ছবি- রিফাত বিন সালাম রুপম

ছবি- রিফাত বিন সালাম রুপম

এই রাত ভোর হবে

রিফাত বিন সালাম

প্রকাশিত : জানুয়ারি ৩১, ২০১৮

আফগান যুদ্ধকে কেন্দ্র করে নরওয়ের সাংবাদিক আসনে সিয়েরস্টাডের লেখা ‘দ্য বুক সেলার অফ কাবুল’ খাপছাড়াভাবেই পড়েছিলাম। তালেবান পতনের পরের বসন্তে ২০০২ সালে তিনি কাবুলের এক বই বিক্রেতার পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘ চার মাস কাটান। আবিষ্কার করেন আফগানিস্তানের ভেতরে থাকা আরেক আফগানকে। শাহ মুহাম্মদ রাইস নামের সেই বইপাগলের গল্প নিয়েই লেখা ‘দ্য বুক সেলার অফ কাবুল’।

শাহ কাবুলের একজন সাধারণ বই বিক্রেতা। কিন্তু সেখানে একটা বই বিক্রি করা যেন একটা মরণপণ যুদ্ধ। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে আফগান কম্যুনিস্ট ও তালিবান শাসকদের রক্তচক্ষু অগ্রাহ্য করে কাবুলবাসীকে মুক্তচিন্তার বই সরবরাহ করেছেন শাহ। গ্রেফতার, জেল, এমনকি দোকানের সব বই রাস্তায় ফেলে পুড়িয়ে দেয়া, সবই হয়েছে। তবুও তার আশা ছিল বুক ভরা। তার দশ হাজারেরও বেশি দুর্লভ বই লুকানো ছিল কাবুল শহরের অসংখ্য চিলেকোঠায়। সেখান থেকেই পৌঁছে দিত পাঠকের কাছে। শাহের কথায়, প্রথমে কম্যুনিস্টরা আমার বই পুড়িয়েছে, পরে মুজাহিদিনরা লুট করেছে এবং সবশেষে তালিবানরা এসে আবারও আমার সব বই জ্বালিয়ে দিয়েছে।
এভাবেই ঘটনা এগোতে থাকে। কাবুলের গ্রন্থবণিক নামে সন্দেশের বাংলা অনুবাদ আছে একটা। লেখকের পক্ষপাত আছে কিছুটা। তবে সবটাই মিথ্যে না।

বইয়ের একেবারে শেষদিকে কাবুলের একটা চায়ের দোকানের কথা বলেছেন সিয়েরস্টাড, যার দেয়ালে লেখা আছে ‘মিগোজারাদ’ Migozarad। এর মানে, এই রাত ভোর হবে। সিয়েরস্টাড বুঝতে পারেন, কেন এত অত্যাচার সহ্য করেও শাহ বই বিক্রি করেন। একটা ভোরের অপেক্ষায় শাহের এত সংগ্রাম!

একুশে বইমেলা ২০১৮