
শিক্ষাবিদ সৈয়দ আলী আহসানের আজ মৃত্যুদিন
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : জুলাই ২৫, ২০২৫
সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ আলী আহসানের আজ মৃত্যুদিন। ২০০২ সালের ২৫ জুলাই ঢাকায় তিনি মারা যান। ১৯২২ সালের ২৬ মার্চ মাগুরা জেলার আলোকদিয়া গ্রামে তার জন্ম।
পুরোনো ঢাকা শহরের আরমানিটোলায় অবস্থিত আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি এন্ট্রান্স (এসএসসি) এবং ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বর্তমানে ঢাকা কলেজ) থেকে এফএ (এইচএসসি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে স্নাতক (বিএ) এবং ১৯৪৪ সালে স্নাতকোত্তর (এমএ) ডিগ্রি লাভ করেন।
এরপর তিনি কলকাতা চলে যান। সেখানেই বিয়ে করেন। এরপর যথাক্রমে অল ইন্ডিয়া রেডিও কলকাতা কেন্দ্রে এবং রেডিও পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্রে কর্মসূচি নিয়ামকরূপে চাকরি করেন। তিনি ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫৩ সালে সৈয়দ আলী আহসান করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান নিযুক্ত হন।
১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এ পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৬০ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমীর পরিচালক (প্রধান নির্বাহী) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। ১৯৭২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর পুনরায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৭৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুর পর তাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
১৯৭৭-৭৮ সালে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও ধর্ম সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা পদে নিযুক্ত ছিলেন। সুইডেনের নোবেল কমিটির সাহিত্য শাখার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন ১৯৭৬ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত। ১৯৮৯ সালে তিনি জাতীয় অধ্যাপক হিসাবে অভিষিক্ত হন এবং সে বছরই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন।
শেষ বয়সে দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটির উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবেও তিনি শিক্ষিতমহলে বেশ পরিচিত।
১৯৭১ সালে সৈয়দ আলী আহসান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। এ সময় তিনি ‘চেনাকণ্ঠ’ ছদ্মনামে পরিচিত ছিলেন।
তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৮), দাউদ পুরস্কার (১৯৬৯ স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রাক্কালে প্রত্যাখ্যান), শেরে বাংলা পুরস্কার, সুফি মোতাহার হোসেন স্বর্ণপদক (১৯৭৬), বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ব একুশে পদক (১৯৮২), নাসির উদ্দীন স্বর্ণপদক (১৯৮৫), মধুসূদন পুরস্কার (১৯৮৫), স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৮৭), কিশোরকণ্ঠ সাহিত্য পুরস্কার (মরণোত্তর)-২০০৩ পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন।