শিক্ষাবিদ আ ন ম বজলুল রশিদের আজ জন্মদিন

শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক আ ন ম বজলুল রশিদের আজ জন্মদিন। তার পুরো নাম, আবু নঈম মোহাম্মদ বজলুর রশিদ। ১৯১১ সালের ৮ মে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) ফরিদপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হারুন-অর-রশীদ ছিলেন আইনজীবী এবং মাতা নছিমুননেসা।

১৯২৮ সালে ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৩১ সালে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৩৩ সালে রাজেন্দ্র কলেজ থেকে স্নাতক এবং ১৯৩৮ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিটি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর পাস করেন।

বজলুর রশিদ ১৯৩৪ সালে ঢাকা সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৫-১৯৭২ সালে তিনি ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৭৩-১৯৭৫-এর সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ১৯-৫-৮০-এর সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করেন।

তার রচিত প্রকাশিত কবিতার বইগুলো হচ্ছে, পান্থবীণা (১৯৪৭), মরুসূর্য (১৯৬০), শীতে বসন্তে (১৯৬৭), রঙ ও রেখা (১৯৬৯), এক ঝাঁক পাখি (১৯৬৯), মৌসুমী মন (১৯৭০), মেঘ বেহাগ (১৯৭১), রক্ত কমল (১৯৭২)।

বজলুল রশিদের লেখা নাটকগুলো হচ্ছে, ঝড়ের পাখি (১৯৫৯), যা হতে পারে (১৯৬২), উত্তরফল্গুনী (১৯৬৪), সংযুক্তা (১৯৬৫), ত্রিমাত্রিক (১৯৬৬), শিলা ও শৈলী (১৯৬৭), সুর ও ছন্দ (১৯৬৭), উত্তরণ (১৯৬৯), রূপান্তর (১৯৭০), একে একে এক (১৯৭৬) ও ধানকমল।

তার রেখা উপন্যাস হচ্ছে, পথের ডাল (১৯৪৯), অন্তরাল (১৯৫৮), মনে মনান্তরে (১৯৬২) ও নীল দিগন্ত (১৯৬৭)। ভ্রমনকাহিনিগুলো হচ্ছে, দ্বিতীয় পৃথিবীতে (১৯৬০), পথ বেঁধে দিল (১৯৬০), দুই সাগরের দেশে (১৯৬৭) এবং পথ ও পৃথিবী (১৯৬৭)।

বজলুল রশিদ রচিত অন্যান্য গ্রন্থ হচ্ছে: আমাদের নবী (১৯৪৬), আমাদের কবি (১৯৫১), রবীন্দ্রনাথ (১৯৬১), জীবন বিচিত্রা (১৯৬২), পাকিস্তানের সুফীসাধক (১৯৬৫), স্কুলে মাতৃভাষা শিক্ষণ (১৯৬৯), ইসলামের ইতিবৃত্ত (১৯৭২) এবং জীবনবাদী রবীন্দ্রনাথ (১৯৭২)

সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেন। এগুলো হলো, ভগবতীচরণ স্মৃতিপদক, পাকিস্তান সরকার কর্তৃক প্রদত্ত তমঘা-ই-ইমতিয়াজ ১৯৬৯, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ১৯৭৬ এবং ঢাকা বেতারের শ্রেষ্ঠ নাট্যকার ও শ্রেষ্ঠ গীতিকার পুরস্কার।

১৯৮৬ সালের ৮ ডিসেম্বর মহতী এ সাহিত্যিক মৃত্যুবরণ করেন।