আবু তাহের সরফরাজের পাঁচটি শিশুতোষ কবিতা

প্রকাশিত : অক্টোবর ২৬, ২০২০

তেরে কেটে ধা

তেরে কেটে ধা
ধামা নিয়ে যা
মাঠ থেকে ধান এনে
ভাত রেঁধে খা।

তেরে কেটে ধা
ধাঁই ধাঁই
ছুটে যায়
কানা বগির ছা।

তেরে কেটে ধা
ধানাই পানাই
নেই তো কামাই
বাতাস টেনে খা।

তেরে কেটে ধা
ভালবাসি আমাদের
এই ছোট গাঁ।

তেরে কেটে ধা
খাই খাই করে এক
বুড়োধাড়ি খোকা।

এই আর কী

এই আর কী              ঘরে নেই ঘি
খাও তবে খেই           ভবে মজা এই।

ভবে এক পাগলা         ঘরদোর আগলা
নেই তার ভিটেবাড়ি      ছায়া ঘেরা গাছসারি
তাই সে একা একা       হাঁটে আর ঘোরে চাকা।
                  চাকা তো সময়ের চক্র
             ভবঘুরে পা কেন বক্র?
বিক্রিত মালামাল         হাতে নিয়ে বেসামাল
পাগলের ঘুম পেলে       তাকে দেয়া হবে জেলে
ভবে এই জেলখানা       গোলগাল, আধখানা
চাঁদ যদি আকাশে         তবে সে ফ্যাকাশে।
                 ভবে তাই ভাবে ভবা
            লালফুল কেন জবা?
            জবা লাল তাই লাল
            বুঝে ভবা দেয় ফাল।
            ভবে তাই ভবা সে
            চেয়ে থাকে আকাশে।

ইচ্ছে

ইচ্ছে যদি
       মেলত পাখা  
             চোখের পাতায়
                     যেমন আঁকা  
                           উড়তে দ্যাখা চিল
                               আকাশ থেকে
                          চাঁদটা খসে
                   পড়ছে দেখে  
            লিখতে বসে  
দিতাম ছড়ায় মিল।

ঝাঁক বাঁধা ওই
          হাঁসের দলে
                 যেতাম আমি
                        খেলাচ্ছলে
                              কাপলা ফোটা বিল
                                     তেপান্তরের
                                মাঠ পেরিয়ে
                         দেশান্তরের  
                  দেশ বেড়িয়ে  
দিতাম ঘরে খিল।

ইচ্ছে হলো ঘুড়ির মতো

ইচ্ছে হলো ঘুড়ির মতো
আকাশ ছুঁতে চায়
ঘর পালিয়ে মনটা ছোটে
মেঘ-পাহাড়ের গাঁয়।

মেঘের দেশে ছবির মতো
ভাসতে থাকে মন
ইচ্ছে হলো কল্পনা, তার
নেই কোনো বন্ধন।

বইয়ের পড়া ছবির খাতা
কিংবা খেলার গাড়ি
ইচ্ছেগুলো সব ছাড়িয়ে
ভিনগ্রহে দ্যায় পাড়ি।

সূর্য ঘিরে নয়টি গ্রহ
ঘুরছে কীসের টানে?
ইচ্ছে হলো মুহূর্ত-যান
ছুটতে পারে ধ্যানে।

খেলা

ফড়িং ধরে লাভ কী বলো
উড়ুক সে তার মতো
ফিনফিনে তার ছোট্ট ডানা
কোরো না ভাই হত।

ঘাসবনে সে খেলছে, খেলুক
পিছ নিও না তার
খেলতে পারো তুমিও যে
খেলা তো সব্বার।  

ইচ্ছে হলে আঁকতে পারো
ওই ফড়িঙের ছবি
ফড়িং না হোক, হাবিজাবি
আঁকতে পারো সবই।

চারপাশে যা দেখছ সবই
খেলছে আপন খেয়ালে
শেয়াল যেমন চাটতে থাকে
মুরগি এঁকে দেয়ালে।