সঞ্চয় ভেঙে বৃদ্ধা পেলেন ৫৩ হাজার টাকার জাল নোট
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : অক্টোবর ১৪, ২০২৫
শেরপুর হেড পোস্ট অফিস থেকে ৩ বছর মেয়াদি একটি ডিপোজিটের অর্থ তুলতে গিয়ে সদর উপজেলার গনই মোমিনাকান্দা গ্রামের নিরক্ষর শাহীনা বেগম (৬০) ১ হাজার টাকার ৫৩টি জাল নোট পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
শাহীনা বেগম বলেন, “শেরপুর পোস্ট অফিসে ৩ বছর মেয়াদি একটি সঞ্চয়ী আমানত হিসাব খুলি। সঞ্চয়ী আমানতের মেয়াদ শেষ হলে টাকা তুলতে ৭ অক্টোবর পোস্ট অফিসে যাই। পোস্টাল অফিসার হিসাব করে আমার হাতে তুলে দেন ২ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।”
টাকা তোলার আগেই শাহীনা পোস্টাল অফিসার মানিক মিয়াকে বলেন, “আমি লেহাপড়া জানি না। আমার সাথে কোনো নুক (লোক) নাই, বাবা আন্নে (আপনি) আমার টাকা গুইনা দিবাইন। টাকা থুইয়া দিমু, যাতে মাইনসে না জানে। জানলে বিপদ হইতে পারে।”
পরে ডিপোজিটের টাকা জমা দেওয়ার জন্য ঢাকা থেকে মেয়ে সুমি আক্তার বাড়িতে আসেন। রোববার সকালে মেয়েকে নিয়ে বেসরকারি উত্তরা ব্যাংকে যান শাহীনা বেগম। ক্যাশিয়ার টাকা গোনার সময় ৫৩টি জাল নোট শনাক্ত করে। পরে ক্যাশিয়ার বিষয়টি ব্যাংক ম্যানেজারকে জানান।
উত্তরা ব্যাংকের ওই শাখার ক্যাশিয়ার মাহবুব রহমান বলেন, “টাকা গোনার সময় ৫৩টি ১ হাজার টাকার নোট জাল পেয়ে ঊর্ধ্বতন অফিসারকে অবহিত করেছি।”
শাহীনা বেগমের মেয়ে সুমি আক্তার বলেন, “অনেক কষ্টে আম্মা টাকাগুলো জমিয়েছেন। সহজসরল মানুষটি পোস্টাল অফিসারের কাছে লেখাপড়া না জানার কথা বললে তিনি এর সুযোগ নিয়ে আম্মাকে জাল টাকা দিয়ে দিয়েছেন। আম্মা টাকা নিয়ে সেভাবেই বাড়িতে রেখে দিয়েছিলেন। পোস্ট অফিসের সিসি ক্যামেরা দেখে তদন্ত করলে সব বেরিয়ে আসবে।”
অভিযুক্ত পোস্টাল অফিসার মানিক মিয়া বলেন, “শাহীনা বেগম ৭ অক্টোবর টাকা উত্তোলন করেন। ৫ দিন পর এসে তিনি দাবি করছেন, টাকা জাল। এটা ঠিক নয়। আমরা গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা দেখে নিই এবং দেওয়ার সময় তাদের টাকা দেখে নিতে বলি। তিনি টাকা বুঝে নিয়েছেন। এর দায়ভার আমরা নিতে পারি না।”
শেরপুর প্রধান ডাকঘরের পোস্টমাস্টার নূর কুতুব আলী বলেন, “জাল টাকার ঘটনাটি শুনেছি। অভিযুক্তের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছি। আসলে কী ঘটেছে, তা জানার চেষ্টা করছি। তদন্ত হচ্ছে। যদি পোস্ট অফিসের কেউ জড়িত থাকে, তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”























