কথাসাহিত্যিক কাজী ইমদাদুল হকের আজ জন্মদিন
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : নভেম্বর ০৪, ২০২৫
কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ কাজী ইমদাদুল হকের আজ জন্মদিন। ১৮৮২ সালের ৪ নভেম্বর বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর গ্রামে তার জন্ম।
পিতা কাজী আতাউল হক আসামের জরিপ বিভাগে চাকরি করতে করতেন এবং পরবর্তীতে খুলনার ফৌজদারি আদালতের মোক্তার নিযুক্ত হন। ১৯০০ সালে ইমদাদুল হক কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএ সম্পন্ন করেন।
১৯১৪ সালে তিনি বিটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯০৪ সালে কাজী ইমদাদুল হক কলকাতা মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এর দুই বছর পর ১৯০৬ সালে আসামের শিলং বিভাগে শিক্ষাবিভাগের উচ্চমান সহকারী হিসেবে যোগ দেন।
১৯০৭ সালে তিনি ঢাকা মাদ্রাসার শিক্ষক হন। ১৯১১ সালে তিনি ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ভূগোলের অধ্যাপক হন। এরপর ১৯১৪ সালে ঢাকা বিভাগে মুসলিম শিক্ষা সহকারী স্কুল পরিদর্শক হিসেবে যোগ দেন।
১৯১৭ সালে তাকে কলকাতা ট্রেনিং স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ১৯২১ সালে তিনি সদ্য প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বোর্ডের সুপারিন্টেনডেন্ট হন। আমৃত্যু তিনি এই পদে বহাল ছিলেন।
শিক্ষাবিভাগে তার যোগ্যতাপূর্ণ কর্মের স্বীকৃতি হিসেবে ব্রিটিশ সরকার ১৯১৯ সালে তাকে খান সাহেব ও ১৯২৬ সালে খান বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করে। কাজী ইমদাদুল হক সাংবাদিকতার সাথে জড়িত ছিলেন। তার সম্পাদনায় নবনূর পত্রিকা প্রকাশিত হতো।
১৯০৩ থেকে ১৯০৬ সাল পর্যন্ত এই পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে। পত্রিকায় তার সাথে মোহাম্মদ হেদায়াতুল্লাহ, মোহাম্মদ আসাদ আলি ও আরো অনেকে জড়িত ছিলেন। ১৯২০ সালের মে মাসে তার সম্পাদনায় শিক্ষাবিষয়ক মাসিক শিক্ষক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। পরবর্তী তিন বছর এই পত্রিকা প্রকাশিত হয়।
এছাড়া বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশনার সাথে তিনি জড়িত ছিলেন। এই পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্যে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতি কর্তৃক গঠিত ছয় সদস্যের কমিটিতে তিনি সভাপতি ছিলেন। কমিটির বাকি সদস্যরা ছিলেন মুহম্মদ শহীদুল্লাহ (সম্পাদক), মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক (সম্পাদক), মোহাম্মদ রেয়াজউদ্দীন আহমদ, মঈনউদ্দীন হোসায়েন ও কমরেড মুজাফফর আহমদ।
কাজী ইমদাদুল হক কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, শিশুসাহিত্য রচনা করেন। বাংলার মুসলিম সমাজের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে তিনি সাহিত্যকর্মে নিয়োজিত হন। আবদুল্লাহ উপন্যাসের জন্য তিনি বিখ্যাত। ১৯২৬ সালের ২০ মার্চ কলকাতায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
তার রচিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে: আঁখিজল, মোসলেম জগতে বিজ্ঞান চর্চা, ভূগোল শিক্ষা প্রণালী (দু`খণ্ড), নবীকাহিনী, প্রবন্ধমালা (১৯১৮), কামারের কাণ্ড, আবদুল্লাহ, আলেক্সান্দ্রিয়ার প্রাচীন পুস্তকাগার, আবদুর রহমানের কীর্তি, ফ্রান্সে মুসলিম অধিকার, আলহামরা ও পাগল খলিফা।























