আবু তাহের সরফরাজের স্বরবর্ণের ছড়া

প্রকাশিত : জুন ৩০, ২০২১


অভিধান কাটে ধান নদী অববাহিকায়
অনুবাদ করে চাঁদ অতীতের লিপিকায়।
অবসর বাঁধে ঘর অলিগলি পেরিয়ে
অবকাশ, কই যাস? অবসাদ ছাড়িয়ে।

অবসান গায় গান অফিসের চেয়ারে
অনুকূল দুই কূল ডাকতেছে দেয়া রে।
অনাচার বলে তার অবিচার সয় না
অবতার যার তার সাথে ভাত খায় না।

অধিকার রাধিকার সাথে তোলে সেলফি
অনুচর তড়বড় খেতে চায় কুলফি।
জনগণ অনশন করে অনাহারে
অবদান ধরে কান তাই বারে বারে।

অজুহাত দুই হাত তুলে রাখে পকেটে
অজগর ঘরঘর উড়ে আসে রকেটে।
অপলক দুই লোক অচেনা অতিথি
অনাবিল খালবিল ছবি আঁকো ঝটিতি।

অনায়াস হাঁসফাঁস করতেছে কেন রে?
অনুভূতি ছুঁয়ে দিতি অনুরাগ যেন রে।
অকপট খটখট রোদেলা এ দুপুরে
অবিকল খলখল হেসে ওঠে খুকু রে।

অভিযোগ ঘোড়ারোগ অকারণ কারণে
অভিমান যেতে চান গরু নিয়ে চারণে।
অসুবিধা চুলে ফিতা বেঁধে যায় ইসকুল
অনুরোধ একটাই, অপচয় বিলকুল।

অবদান করে ভান অভিযান চালিয়ে
অতশত বুঝি না, অয়েল দে জ্বালিয়ে।


আফসোস করো জোস আবছায়া আঁধারে
আজগুবি আনসার ডেকে ওঠে, দাদা রে।
আজেবাজে আলোচনা আলাঝালা আষাঢ়ে
আগাপাছতলা দিয়ে গান গায় চাষা রে।

খোঁচা খেয়ে আলপিন আঘাতেও আগুয়ান
আদালত দেখেশুনে আগেভাগে ভেগে যান।
আদাড়ের পথ ধরে হেঁটে ওই আসে কে?
আলামত বুঝেশুনে আহ্বান করো হে।

আলো হাতে আউলিয়া হেঁটে আসে আজমির
আলিশান মাজারের আশপাশে আজ ভিড়।
কেউ পড়ে আমপাড়া, আলাভোলা আচরণ
আখেরাত দেখে যেন টলোমলো দু’চরণ।

আবদার ডাকতার আনমনা আনাড়ি
আনাচে-কানাচে বসে খায় তেহারি।
আখচাষে আবহাওয়া আয়েশি কামলা
আবডালে দেয় ফাল সরকারি আমলা।

আমলকি খাও আর খাও আয়োডিন
আঁকাবাঁকা পথ ধরে চলে যাও চীন।
আলগোছ ধোরে মোচ আঁকে আলপনা
আঁইকুড়ো আলসের আঙিনায় সোনা।

আড়চোখে আতিপাতি আততায়ী চোখ
আইটেম আইবুড়ো আইঢাই লোক।
আঁকিবুঁকি ছবি আঁকো আর খাও আচার
আগডুম-বাগডুম খেতে চায় আছাড়।

আঁকুপাঁকু আনচান আদমের প্রাণ
আখড়ায় আকুতির ভাষা পেয়ে যান।
আকাশের ওইপারে আদি আবাসন
আউশের ধানখেত আর কাশবন।


ইংরেজ কথা বলে ইংরেজি ভাষায়
ইহুদির ইউরোপ ইংগিতে শাসায়।
ইসলাম ইদানীং কথা বলে ইরানে
ইশারায় ইফতারি খেতে চায় ঘিরানে।

ইট দিয়ে গড়া এই ইমারত ঘরে
ইবলিস ইঁদুরের ইতিহাস পড়ে।
ইলিশের দাম শুনে ইউনানি বাজারে
ইমামের নামাজটা হয়ে গেল কাজা রে।

ঈ ঊ ঋ
ঊষারাঙা ঊরমি ঈগলের ডানা
ঈশপের কাহিনি ঈশিতার জানা।
ঋকবেদ পড়ে ঋষি, ঋজু তার মন
ঈদ এলে উৎসব করো আয়োজন।
ঋণ কোরে ঋণী যায় ঊরু তুলে ঈশানে
ঋতু বুঝে চাষ করে বাংলার কিষাণে।


একা একা একাকি
একতারা বাজে কি?
এলোমেলো এলেবেলে
এইবার যাবে জেলে।
এভাবেই একদিন
একাকার যায় চীন।
এজাহার একশো
এলাচের বাকসো।

একাডেমি সিলেবাস
কেন তুই গিলে খাস?
দশদিকে একাধিক
এলেমের নানা দিক।
এঁটো আর এঁদো মিলে
এঁকেবেঁকে যায় বিলে।
এতিমের এনজিও
এলাকায় কম দিও।


ঐহিক দৈহিক
সাইকেল চলে না
ঐতিহাসিক
তবু কিছু বলে না।

ঐকতান ধরে কান
আর হাসে খিকখিক
ছুটে এলো ছায়াবীথি
ফুটবলে দিল কিক।


ওড়নায় ওড়াউড়ি ওগরানো ওয়াসা
ওয়েটিং রুম থেকে ভেসে এলো কুয়াশা।
ওয়েদার ওয়াটার ওজু করে ওজরে
ওয়ারিশ ওলাওঠা, ওঝা কেন খোঁজো রে?

ওৎ পেতে ওলকপি ওহি পেল ওয়াজে
ওগো ওম, ওষুধের ঝাঁজ কেন পেঁয়াজে?


উপদেশ উপরি পেল কিছু টাকা
উজবুক উপবাস করে বসে ঢাকা।
উদাসিনী উপজাতি উদাহরণ উপমা
উপহাস পাতিহাঁস উঠোনের সুষমা।

উপকথা উশখুশ উলটা পালটা
উলুধ্বনি উপাসনা উৎখাত খালটা।
উইপোকা উঁকি দিয়ে পাতা কাটে উইলের
উঁচু-নিচু উচাটন উপাধি তা উকিলের।

উৎসুক উৎসাহ উথাল পাথাল
উড়কি মুড়কি খায় রে কাঁঠাল।
উৎপাত উৎকট দুই ভাই উঠতি
উটকো উট এলে উপকার করতি।

উপশম নিয়ে দম বলে, আমি উজির
উপকূল খায় ঝুল উপকার হুজির।
উৎকোচ তিন ডোজ খায় কোকাকোলা
উপচার উপকার উপাদান খোলা।

উদীচী খায় ঘি দেহ তার উদোম
উপাধি উপোসী উকুনের গুদোম।