খুনের ৭ মামলা থেকে সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের জামিন
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫
চট্টগ্রামের সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ আরও তিনটি খুনের মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। গত সপ্তাহে জামিননামা চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছায়। তবে আরও বেশ কিছু মামলা থাকায় এখনই জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন না তিনি।
মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ সৈয়দ শাহ শরীফ বলেন, “শেষ ৩টি খুনের মামলাসহ মোট ৭টি মামলায় জামিন পেয়েছেন সাজ্জাদ হোসেন। তবে আরও মামলা থাকায় কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না সাজ্জাদ। বর্তমানে রাজশাহী কারাগারে থাকায় তার জামিননামা সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
আদালত সূত্রে জানা গেছে, জামিন হওয়া ৭টি খুনের মামলার মধ্যে ৪টি নগরের চান্দগাঁও থানায় ও ৩টি পাঁচলাইশ থানায় হয়েছিল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে খুনের অভিযোগ ও বিস্ফোরক আইনে এসব মামলা করা হয়।
পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাজ্জাদ হোসেনকে চান্দগাঁও থানার দুটি মামলায় নতুন করে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। তার স্ত্রী শারমিন তামান্নাকেও দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এলাকায় ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের হামলায় ফজলে রাব্বী নিহত হওয়া ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর বাড়ির সামনে সংঘর্ষে করা দুটি মামলায় সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার দেখাতে আদালত আদেশ দিয়েছেন।”
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১০টি হত্যাসহ মোট ১৯ মামলার আসামী সাজ্জাদ। তার স্ত্রীর বিরুদ্ধেও একাধিক হত্যাসহ ৮টি মামলা রয়েছে। সেপ্টেম্বরে ৪টি হত্যা মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তারা জামিন পান। তবে ওই আদেশ চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে চট্টগ্রামের আদালতে পৌঁছায়। সাজ্জাদের স্ত্রী শারিমন তামান্না বর্তমানে ফেনী কারাগারে রয়েছেন।
১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মল থেকে সাজ্জাদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘বাণ্ডিল বাণ্ডিল টাকা ছুড়ে’ সাজ্জাদকে জামিনে মুক্ত করার কথা উল্লেখ করে তামান্নার একটি বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, সাজ্জাদ কারাগারে থাকলেও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর তৎপরতা থেমে নেই। বাহিনীর অর্ধশত সদস্য খুন ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। সাজ্জাদের অনুপস্থিতিতে বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন: মোহাম্মদ রায়হান, মোবারক হোসেন ইমন, বোরহান উদ্দিন কাদের ও নাজিম।
৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর গণসংযোগ চলাকালে গুলি চালানো হয়। এ ঘটনায় বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থলে নিহত হন সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা। তার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা রয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সরোয়ারকে গুলি করা হয়। তবে ভিড়ের মধ্যে গুলি চালানো শ্যুটারকে এখনও শনাক্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, রোববার নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার কুলগাঁও এলাকায় ছাত্রদল নেতা আহমদ রেজার বাসার সামনে ১৫ থেকে ২০টি গুলি করা হয়। তার এক প্রতিবেশীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির প্রতিবাদ করায় এই গুলি ছোড়া হয়।
স্থানীয় লোকজন আরও জানায়, বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী ওরফে বড় সাজ্জাদের সহযোগীরা এ ঘটনায় জড়িত। সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ এই বড় সাজ্জাদেরই অনুসারী।
























