দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ আগামী সপ্তাহে
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : নভেম্বর ২৮, ২০২৫
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম আগামী সপ্তাহে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন।
নির্বাচনে অংশ নিতে তারা তফসিল ঘোষণার আগেই পদত্যাগ করবেন। এ পদত্যাগকে কেন্দ্র করে উপদেষ্টা পরিষদে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, তারা বিএনপির ছেড়ে দেওয়া আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করতে পারেন। তাদের পদত্যাগের বিষয়টি এরই মধ্যে মৌখিকভাবে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়েছে।
সূত্রমতে, ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এর আগে ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত হবে ভোটার তালিকা। এছাড়া এখন পর্যন্ত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি।
অন্যদিকে নির্বাচনি নানামুখি জোটের হিসাব-নিকাশও এগিয়ে চলছে। জোটবদ্ধ নির্বাচনের জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষ থেকে বুধবার রাতে নাহিদ ইসলামের বাসায় বৈঠক বসে। বৈঠকে জোটের জন্য কয়েকটি বিকল্প অপশন নিয়ে আলোচনা হয়।
সেখানে কয়েকটি দলের সঙ্গে জোট করা নিয়ে আলোচনা হয়। তবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশকে (আপ বাংলাদেশ) জোটভুক্ত করার জন্য প্রস্তাব দেওয়ায় মাঝপথে আলোচনা থেমে যায়।
বৈঠকে উপস্থিত ৪০ নেতার মধ্যে মাত্র ৩ জন আপ বাংলাদেশের সঙ্গে জোট করার পক্ষে মত দেন। বাকিদের কেউ কেউ বিএনপির সঙ্গে জোট করতে চান। কেউ আবার আলাদাভাবে নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে।
তবে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এছাড়া জামায়াতের সঙ্গে জোট করতে একেবারেই রাজি নন এনসিপি নেতারা। এ অবস্থায় অনেকে আশঙ্কা করছে, জোট ইস্যুতে শেষ মুহূর্তে এনসিপি ভাঙনের মুখোমুখি হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
বৃহস্পতিবার পদত্যাগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, “নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। পদত্যাগ করেই নির্বাচন করব। এমন কোনো আইন নেই যে, উপদেষ্টা হলে নির্বাচন করা যাবে না। তবে নীতিগত কারণে উপদেষ্টা হিসাবে নির্বাচন করা ঠিক হবে না। কোন দল থেকে নির্বাচন করব, তা এখনো ঠিক করিনি।”
তিনি আরও বলেন, “ঘোষণা দিয়েছি নির্বাচন করব, তবে কোথা থেকে করব ঘোষণা দেইনি। শুধু দুজন ছাত্র উপদেষ্টা নন, আরও কয়েকজন উপদেষ্টা নির্বাচন করতে পারেন।”
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আগে কুমিল্লার ভোটার ছিলেন। সম্প্রতি তিনি ঢাকা-১০ আসনের ভোটার হয়েছেন। এরপর থেকেই গুঞ্জন রয়েছে, তিনি হয়তো এই আসন থেকেই নির্বাচন করবেন। বিএনপি এই আসনে কোনো প্রার্থী এখনো ঘোষণা করেনি।
এর আগে ৯ নভেম্বর আসিফ মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, “ঢাকা থেকেই নিশ্চিতভাবে নির্বাচন করব। এখন পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে অংশ নেওয়ার ইচ্ছে আছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই পদত্যাগ করব।”
২৮ সেপ্টেম্বর তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, “২ মাস ধরে আমি অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি, আমি কবে পদ ছাড়ব, তা এখনো জানি না।”
২৬ অক্টোবর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির অনুষ্ঠানে মাহফুজ আলম বলেন, “নভেম্বরেই শেষ হয়ে যাবে উপদেষ্টা পরিষদের সভা। এরপর নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেবে। নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর আর সম্ভবত কেবিনেট মিটিং বসে না।”
ওই বক্তব্যের পরপরই বিবৃতি দিয়ে সরকার জানায়, নভেম্বরে কেবিনেট ক্লোজ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। নির্বাচিত সরকারের হাতে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত এই উপদেষ্টা পরিষদ দায়িত্ব পালন করে যাবে। অর্থাৎ নভেম্বরের পরও উপদেষ্টা পরিষদের সভা চলবে, সংস্কার কাজও থেমে থাকবে না।
এর আগে ৪ আগস্ট ফেসবুক পোস্টে মাহফুজ আলম লেখেন, “এক-এগারোর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে।” পরে পোস্টটি সরিয়ে নেন তিনি। সম্প্রতি ফেসবুকে মাহফুজ আলম লেখেন, “মজলুম জালিম হচ্ছে। ফ্যাসিবাদবিরোধীরা ফ্যাসিবাদী হচ্ছে। পুরো পরিস্থিতি হতাশার-ক্ষুব্ধতার।”
























