শুভ্র সরকারের কবিতা ‘ঘোর ও বিভ্রান্তি বিষয়ক’

প্রকাশিত : মে ১৬, ২০২০

এক.
এইখানে শিশুসকল অনেক গান, খেলার মাঠ
তুড়ির তরঙ্গে ওঠে শিহরন—

একটু  পরেই নেমে আসবে সন্ধ্যা
সে অমিত অন্ধকারে
ঘাসেদের কুর্নিশ জানায়ে দাঁড়ায়ে থাকবে
একটি ঘোড়া, হ্রেষাধ্বনি

তবে কী এমন জোনাকির এবাদতে
জলে ঘুরবে কালো নাচ অবিকল

দেখবো প্রজ্জ্বল দোকানঘর এক
মানুষেরা অহেতুক, শরীরে ভরছে
ছায়া গহ্বর—

দুই.
রেণুগন্ধময়—
পাখিটার মনে ধিনধিন
যে রঙিন সূর্যলোক। যে গুপ্তডানার মেঘ।
উড্ডীন রেখায়, প্রজাপতির আনাগোনায়
ভুলে গেছে ফুলেরা, হয়তো
ঝরে পড়া এক শোকাকুল—

তবুতো শশ্মানে চলছে কারো মৃত্যুর
মহরত, বন্ধ্যা চোখদ্বয়

একা ভূতোম, একা ডালে
তাকিয়ে আছে কোমল, উন্মুখ

কে জানে চিতাঘরে ধীর নেমে এসেছে
কখন—

তিন.
সুবিদিত লেবুর পাতা হাতে নিয়ে
নেড়ে নেড়ে
শুকিয়ে যাচ্ছে একজন, কেউ
লুকিয়ে কাঁদেন
তখন সূর্যাস্তের ক্ষণ, মেয়েটির হাতের
সুরভিত রুমাল হতে
যেন বেরিয়ে আসছে— দুঃখসনাতন

আমাদের সমগ্র সহায়, অপূর্ণ
হৃদয়ের কাছে সজীবতায়, জাগে
কারা তবে গোপনে বাঁধে প্রেম, সাম্পান
                    চিরকাল ভাসে না
কখনো কখনো ডুবেও—

চার.
সেইসব বাসনা পাকানোর ভেতর দিয়া
তোমারে দেখি, নিরত বাতাসে
উড়না দিয়ে ঢাকা তোমার মুখ, সূর্যদিন

দূরে চশমার পাওয়ারে আটকে পড়া
চোখ তোমার, আড় চাহনি আমাকে পেয়েছে
কতদিন কোঁকড়ানো—

তুমি কনিষ্ঠ ততোধিক
                            ছাত্রী বিজ্ঞানের
স্মৃতিশ্রুত আজ আমি কিছুটা সময়
দাঁড়িয়ে থাকবো আয়নায়—

পাঁচ.
জানালা খুলেই দেখছি প্রাত্যহিক সব
তারে ভেজা শাড়িটা জবজব
শাঁই করে নেমে এলো শালিক

এই সকাল যেন হলুদ বউ খুদের গপ্পোভরা
সকাল—

পূবের সূর্যভঙ্গিতে হসন্ত চাঁদের

ওরে রে ওরে রে
শ্যাম্পু করা চুলের মোলায়েমে রেখে হাত
আমি আবারো ঘুমিয়ে পড়লাম

পাশাপাশি রোদের বেহাগ

ছয়.
এখন আর কিছু মনে পড়ে না
এই যেমন কবে পাহাড়ে
ডাকাডাকির সিম্বল শিখেছিলাম

কবে জলে নেমে খুইয়ে ছিলাম
আস্থার সুগন্ধি সাবান

এখন আমি মিশে গেছি দূষণে
                    মনমলিন এক নীরবতায়
কোথাও পাইনি সুরাহা, পৃথিবীতে কে
এমন বাজাচ্ছে অস্থির তানপুরাটা

দূরে, বধির হয়ে জলপানায়
ভেসে গেছে আমাদের গ্রাম