সাঈফ ইবনে রফিকের দিল্লির দাঙ্গাবিরোধী কবিতা

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০

কাজ শেষে ব্রাহ্মণরা মোদিকেও রাখবে না

লঙ্কাকাণ্ডের
হাজার বছর পর
লেজে আগুন নিয়ে
দিল্লি ল্যান্ড করলেন হনুমান।

মিথ আর মিথ্যায়
আরব-ভারত ততোদিনে
মিলেমিশে একাকার।

হাবিয়া দোজখ থেকে
এমন আগুন এনেছেন হনুমানজী—
যা অক্সিজেন ছাড়াই জ্বলছে
মনে, মোড়ে, মসজিদে
মুসলমানফোবিয়ায়।

দখলের পর মোদিরা দেখবেন—
দিল্লিও এক মৃত শহর।
ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব হারানো
কবরের শান্তি। ইতিহাস থাকবে
ঐতিহ্য থাকবে না
পরম্পরা থাকবে না।

আপাতত মোদি থাকবেন, হনুমান পালিয়ে যাবেন!

কাজ শেষে ব্রাহ্মণরা মোদিকেও রাখবে না।


ঠকে যাও

তোমাদের চোখ থাকবে
যাতে তোমরা দেখতে পাও
কিভাবে ঠকানো হচ্ছে!
আর ঠকে ঠকে তৃপ্তির ঢেকুর
তুলবে সামাজিকতায়।

ক্ষেত্রবিশেষে অন্ধত্ব ভালো।
না বুঝেই ঠকে যাও
নিরাপদে।

ইয়া নবি সালাম আলাইকা

যদি মুসলমান হও, বলো
নবি মুহাম্মদের চেয়ে কাকে বেশি ভালোবাসো?
সত্য ভুলিয়ে দিতে ওরা `ভালোবাসা দিবস` এনেছে।
ভ্যালেন্টাইনের ফাঁদ পেতেছে শয়তান।

হে মুমিন, আজ পথ-প্রান্তর কাঁপিয়ে দাও দরুদে-মিলাদে
সব ব্যাভিচার ভেসে যাক—
লিটনের ফ্লাট থেকে শুরু করে মাইকওলা মসজিদ
আকাশ-বাতাসে উচ্চারিত হোউক—
`ইয়া নবি সালাম আলাইকা`

বঙ্গবন্ধুর মতো ভালোবেসে দেখাও

সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন
এসব দেখে কৃষ্ণের কাছে মাফ চাইলেন!

আর আমরা উপনিবেশি বিভাজনের
চক্রে আলাদা হয়ে উঠছি
ইনডিভিজুয়াল।
বিরোধের ফাঁকে
আমরা কিডন্যাপ হয়ে যাচ্ছি
গ্রাম্য রাজনৈতিক আর
বহুজাতিক কোম্পানির ফাঁদে।
যদি পারো— বঙ্গবন্ধুর মতো
ভালোবেসে দেখাও!

কানা হয়ে গেছে দাজ্জালের একমাত্র চোখ

এয়ারগানের ভুল নিশানায় বেলুন ফুটো করে যদি ভাবো
কানা হয়ে গেছে দাজ্জালের একমাত্র চোখ!
তাহলে বনসাই রাজত্বের তুমিই শেষ রাজকন্যা,
বামনের চাঁদ। নাগরিক ফাঁদ,
পাস্তুরিত দুধে বেড়ে ওঠা প্রজন্ম
দুনিয়াকেই ভাবছো দোজখ।

পান্তা ফুরানোর দেশে

বিট লবণের স্যুপ গিলে খাচ্ছে
অভিজাত কীটপতঙ্গরা। আর আমরা,
যারা প্রোফাইল পিকচারে
শাহবাগি বিপ্লবের ফ্যান্টাসিতে ডুবেছি
নৌকাসহ; তারা বাংলাদেশটাকে
ঢাকার বাইরে নিয়ে যেতে পারছি না।
আয়োডিনের জাদুতে যখন
তোমার-আমার মাথা খুলে দিচ্ছে লবণ,
তখন বাংলাদেশটাকে নুনের মতো ভালোবাসছে
কোনো এক অভিজাত রাজকুমারী।
নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দেশে
বিট লবণের মতো ভালোবাসা!