আজ মহান স্বাধীনতা দিবস

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : মার্চ ২৬, ২০২০

আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এরপর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।

স্বাধীনতার ইতিহাস মানে, ৩০ লাখ শহিদের আত্মদান আর ২ লাখ মা-বোনের ত্যাগের ইতিহাস। স্বাধীনতা মানে কোটি বাঙালির আত্মনিবেদন ও সংগ্রামের গৌরবগাথা। ১৭৫৭ সালে পলাশির প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়। এরপর দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ বেয়ে উপমহাদেশের জনগণ পায় পাকিস্তান ও ভারত।

এরপর শুরু হয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক বাঙালিদের নতুন করে শোষণ। এ শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাঙালি জাতি। বাঙালি হয়ে ওঠে সংগ্রাম-আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনকারীদের প্রতীক। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালে বাংলা ভাষার দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পথ বেয়ে ’৫২-এর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের জয়লাভ, ’৫৬-এর সংবিধান প্রণয়ন আন্দোলন, ’৫৮-এর মার্শাল ল বিরোধী আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফার আন্দোলন, ৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ’৬৯-এর রক্তঝরা গণঅভ্যুত্থান, ৬-দফা ভিত্তিক ’৭০-এর ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ ও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন প্রভৃতি ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে বাঙালি জাতি।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করলে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ সর্বস্তরের জনগণ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে অস্থায়ী সরকারের অধীনে দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের এই ধারাবাহিক সংগ্রামে জীবনের চার হাজার ৬৮২ দিন জেলে কাটান বঙ্গবন্ধু। দুবার ফাঁসিকাষ্ঠের মুখোমুখি হন, অসংখ্য মিথ্যা মামলায় অসংখ্যবার কারাবরণ করার পরও স্বাধীনতার প্রশ্নে আপস করেননি তিনি। বাংলা, বাঙালি ও বঙ্গবন্ধু একই বৃন্তে তিনটি চেতনার ফুল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে গরিব-দুখী-মেহনতী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।