
শিক্ষাবিদ সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের আজ জন্মদিন
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : জুন ০৫, ২০২৫
শিক্ষাবিদ সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের আজ জন্মদিন। ১৮৬৫ সালের ৫ জুন ভারতের হুগলি জেলার বাণীপুরে তার জন্ম। কলকাতার ভবানীপুরের সাউথ সাবার্বান স্কুলে তিনি লেখাপড়া করেন।
এ স্কুরে পড়ার সময় তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পান। অশ্বিনীকুমার দত্ত, শিবনাথ শাস্ত্রী, বিপিনচন্দ্র পাল, ব্রজেন্দ্রনাথ শীল, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শ্রীঅরবিন্দ, রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক, স্বামী বিবেকানন্দ ও স্বামী অভেদানন্দের সঙ্গে তার সখ্য ছিল।
পণ্ডিত শশধর তর্ক চুড়ামণির ‘ষট দর্শন’ (হিন্দু দর্শনের ছয়টি বিদ্যালয়) শীর্ষক বক্তৃতা শুনতে তিনি অ্যালবার্ট হলে উপস্থিত ছিলেন। এই সভার সভাপতিত্ব করেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। যার মূল প্রতিপাদ্য ছিল, ধর্মনিরপেক্ষ বা ধর্মীয়, পূর্ব বা পাশ্চাত্য, এবং অন্যান্য সমস্ত পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা এবং উপযোগিতার সাথে বাঁচুন।
সতীশচন্দ্রের তীব্র ধর্মীয় স্বভাব হিন্দু জীবন, চিন্তাভাবনা ও বিশ্বাসের অধ্যয়নের ওপর জোর দেন। তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হয়ে ১৮৮৬ সালে এমএ এবং ১৮৯০ সালে বিএল ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি নিজেকে কলকাতা হাইকোর্টে উকিল হিসাবে তালিকাভুক্ত করেন।
১৮৮৭ সালে তিনি বহরমপুর কলেজের ইতিহাস ও অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক নিযুক্ত হন। ১৮৯৫ সালে তিনি উচ্চতর পড়াশোনার বিকল্প পদ্ধতির প্রথম প্রচেষ্টা ভাগবত চতুষ্পাঠী প্রতিষ্ঠা করেন।
সতীশচন্দ্রের পিতা কৃষ্ণনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন বিচারপতি দ্বারকানাথ মিত্রের শৈশবের বন্ধু ও সহপাঠী। মিত্র তাকে কলকাতা উচ্চ আদালতে সরকারি নথির অনুবাদক হিসাবে নিয়োগ করেন। মিত্র প্রত্যক্ষবাদী ওগ্যুস্ত কঁতের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত মানবতার ধর্মের বিশ্বাসীদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ছিলেন।
এই দর্শনে বিশ্বাসী মানুষ ও সমাজের সেবক। নাস্তিক কৃষ্ণনাথ তার দুই পুত্র তিনকড়ি ও সতীশের মধ্যেও এই আদর্শকে অঙ্কিত করে দিয়েছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় নিজে কঁৎ ও তার দর্শন নিয়ে ভারতের মধ্যে প্রথম লিখেছেন তাই নয়, যোগেন্দ্রচন্দ্র ঘোষ ও রাজকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রবল উদ্দীপনাপূর্ণ প্রত্যক্ষবাদী বন্ধুও তার ছিল।
১৯৪৮ সালের ১৮ এপ্রিল সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় মারা যান।