কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের আজ মৃত্যুদিন

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : জানুয়ারি ১৩, ২০২১

কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের আজ মৃত্যুদিন। ১৯০৭ সালের ১৩ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ১৮৩৪ সালের ৩১ মে খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটিতে তার জন্ম। পিতা মাণিক্যচন্দ্র মজুমদার।

পিতার মৃত্যুর পর আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তার পক্ষে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।  কীর্তিপাশার জমিদারের অর্থানুকূল্যে তিনি জীবনযাপন করেন। এসময় তিনি ফরাসি ভাষা শেখেন।

১৮৫৪ সালে বরিশালের কীর্তিপাশা বাংলা বিদ্যালয়ের প্রধান পণ্ডিত হিশেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি ঢাকার নর্মাল স্কুলে যোগদান করেন, কিন্তু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায় চাকরি ছেড়ে তিনি ১৮৬০ সালে মডেল স্কুলে যোগ দেন।

বিভিন্ন স্কুলে উনিশ বছর তিনি শিক্ষকতা করেন। সবশেষে যশোর জিলা স্কুলে প্রধান পণ্ডিতের কাজ করে অবসর নেন। শেষজীবনে কৃষ্ণচন্দ্র সেনহাটিতে বসবাস করেন এবং বিভিন্ন সঙ্গীত রচনা করে অবসর জীবন কাটান।

তার প্রথম ও শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ ‘সদ্ভাব শতক’ (ঢাকা, ১৮৬১)। বইটির অধিকাংশ কবিতা নীতিমূলক, যা সুফি ও হাফিজের ফার্সি কবিতার অনুসরণে রচিত।

ছেলেবেলায় তার ছদ্মনাম ছিল রামচন্দ্র দাস, সংক্ষেপে রাম। তাই পরিণত বয়সে তিনি রামের ইতিবৃত্ত (১৮৬৮) নামের একটি আত্মচরিত রচনা করেন। মহাভারতের ‘বাসব-নহুষ-সংবাদ’ অবলম্বনে রচিত তার আরেকটি গ্রন্থ হলো মোহভোগ (১৮৭১)।

কৈবল্যতত্ত্ব (১৮৮৩) নামে তিনি একটি দর্শনবিষয়ক গ্রন্থ লেখেন। নাটক রাবণবধ মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়। তার অপ্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা পনেরো। তার রচনা প্রসাদগুণসম্পন্ন এবং তার কবিতার অনেক পঙ্ক্তি প্রবাদবাক্যস্বরূপ, যেমন: ‘চিরসুখী জন ভ্রমে কি কখন ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে’ ইত্যাদি।

এ পঙ্ক্তিধারী কবিতাটি এক সময় স্কুলপাঠ্য বইয়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৬০ সালে মাসিক মনোরঞ্জিকা ও কবিতাকুসুমাবলী নামক পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৮৬১ সালে ঢাকা প্রকাশ প্রকাশিত হলে তিনি তার সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর মালিকের সঙ্গে মতানৈক্য হলে তিনি পদত্যাগ করেন এবং ১৮৬৫ সালে বিজ্ঞাপনী নামক পত্রিকার সম্পাদক হন।

দেড় বছর পর তিনি আবার ঢাকা প্রকাশ পত্রিকার সম্পাদক পদে প্রত্যাবর্তন করেন। অসুখ স্থতার কারণে সাংবাদিকতা ছেড়ে তিনি কিছুদিন শিক্ষকতা করেন।

১৮৮৬ সালে যশোর থেকে তিনি সংস্কৃত ও বাংলা ভাষায় দ্বৈভাষিকী নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন। কবিতাকুসুমাবলী ছিল পদ্যবহুল মাসিক পত্রিকা। তার সদ্ভাবশতক কাব্যের অধিকাংশ কবিতাই এ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।