চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে গাজার ৫০ হাজার গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারী

খাদ্য ও জরুরি ওষুধের তীব্র ঘাটতির কারণে প্রায় ৫০ হাজার গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারী বর্তমানে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহ’র আল আকসা শহিদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের মুখপাত্র খালিল আল দাকরান ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফাকে বলেন, “যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় গর্ভপাতের হার ৬ গুণ বেড়েছে। একইসঙ্গে অকাল প্রসবের সংখ্যাও মারাত্মকভাবে বেড়েছে। ফলে শিশু নিবিড় পরিচর্যা (নিওনেটাল) ইউনিটগুলো ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “ইজরায়েলি হামলায় গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। যার ফলে রোগীরা মারাত্মক বিপদের মুখে পড়েছে। অব্যাহত ইজরায়েলি হামলার মুখে গাজার ২৩টিরও বেশি হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। বাকি যেগুলো চালু আছে সেগুলোতে কার্যক্রম নামে মাত্র। জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী ও জ্বালানির ঘাটতি এর প্রধান কারণ।”

গাজার ১২,০০০ এর বেশি ক্যানসার রোগী চিকিৎসা পাচ্ছে না। প্রতিদিন প্রায় ৫ জন ক্যানসার রোগী মারা যাচ্ছে। ডায়ালাইসিসের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পাওয়ায় কিডনি রোগীরাও মারা যাচ্ছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইজরায়েলি বাহিনী আল আকসা শহিদ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের ছাদে হামলা চালিয়েছে। এই হামলা তাদের গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংসের উদ্দেশ্যে পরিচালিত ‘পরিকল্পিত নীতি’র অংশ।

গাজার সবচেয়ে বড় তবে এরই মধ্যে বিধ্বস্ত আল শিফা হাসপাতালের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আবু সালমিয়া জরুরি বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন রক্তের সরবরাহ অবিলম্বে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “প্রতিদিন প্রচুর আহত রোগী রক্তের অভাবে মারা যাচ্ছে।”

ইজরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, উত্তর গাজায় একজন রিজার্ভ সেনা নিহত হয়েছে। এর আগের দিনে হামাসের পালটা আক্রমণের মুখে আরও ৩ সেনা সদস্য নিহত হয়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইজরায়েলি হামলায় ৯৭ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৪৪০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে।

ফিলিস্তিনি বন্দি বিষয়ক গণমাধ্যম সংস্থা আসরা (এএসআরএ) জানিয়েছে, আজ ভোরবেলা পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইজরায়েলি সেনাবাহিনী ১৯ ফিলিস্তিনিকে আটক করে। তাদের মধ্যে কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মীও রয়েছে। সূত্র: আল জাজিরা