এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ আজ

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : অক্টোবর ১৪, ২০২৫

২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতাসহ ৩ দাবিতে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ করবে তারা।

একই সঙ্গে প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ও শিক্ষকদের ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচিসহ সব আন্দোলন চলবে। সোমবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।

তিনি বলেন, “আজ রাতের মধ্যে যদি প্রজ্ঞাপন বা কোনো ঘোষণা না দেওয়া হয়, তাহলে সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ ও চলমান কর্মবিরতি এবং অবস্থান কর্মসূচি চলবে। রোববার শিক্ষকদের ওপর যে হামলা করা হয়েছে তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ঘটনা। আমাদের ৫ সহযোদ্ধাকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। এই সরকার থেকে এটা আশা করিনি।”

শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “যেহেতু আমরা কর্মবিরতি ঘোষণা করেছি, সেহেতু আপনারা সবাই শহিদ মিনারে চলে আসুন। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান প্রধান আপনাদের বাধা দেয় তাহলে সব শিক্ষক মিলে তাকে বাধ্য করবেন।”

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে নাগরিক ঐক্য, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস ও ইনকিলাব মঞ্চ। তারা সরকারকে শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার বিকেলে এসব রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের প্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।

শিক্ষক-কর্মচারীদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটার সমালোচনা করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “শিক্ষক কেন, একটা সাধারণ মানুষকেও রাস্তার মধ্যে কুকুরের মতো পেটাবেন, এই রকম দেশ চাই না। এটা এই জাতির জন্য একটা কলঙ্ক।”

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান তার বক্তব্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলন ঘিরে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো পরিবেশ তৈরি হলে সেই দায় সরকারকে বহন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন। জামায়াত-সমর্থিত শিক্ষক সংগঠন বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল এ বি এম ফজলুল করিম বলেন, “শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন আরো বেগবান হবে।”

ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, “আপনাদের আন্দোলনের প্রতি আমাদের সমর্থন আছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই শিক্ষকেরা আর ঘরে ফিরে যাবেন না।”

খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন বলেন, “শিক্ষকেরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। অথচ পুলিশ লাঠিপেটা করে। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।”

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী অবিলম্বে শিক্ষক-কর্মচারীদের তিন দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, রোববার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ৩ দাবিতে মহাসমাবেশ শুরু হয় শিক্ষকদের। একপর্যায়ে লাঠিপেটা, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান থেকে পানি ছুড়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরে শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান নেন।

কর্মসূচি থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারকে আলটিমেটাম দিয়েছিলেন তারা। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না মেলায় সোমবার থেকে সব এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করছে তারা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে তারা ইতিবাচক। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন তারা।