‘বাংলাদেশের নাগরিকদের হাতে সরকার পরিবর্তনের ক্ষমতা নেই’

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : মে ০৭, ২০২৪

বাংলাদেশে নাগরিকদের হাতে সরকার পরিবর্তনের ক্ষমতা নেই বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর প্রকাশিত বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে (২০২৩) এ মন্তব্য করা হয়।

প্রতিবেদনের বিষয় ছিল, ২০২৩ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাক্টিসেস: বাংলাদেশ। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বাধীন মতপ্রকাশে বাধা, গণমাধ্যমের ওপর সেন্সরশিপসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের নাগরিকদের হাতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সরকার পরিবর্তনের ক্ষমতা নেই। মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০২২ সালের মতো গত বছরও বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম ও নির্যাতনসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের ব্যাপারে সরকারের দায়মুক্তির সংস্কৃতি বিরাজ করছে এখানে। দেশের অধিকার ও মানবাধিকার কর্মীরা এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওইসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত ও শাস্তি দিতে সরকার বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। উল্টো তাদেরকে ব্যাপকভাবে দায়মুক্তি দেওয়ার অসংখ্য খবর রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ নির্বিচারে বেআইনি হত্যা, গুম, সরকারের নির্যাতন বা নিষ্ঠুরতা, নির্বিচারে গ্রেপ্তার-আটক, অমানবিক ও অসম্মানজনক আচরণ এবং কারাগারের কঠিন ও জীবনের জন্য হুমকির পরিবেশের বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে। এছাড়া অন্য দেশে থাকা ব্যক্তিদের ওপর নিপীড়ন চালানোর তথ্যও রয়েছে।

বাংলাদেশে হাজার হাজার কথিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং জোরপূর্বক গুমের ঘটনা নথিভুক্ত করার জন্য পরিচিত মানবাধিকার সংস্থা অধিকার-এর একজন পরিচালক নাসিরুদ্দিন এলান প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, “এ ধরনের প্রতিবেদনগুলো জনসচেতনতা বাড়ায়, জনগণকে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সম্পর্কে আরও সচেতন করে তোলে, যা অপরিহার্য।”

২০২২ সালে বাংলাদেশ সরকার অধিকারকে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়ানোর জন্য অভিযুক্ত করেছিল। পরে সংস্থাটির লাইসেন্স প্রত্যাহার এবং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা নাসিরুদ্দিন ও সম্পাদক আদিলুর রহমান খানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে। মামলায় তাদের দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য ভয়েস অফ আমেরিকার কল, ম্যাসেজ ও ই-মেইলের অনুরোধের জবাব দেয়নি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।  তবে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন `ত্রুটিপূর্ণ` বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বিবিসি বাংলাকে বলেন, “এটি একটি মনগড়া রিপোর্ট। এখানে সত্যের হার খুবই কম। প্রতিবেদনে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে মার্কিন সরকারের কাছে তথ্য-প্রমাণ চাওয়া হবে।”