এ দেশের জনগণ অত্যধিক বোকাচোদা

রিফাহ সানজিদা

প্রকাশিত : আগস্ট ০৭, ২০২০

বিশ্বের অনেক দেশেই নিপীড়িত কম্যুনিটি সর্বাধিক জাগরিত। কারণ তাদের নিজেদের রক্ষার প্রয়োজনেই তাদের অনেক ডীপ লেভেলের পলিটিক্স এবং তার গতিবিধি বুঝতে হয়। প্রমাণ আপনি তাদের সাথে কথা বললেই বুঝবেন। কিন্তু এ দেশের জনগণ অত্যধিক বোকাচোদা, তাদের সব ভেঙে দেখালেও বিশ্বাস করবে না। কারণ ইগো। তারা মিডিয়া লিংক চাইবে, সর্বোচ্চ প্রমাণ চাইবে। হ্যাঁ, সেটাও দরকার। ফেক নিউজের যুগে প্রমাণ অবশ্যই চাইবেন, তবে সারাদিন প্রমাণের পিছে ঘুরলে চিলে কান না নিলেও অন্য কেউ আপনার কান নিয়ে যাবে। নিজের সেন্স জাগ্রত করতে আপনাদের এত ইগোতে বাধে কেন হে?

সেন্স বলে কিছু নাই, এইটা তো বিজ্ঞান বলে না। বরং বিজ্ঞান বলে, আল্টিমেটলি সেন্সই সব। মানুষ মারা যাওয়ার পরও কিছুক্ষণ তার ব্রেন জাগ্রত থাকে, ব্রেনের নির্দেশেই আমরা বিপদ আপদ, বাধাগুলো সেন্স করতে পারি। কেন এইখানে মানুষকে বোঝানো যায় না যে, ক্রসফায়ার ব্যাক-ফায়ার করার জন্য তৈরি করা? কারণ ওই একটাই, সবাই কুইক সমাধান চায়, রেপিস্ট-খুনি বিনা বিচারে মেরে ফেললে ঝামেলা শেষ এইটা ভাবা মানুষের সংখ্যা বেশি। কারণ, নূন্যতম সেন্স কাজ করলে তারা বুঝতো, এইরকম হাজার রেপিস্ট-খুনি-সাইকো আছে, সুযোগের অভাবে পারছে না। তাহলে কি করা উচিত?

এই অপরাধীর উপর সাইকোলজিক্যাল এক্সামিনেশন দরকার। তার মনস্তাত্ত্বিক গবেষণা হওয়া দরকার। যাতে আরো হাজারটা সম্ভাব্য অপরাধীর কি সমস্যা, সেইটা বোঝা যায় ও সমাধান করা যায়। কিন্তু আমাদের জনগণ সেইটা বোঝে না বা অইটুক চিন্তা করে না। প্রগতিশীলরাও আজকাল ফাঁসি চাই স্লোগান নিজেদের ব্যাগে ভরে নিয়েছে, নো ওন্ডার! উপরন্তু, জনগণকে বোঝানো হয়েছে, ক্রসফায়ার, গণপিটুনি ইত্যাদি অপরাধ দমনে ব্যবহৃত হবে। উনারাও সেটা নিয়ে উল্লসিত। যার প্রমাণ এদেশে অনেক রয়েছে। নানা গুজবে এখানে নিরীহ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। উফ, কী লেভেলের জাগ্রত জনতা, ভাবলেই গা শিউরে ওঠে!

ওদের বোঝানো হয়েছে, অপুদের মারপিট করে চার্জ ছাড়া গ্রেফতার জায়েজ। কারণ ওর চুল বড় অদ্ভুত আর টিকটক করে ছেলেটা। উনাদের যাই বুঝাবেন উনারা তাই বুঝবেন। আসল স্যাটানিক কারা জানেন? এইসব ঘুমন্ত ব্যক্তিরা, যারা নিজেদের সেন্স শয়তানের আখড়ায় বিক্রি করে দিয়ে বসে আছে টিভি, ফেসবুক, ইউটিউব ও প্রোপাগান্ডা তাদের কি কি গেলায় সেটা বসে বসে গিলবে বলে।

বাঙালিকে স্পিরিচুয়ালিটি নিয়ে বলতে গেলেই নাক সিটকাবে। ওরা ভাবে, এইটা বিলাসিতা। বুদ্ধা বওল নিয়ে ঢং ঢং ঘণ্টা বাজানো আর দামি সুগন্ধী মোম পোড়ানো... কিন্তু এটাও একটা ফেক ধারণা মানুষের মধ্যে ঢোকানো হয়েছে। বিষয়টা পুরো উল্টো, স্পিরিচুয়াল হলে আপনি নিজের ভুল শোধরাবেন, অন্যকে শোধরাতে পারবেন, নিজেকে আরো ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারবেন। সর্বোপরি বৃহৎ একটা পরিবর্তন আপনাকে দিয়ে সম্ভব হবে।  তাতে আপনার মাথা আরো ভালো কাজ করবে, সেন্স করতে পারবেন আসলে চারদিকে যা দেখছেন তা পুরোটা গ্রহণযোগ্য নয়।

স্পিরিচুয়ালিটি মানুষের ভেতরের সেন্স জাগ্রত করে আর ধর্ম বাইরের লেবাস, স্পিরচুয়ালিটি ছাড়া আপনি শুধু লেবাসধারী বক, এইটা বোঝার ক্ষমতা নাই তাদের। অনেকেই এখন ভাববেন, কই বিজ্ঞান আর ধর্ম আর রাষ্ট্র এক করে ফেলছি। এইটাও আরেক সমস্যা। আপনারা ভাবেন সব ভিন্ন ঘটনা। আসলে তা নয়। সব জগা পাকিয়ে বসে আছে মূলে। এইটাই মূল সমস্যা। যেটা জানি না বা বুঝি না সেটা নিয়ে হাসাহাসি করা আমাদের জাতিগত স্বভাব। এই স্বভাব পাল্টালেই আমরা বহুদূর যেতে পারতাম। জানেন না ভালো কথা, তবে জানার চেষ্টা করুন, জানতে পয়সা লাগে না।