বিশ্বজয়ী হও

পর্ব ১

অমিত কুমার কুণ্ডু

প্রকাশিত : জুন ২২, ২০২০

অনেকদিন ধরেই আমি ক্রমশ ব্যর্থ হচ্ছিলাম, এবং কীভাবে সফল হওয়া যায় তার উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম। অবশেষে যখন সফল হবার পথের সন্ধান পেলাম, তখন মনে পড়ল স্বামীজির সেই কথাটি, যে পানীয় পান করে তোমার তৃষ্ণা মিটেছে তা অপরকে পান করতে দাও।

সেই তাগিদ থেকেই আমার জীবন উপলব্ধিতে যা সত্য বলে জেনেছি, সফল হবার জন্য যে মন্ত্র বারবার হৃদয়ে ধ্বনিত হয়েছে, তা এই ছোট পরিসরে আমার সমসাময়িক বন্ধু-বান্ধব ও ছোট ভাইবোনদের জন্য লিপিবদ্ধ করছি। যেমন একটি মোমবাতি দ্বারা লক্ষ মোমবাতি প্রজ্বলিত করা যায়, যেমন একটি ম্যাচের কাঠির আগুন দ্বারা হাজার বছরের অন্ধকার ঘর নিমিষেই আলোকিত হয়ে যায়, তেমনি আমি যে আলোর সন্ধান পেয়েছি, সেই আলোতেও লক্ষ হৃদয় আলোকিত হতে পারে, লক্ষ প্রাণ সে আলোর পথ ধরে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে।

বিশ্বাস রাখি, এ লেখাটি পড়ার পরে হতাশায় পরিপূর্ণ বিষণ্ণ হৃদয়েও আশার প্রদীপ জ্বলবে। কর্মহীন অলস জীবনও কর্মচাঞ্চল্যে ভরে ওঠার স্বপ্নে বিভোর হবে। যদি এ লেখাটি পড়ে একটি ছেলেমেয়েও অনুপ্রাণিত হয় এবং একজনও তার জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে, তবে আমার লেখা স্বার্থক হবে।

সকলেই ঈশ্বরের সন্তান এবং অমৃতের অধিকারী। সকলের মাঝেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আত্মারূপে অবস্থিত। যে আত্মা সর্বশক্তিমান। সেই আত্মার সর্বশক্তিমত্তায় বিশ্বাস করে আমি পারব, এ ধারণা হৃদয়ে ধারণ করে কাজে নেমে পড়ো, নিশ্চয়ই সফল হবে।

মানুষ যা চায়, তা-ই করতে পারে। মানুষ যা ইচ্ছা করে, তা-ই বাস্তবে পরিণত হয়। হাজার বছর আগের মানুষের এমন কোনো কল্পনা নেই, যা আজ বাস্তবে পরিণত হয়নি। বর্তমান মানুষেরও এমন কোনো স্বপ্ন থাকবে না, যা হাজার বছর পরে পরিপূর্ণতা পাবে না।

বিমান আবিষ্কার করার আগে কে ভেবেছিল, মানুষ এভাবে উড়তে পারবে? মোবাইল আবিষ্কার করার আগে কে ভেবেছে, এই ছোট যন্ত্রটিতে একসাথে এত কাজ হবে? আমাদের কল্পনা থেকেও দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে বিজ্ঞান। যাদের দ্বারা এই গতির সৃষ্টি হচ্ছে; বন্ধুরা, তারা তোমাদের মতোই মানুষ।

তারাও একদিন তোমাদেরই মতো মাতৃক্রোড়ে কেঁদেছে। তারাও তোমাদের মতোই, সমান সময়ে বসতে, দাঁড়াতে, কথা বলতে শিখেছে। তাদের মধ্যে তোমাদের থেকে কী পার্থক্য আছে? উত্তর পাবে, কিছুই না। শুধু তারা ভেবেছেন তারা কিছু করবেন, তাই তারা কিছু করেছেন। তারা ভেবেছেন, এ জীবন ক্ষণভঙ্গুর, এটা আনন্দে নষ্ট করার জন্যে নয়, এটা কিছু করে দেখাবার জন্যে সৃষ্টি হয়েছে, তাই তারা বড় হয়েছেন।

ইচ্ছাশক্তির অমিত ক্ষমতা, ইচ্ছা কী না করতে পারে? ইচ্ছা সর্বশক্তিমান। বিশ্বাস সর্বশক্তিমান। ভালোবাসা সর্বশক্তিমান। এ বিশ্বে যা কিছু হয়েছে, তা ইচ্ছার জোরে, বিশ্বাসের জোরে, আর প্রেমের জোরেই হয়েছে। এগুলোর সমন্বয়েই সাধারণ মানুষ মহামানবে রূপান্তরিত হয়।

যদি তুমি তিনটি বস্তুকে এক সুতায় গাঁথতে পার, তবে তুমিও সব করতে পারবে। যদি তোমার লক্ষ্য স্থির থাকে, যদি তোমার সংকল্প দৃঢ় থাকে, এবং যদি তোমার ওই লক্ষ্য পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম থাকে, তবে তুমি জয়ী হবেই হবে।

তুমি লক্ষ্য স্থির করতে পারবে, শুধু তোমার ইচ্ছাশক্তির দৃঢ়তার কারণেই, তোমার সংকল্প দৃঢ় হবে শুধুমাত্র নিজের উপর বিশ্বাসের বলেই, আর কঠোর পরিশ্রম করতে পারবে, যদি তুমি তোমার অভীষ্ট লক্ষ্যকে নিজের এই নশ্বর দেহ থেকে বেশি ভালোবাসো, তবেই।

একবার ভেবে দেখো, তোমার চিত্ত কতটা চঞ্চল। একবার চিন্তা করে দেখো, তুমি সব পেতে তোমার এই দু`হাত বাড়িয়েছ। বন্ধু, হাত তো তোমার মাত্র দুটি, এ দুটি হাত দ্বারা এক একবার মাটিতে পতনরত একটি করে বস্তুকেই ধরা যায়।

যদি তুমি সব জয় করতে চাও, তবে এক এক করে করো। তাহলে সব পাবে। একটি লক্ষ্য পূরণের পর অন্যটি ধরো। চিত্তকে স্থির করো। মনকে শান্ত করো। বিশ্বাস রাখো, তোমার দ্বারা কাজটি করা সম্ভব হবে। তাহলেই হবে। চলবে