সুদীপ্ত সাধুখাঁর কবিতা ‘অপরিকল্পিত লকডাউন’

প্রকাশিত : মে ১৯, ২০২০

অপরিকল্পিত লকডাউনে
দপ করে জ্বলে ওঠে শ্রমিকের চিতা!
সভ্যতার সৈন্যরা হেঁটে বাড়ি ফেরে
হাঁটতে হাঁটতে তারা লাশ হয়ে যায়!
লাশের দুগাল বেয়ে ঘাম ঝরে পড়ে
লাশের শরীর জোরা মানচিত্র বাঁকা—

দুচারটে পড়ে আছে আধপোড়া রুটি
রুটির মতই পোড়া কালো রাজনীতি!
কোটি কোটি খালিপেট সারারাত কাঁদে
টিভিতে মাইকে বাজে আফিমের বাঁশি
আমরা সে বাঁশি শুনে বুঁদ হয়ে যাই।

আপনার সিন্দুকে অনেক পালক
আপনার প্রাসাদপুরী হাড়ে মাংসে ঠাসা
বঙ্গ উৎকল দ্রাবিড় মারাঠা
গুজরাট সিন্ধু বা পাঞ্জাব
আপনার ভেল্কিতে ওঠে আর নামে
বিহ্বল সেনসেক্স সূচকের মতো!
কী দিয়ে তৈরি আপনি ভারতীয় নেতা!
ছোটো, বড়, মাঝারি, ঝাণ্ডাধারী
থলেধরা, ব্যাগবওয়া, চা আনা
আসলেতো সকলেই মনে মনে পশু!
মনে মনে প্রভু সব সামন্ত রাজা!

ভারতবর্ষ এঁটো হয়ে গেছে!
নেতাদের লালসার লালা
লেগে আছে চোখে মুখে মানচিত্র জুড়ে!
কোন অনন্ত সাবানে আমি ধুতে পারি বল
অথৈ কলঙ্ক ভরা তীব্র বেদনা?
আমি কি উপেক্ষা করি হে আকাশ!
হিমালয় ব্যাপি ওঁ উচ্চারণে
আমি কি চিৎকার করি
বিপন্ন শৃগালের মতো!
নিস্ফল ঝরে যাওয়া
কক্ষহীন উল্কার আলো মেখে
আমি কি ডুকরে উঠি অনাথ বিলাপে!
জ্বালো জ্বালো
লাল ফুলকি জ্বালো হে আবার!
পৃথিবীতে পোঁতা আছে লেনিনের হাড়!
আর কি কখনও তারা বৃক্ষ হবে না?
আমার সন্তান আর পাবে না বৃক্ষ ছায়া?
শরীরি বারুদ জ্বেলে
পুড়িয়ে দেবে না সব ক্রীতদাসপনা?
সভ্যতার আর কোনো পরিমাপ নেই!
কেবল রয়েছে খোলা বাজারের খাতা,
সে খাতায় রক্তের জীবনের দাম নেই শুধু
পলির মতন করে জমেছে বেদনা!

নদীর সঞ্চয় ভেঙ্গে প্লাবন আসুক
ঋষভ প্রগল্ভে ফের ধুয়ে যাক মাটি
এ মাটি রক্ত নয় কর্ষণ চেয়েছে!
সময়ের ঔরস মেখে ক্ষেত ভরে গেলে
আবার নবান্ন হবে এই পোড়া দেশে!