন্ত ছাড়লো না সেখানকার কর্মকর্তারা। কিন্তু এখন কী দেখা গেল, সকলকে মাস্ক পরতে হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বড় দায়িত্বটি ছিল করোনা ভাইরাস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তোলা। কিন্তু তা তারা করেনি, তারা কিছুটা সতর্ক করেছে মাত্র। সতর্ক করেছে এমনভাবে যে ভদ্রলোকদের কাছে সেটা মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের ভদ্রলোকরা এখন লকডাউন আর কোয়ারেন্টাইন ছাড়া আর কিছু বুঝতে রাজি নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান একটি দায়িত্ব ছিল করোনা ভাইরাসটির সঙ্গে মানুষকে পরিচয় করিয়ে দেয়া, তার মূল বৈশিষ্টগুলি বিস্তারিতভাবে মানুষকে জানিয়ে দেয়া। ভাইরাসটি নিজে নিজে কোন পরিবেশে কতোক্ষণ টিকে থাকতে পারে, মানুষের শরীরের বাইরে থেকে কতেটা সময় বেঁচে থাকে, মানুষের পোষাকে এবং ঘরের আসবাবপত্রে কতেটা সময় টিকে থাকে ইত্যাদি বিষয়গুলি সম্পর্কে মানুষকে একটি প্রাথমিক ধারণা দেয়া হুর দায়িত্ব ছিল; যাতে মানুষ সেই হিসেব থেকে কার্যকরভাবে ভাইরাসটির সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে পারে। কিন্তু হু এসব করেনি। কিছু মানুষ জন্স হফকিন্স এর গবেষণাপত্র, ইংল্যাণ্ড মেডিক্যাল জর্নাল ইত্যাদি থেকে এ সম্পর্কে কিছুটা জানতে পেরেছে। সেই সব গবেষণায় দেখা যায়, শীত বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলার জন্য মোটেই ভালো কিছু নয়। জাপানসহ তাদের গবেষণা বলছে ‘বদ্ধঘর’ খুবই খারাপ, যেখানে আলোবাতাস চলাচল রয়েছে সেরকম কক্ষ করেনো সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য অধিক কার্যকর। সূর্যের আলো বিশেষ করে আলট্রা ভায়োলেট রে করোনা ভাইরাস ধ্বংসে বেশ উপযুক্ত। যদি আমরা লক্ষ্য করি দেখবো, শীত প্রধান দেশগুলিতে করোনা আক্রমণের প্রকোপ আর মৃতের হার অনেক বেশি। কারণ প্রচণ্ড শীতে সেখানে বদ্ধঘরে থাকতে হয় মানুষকে যেখানে করোনা ভাইরাস অনেব বেশি সময় অনেক শক্তি নিয়ে টিকে থাকতে পারে। ফলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে হাসপাতালগুলিতে করোনা ভাইরাস অনেক বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছে। গরম এবং আলো বাতাস প্রবাহিত হয় যেখানে, সেরকম স্থান ভাইরাসকে যতেটা দুর্বল করতে পারে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বদ্ধঘর তা পারে না। কিন্তু এসকল ব্যাপারে হু কোনো দিক নির্দেশনা দেয়নি।
বহুজন বলবেন, যদি গ্রীষ্ম বা গরম আবহাওয়া করোনা ভাইরাসকে দুর্বল করতে পারে, তাহলে বাংলাদেশে এত মানুষ সংক্রামিত হচ্ছে কেন কিংবা ভারতে? চিন্তা করতে হবে এ সঙ্কটের প্রকৃত কারণটি কী। দুর্ভাগ্য যে, হু আমাদের এ ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দিতে পারেনি। যদি আমার মস্তিস্ক ব্যবহার করি তাহলে দেখবো, গরম বা আলো বাতাস কখনো আক্রান্ত রোগীর শরীরের ভিতরের ভাইরাসকে দুর্বল করতে পারে না। কারণ মানুষের শরীরের ভিতরে প্রাকৃতিক গরম বা আলো বাতাস প্রবেশ করে না। ফলে মানুষের শরীরের ভিতরে ভাইরাসে তা কার্যকর নয়। সেটা দুর্বল করে মানুষের শরীরের বাইরের ভাইরাসকে। ফলে রাস্তাঘাটে, বাতাসে, বস্তুর উপর থাকা ভাইরাসকে দুর্বল করে গরম আবহাওয়া, আলট্রাভায়োলেট রে আর আলো বাতাস। ফলে শীতপ্রধান দেশের রাস্তাঘাটে বা বাইরের বিভিন্ন বস্তুতে ভাইরাসটি যতক্ষণ টিকে থাকবে, গ্রীষ্ম প্রধান দেশের ক্ষেত্রে তা ঘটবে না। কিন্তু একটি ক্ষেত্রে তা শীতপ্রধান আর গ্রীষ্মপ্রধান দেশে খুব একটা ফারাক হবে না। ভাইরাসটি কীভাবে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে? শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যম। ফলে যখন কেউ একজন আক্রান্ত রোগীর সামনে গিয়ে সরাসরি তার দ্বারা আক্রান্ত হবে, তার কাছ থেকে সরাসরি নিজের নাকের ভিতরে ভাইরাসটিকে গ্রহণ করবে, তখন গরম আবহাওয়া বা আলো বাতাস আর সাহায্য করতে পারবে না। কারণ আলো বাতাস বা গরম ভাইরাসটিকে দুর্বল করার আগেই তা সরাসরি একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে প্রবেশ করবে। কিন্তু ধরা যাক একটি পণ্য, যা বহুক্ষণ সূর্যের তাপের স্পর্শে এসেছে তার উপর থাকা ভাইরাসটি দুর্বল হবে। না হলে সূর্যের তাপে কিছুক্ষণ রেখে কাপড়চোপর, পিপিই, বা মাস্ক জীবাণুমুক্ত করার কথা বলা হচ্ছে কেন? ফলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বদ্ধঘরে রোগীর হাঁচি থেকে বের হয়ে আসা জীবাণু হাসপাতালের বিছানায়, বিছানার চাদর বা খাটে বা মেজেতে কিংবা চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর পিপিই বা পোষাকে যতক্ষণ টিকে থাকবে, আলো বাতাস প্রবাহিত ঘরে ততক্ষণ থাকবে না। কী হচ্ছে তাহলে? বদ্ধঘরের বিছানার চাদর স্পর্শ করলে যতোটা ভাইরাস ছড়াবে আলো বাতাস আছে এমন ঘরে তার চেয়ে কম ছড়াবে। দ্বিতীয়ত বদ্ধঘরের রোগী যতেটা প্রাকৃতিক অক্সিজেন পাবে তার চেয়ে বেশি পাবে যে ঘরটি বদ্ধ নয়। রোগীর মৃতের হার শীতপ্রধান দেশে কেন এতবেশি হয়তো এটাই তার জবাব।
আসলে আমাদের করোনা সংক্রান্ত হাসপাতালগুলি যদি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে না হয়ে, উন্মুক্ত আলোবাতাস পাওয়া যাবে এমন ঘরে হয়, আমার বিশ্বাস রোগীকে সেটা বেশি নিরাপত্তা দেবে। হু এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দেয়নি। কিন্তু অন্যান্য অনেক গবেষণার প্রেক্ষিতে এরকম ধারণা করার যুক্তি আছে। যদি সেটা না হতো, ভারত বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে যেখানে মানুষ কিছু মানছে না রোগীর সংখ্যা আরো অনেক গুণ বেড়ে যেতে। ধরা যাক, আমার চারদিকের কিছু মানুষ যেমন দারোয়ান, পিয়ন, নিরাপত্তারক্ষী আর ছোট দোকানদাররা যেভাবে সর্বক্ষণ মালিকপক্ষের জন্য এটা ওটা কিনছে, যেভাবে দোকানদাররা বহু মানুষেরর কাছে তা বিক্রি করছে; আমি দেখলাম এদের একজনও দুমাসে আক্রান্ত হয়নি। বহাল তবিয়তে আছে, একজনেও আক্রান্তের খবর পাইনি। খুব অবাক করার ব্যাপার নয় কি? কারণ তাদের বিক্রি করা বা ক্রয় করা পণ্যের ভাইরাসটি তত শক্তিশালী নয়, আলোবাতাসে আর গরমে তা দুর্বল হয়ে গেছে। না হলে প্রতিদিন এতরকম পণ্য স্পর্শ করার পর তারা আক্রান্ত হচ্ছে না কেন? বারবার যে তারা হাত ধুচ্ছে তাও কিন্তু নয়। ফলে গ্রীষ্ম বা সূর্যের তাপ আর আলো যে একটা সহযোগিতা করছে, তা মেনে নেবার যথেষ্ট যুক্তি আছে। কিন্তু এ ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোনো নির্দেশনা বা গবেষণাপত্র নেই।
চিকিৎসা প্রসঙ্গে কথা বলা যাক। করোনা ভাইরাস সংক্রামিত রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে হুর সামান্য দিকনির্দেশনা নেই। হ্যাঁ, মানছি করোনা ভাইরাস রোগ থেকে বাঁচার জন্য অষুধ বা টিকা নেই। কিন্তু চিকিৎসা যে একেবারে নেই তা আর বলতে পারবো না। চিকিৎসা মানে তো অষুধ খাওয়া আর টিকা গ্রহণ নয়। টিকা আর অষুধ গ্রহণ ছাড়া বহু আক্রান্ত মানুষ সুস্থ হয়েছে। বহু আক্রান্ত ঘরে বসে সুস্থ হয়েছে। প্রায় তাদের সকলের ভাষ্য মতে প্রায় একই ধরনের একটি চিকিৎসা দিয়ে তার নিরাময় হতে পেরেছেন। সেটা হলো, বারবার গরম পানির ভাপ নেয়া আর গরম পানি দিয়ে গলা গারগেল করা এবং গরমপানি পান করা। বিভিন্ন জন গরম পানিতে বিভিন্ন মশলা মিশিয়ে তা করেছেন এবং সুস্থ হয়েছে। কিন্তু কথাটা হলো শেষ বিচারে গরমপানি, যা বহু প্রাচীনকাল থেকে চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে এটা যে একটা চিকিৎসা তা আর অস্বীকার করা যাচ্ছে না। আর এ ধরনের চিকিৎসার লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। সারা বিশ্বে বহু মানুষ যারা এ পদ্ধতি দ্বারা সুফল পাচ্ছে তাকে আমরা চিকিৎসা বলবো না কেন? যতদূর দেখা যায়, ভারত বাংলাদেশ আর চীনের মানুষ এ ধরনের প্রাকৃতিক চিকিৎসায় আস্থা রেখে লাভবান হয়েছে। যদি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালী, স্পেন প্রভৃতি দেশসমূহ এ পদ্ধতি পালন করতো, তাহলে উপকার পেত বলে মনে হয়। হয়তো তাদের মৃতের হার অনেক কমতো। কিন্তু তাদের বেশির ভাগের কাছে চিকিৎসা মানে বড় বড় ফার্সাসিউটিক্যাল কোম্পানির অষুধ। কারণ তাদের বাণিজ্যিক আর সুযোগ সুবিধা এর সঙ্গে যুক্ত। ফলে প্রমাণিত অন্য চিকিৎসায় তাদের আগ্রহ নেই। কারণ সেখানে মুনাফা নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টিকিটি এর সঙ্গে বাঁধা। ফলে উন্নত দুনিয়ার কথায় সে ওঠেবসে। ফার্মাসিউটিক্যাল ক্ম্পোনির স্বার্থরক্ষা তার কাজ। ফলে করোনার আতঙ্ক ছড়িয়ে ভবিষ্যতে ফার্মাসিউটিক্যাল ক্ম্পোনির লাভ বাড়িয়ে তোলাটাও তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। ফলে সাধারণ মানুষকে সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়ার আগ্রহ তাদের অন্তত এ মুহূর্তে কম। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বর্তমান প্রধানটি একজন রাজনীতিক, চিকিৎসক নন। ফলে তিনি কি চাইছে নিশ্চিত জানি না।