জাহিদ সোহাগ

জাহিদ সোহাগ

জাহিদ সোহাগের ৫ কবিতা

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০

লেখক

মাননীয় খোদার খাসি, মিলিয়ে দেখুন— আপনার চেতনা লাইন বাই লাইন ফলো করছি কিনা; ভেতরে যতই ঠা ঠা ধানকল, বাইরে শান্ত দিঘি, যেন মৃদু বৃষ্টিও তার উপরিতলে গাঁথেনি বর্শা।

খুদকুড়ো মাটিতে পড়লে তো— অবশ্য বলি, চাই না। চাইলেই বা কী?

ওই ওই কার কার যেন কল্লা উড়ে গেছে। আমি তার লেখাপত্তর ছুঁইও না। এই যে কীবোর্ডে লিখি, মনে হয়, বাটনের নিচে ঘাপটি মেরে আছে আদর্শ শয়তান; এরা জানে কারো বড়শির টোপে গাঁথা আছে আমার অণ্ডকোষ; নইলে এখনও লিখি কীভাবে।

থাকো চুপ চুপ, থাকো
লেখো

ফটোগ্রাফ

আমাকেও একটু ব্যথা পেতে হয়, ভেবেছিলাম সেটা পাব না, বা পেলেও ক্লিনিকে সুঁই ফোটানোর সময় উহ্ বলতে না বলতেই ভুলে যাব; মাঝরাতে পানি খেতে উঠে অহেতুক অনুসন্ধানে একটি ছবি পেলাম, পুরনো, ছেঁড়া, আমার সঙ্গে তার যৌবনের না, স্বচ্ছ চোখ, হয়ত চুম্বনহীন ঠোঁট; হয়তো ১০০ মিটার দৌড়ে ফার্স্ট হয়ে উৎফুল্ল পুরস্কার হাতে, বা অন্য কোনো কারণে খুশি; তার পাশে এক বন্ধুও আছে, যে কিনা উঁকিও দিতে পারে তার নোনায়, বা আরো একটি মেয়ে যার প্রেম আমার সঙ্গে ব্যর্থ হয়ে হয়েছে কেবল ব্যয়িত; এভাবে একে একে সে ফ্রেমের ভেতর নারী পুরুষ শিশু এবরশন প্রেমবিয়েডিভোর্স বাড়তে দেখে চিৎকার করে উঠলাম; শব্দ হলো না অবশ্য, গিয়ে স্ত্রীর পাশে শুয়ে রইলাম, বালিশের নিচে সেলফোন, ইন্টারনেট আমাকে তার কাছে ফের নিয়ে যাবে কিনা, এই ভাবছি

কাছাকাছি

চাইলেই যেতে পারি। রিকশায় উঠে বললেই হলো, সুরক্ষা হাসপাতালের পেছনে চলো। দু’বার বামে মোড় নিয়ে সোজা লন্ড্রির দোকানের সামনের বাড়িটা। লোহার গেট। ফোর বাই সি। ডালকুত্তার মতো সিসি ক্যামেরা।
চাইলেই যেতে পারি। নরোম বিছানা। পারফিউম। আর ঠাণ্ডা দুপুর পেয়ে যাব গুণে গুণে চল্লিশ ধাপ আকাশের দিকে উঠে গেলে।  
তবু যাই না। রিকশায় উঠে মাঝপথে রিকশা ফেরাই বাজারের দিকে। একটি নিরপরাধ লাউ কিনে বাসায় ফিরি। খেতে বসে গুচো চিংড়ির গল্প করি।

পিচ ঢালা এই পথটারে

রাস্তায় এসে দাঁড়াই। রাস্তা মানে, রিকশা গাড়ির হাশরের মাঠ; কে কার হাত ছুঁয়ে বলবে, ‘নিরাপদে যাও।’ সবার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ। যেন জালের ফাঁসে আটকে গেছে মাছের কানকা।
আমি ওই খানাখন্দে মনে মনে হাত দেই— একটা পুঁটিও কি নেই? বা টেংরার গোপন নারী?
হয়ত ওই জলে আছে গোপন ইচ্ছা— পিপ্ পিপ্ টুং টাং— এই রে গেলো, উল্টে গেলো নাকি! বাবা রে মাজার হাড্ডি নিল কোন বাজিকর— বৃদ্ধের মতো ঝাকুনি খায় যুবক। এই শহরে বেঁচে থাকে বেশ্যা থেকে রাষ্ট্রপতি; ভিখিরিও নয় ফেলনা কেউ। শুধু রাস্তাটা কারো কারো খুলিতে চাটি মেরে বলে, ‘চোরের মায় রে সেলাম।’
এই রাস্তা সোনার ডিম পারা হাঁস। প্যাঁক প্যাঁক প্যাঁক। পলিটিশিয়ান ও ঠিকাদার, ইঞ্জিনিয়ার আর আমলা খায় ঝালফ্রাই ওমলেট।

হাত দেব

হাত দেব, হাত দেব, ছানাদের ঘুম পাড়িয়ে রেখে বসে আছেন মা। এই হাত তার গ্রীবায় বুনে গেছে পথ; তিন-চার প্রজাতির পাখি, হলাহল।
আজ তাকে সামলাও। আমার পাজড় খুলে যাচ্ছে, খুলে যাচ্ছে, স্ত্রীযন্ত্র আমাকে তবু আরো ছেপে নেবে। গ্যালোনভর্তি কালি।
বরং সন্ধ্যাকে টান দিয়ে আনো, ওর শাড়ি ছিঁড়ে কুটি কুটি, পাছা লাফায় ভলিবল। আমার চোখ বুঝি গলতে শুরু করলো।
ভিখিরিরা রাতের শেষ খাবারের আগে প্লেট বাজাচ্ছে। আমি উনিশ কাপ চা খেয়ে ফেলেছি। সিগারেট।
এই বেঞ্চে শুয়ে পড়লে, আমার চারপাশ জ্বলবে, আলো, আমারই চর্বি পোড়া; হয়তবা চাঁদও।