
পরিণতি
উপন্যাস পর্ব ৬
সুলতানা পারভীনপ্রকাশিত : জুলাই ১৬, ২০১৮
বীথিটা এতক্ষণে কোনোমতে চোখ খুলেছে। চোখমুখে নিস্তেজ ভাব। আমাকে দেখছে কীনা সেটাই বুঝতে পারছি না। দৃষ্টিটা যেন অনেক দূরে কোথাও। বীথি... এই, শুনছ?
হুম।
কি হয়েছে?
কিছু না।
তাহলে এমন করছ কেন?
কোথায়?
বীথি, তুমি কি মনে করছ তুমি চুপ করে থাকলেই আমি এখন এখান থেকে রাগ করে চলে যাব? কী হল, কথা বলো?
ভালো লাগছে না।
ভালো লাগতে হবে না। ওঠো তো দেখি।
উহুঁম।
কি উহুঁম? সারাদিন শুয়ে থেকে থেকে নিজের মাথাটাও খারাপ করছ, সাথে আমাদেরও।
আমি?
চুপ। ওঠো। নেহা, বীথির জন্য কিছু খাবার আনো।
আমি...
একটা কথাও বলবা তো।
কি করবে?
কি করব সেটা তোমার জেনে কাজ নেই। ওঠো।
বীথিটার গায়ে ছিটেফোঁটাও শক্তি অবশিষ্ট নেই। কণ্ঠস্বর ক্ষীণ। চাউনি দুর্বল। মনে হচ্ছে, উঠে বসতেও পারবে না। বসলেও কতক্ষণ বসে থাকতে পারবে, কে জানে! তাই আমি নিজেই তাকে হালকা করে খাটে হেলান দিয়ে বসিয়ে দিলাম। মেয়েটা এ অসুখের মধ্যেও কী ভেবে ছটফট করছে।
নেহা জুস আর হালকা নাস্তা নিয়ে এল। অনেক বলেও কিছু মুখে দেয়াতে পারলাম না। গায়ে শক্তি নেই, অথচ তবুও খাবে না পণ করেছে। প্লিজ বীথি, খাও। আমি খাইয়ে দিচ্ছি। অন্য সময় হলে বীথি ছেলেমানুষি করে পাগল করে তুলত। আর এখন ওর এমন নীরবতাতেই দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার।
আচ্ছা যাও। জুসটুকু খেয়ে নাও।
উহু।
খেতে বলছি না?
খাব না।
কি করবে তবে বলো আমাকে? না খেয়ে মরার প্ল্যান আছে তোমার? বীথি? কিছু বলছি তোমাকে।
হুঁম।
হুঁম-উহু করে লাভ নেই। যেটা বলছি সেটা শোনো।
খাব না।
বীথি?
অনেক দেরি হয়ে গেছে। তুমি যাও এখন।
আমি এখানে থাকলে তোমার সমস্যা হচ্ছে?
আমি ঘুমোবো।
খবরদার যদি আর একবার শুয়েছ তো... জুসটা শেষ না করে শোয়ার কথা ভুলে যাও।
আমার ভালো লাগছে না।
তর্ক করে যে লাভ নেই ভালো করেই জানো সেটা। কি করবে সেটা এখন তোমার ইচ্ছা।
আমি...
খাও না... প্লিজ বীথি...
চলবে