‘দ্বীন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে’

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৫

দ্বীন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। আজ শুক্রবার রাজধানীর ইব্রাহিমপুরে মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২নং শাখা এলাকায় ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনের কাফরুল থানা দক্ষিণ আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জামায়াত আমির বলেন, “দ্বীন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। ইসলামি আদর্শের ভিত্তিতে দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। মূলত, আর্ত-মানবতার কল্যাণ-মুক্তিই আমাদের রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য। আমরা নেতিবাচক ধারার রাজনীতি পরিবর্তন করে দেশে ইতিবাচক ধারার রাজনীতি ফিরিয়ে আনার বিরামহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা দেশ ও জাতিকে এমন একটি সমাজ উপহার দিতে চাই, যে সমাজে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের অধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে। রাষ্ট্র কারো সাথে কোন ভাবেই বৈষম্যমূলক আচরণ করবে না। দেশ হবে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও অপশাসন মুক্তি। আমরা যে আমাদের প্রতিশ্রুতি পালনে পুরোপুরি সক্ষম তা আমাদের দুজন মন্ত্রী স্বার্থকভাবে প্রমাণ করে গেছেন। তারা ছিলেন দুর্নীতিমুক্ত, সৎ, যোগ্য ও অধিকতর দক্ষ। তাই সে কাঙ্ক্ষিত সমাজ প্রতিষ্ঠায় আগামীতে ইসলামি শক্তিকে ক্ষমতায় পাঠাতে হবে।”

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের জন্য অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু শঙ্কাটাও পুরোপুরি কেটে যায়নি। তাই আমাদেরকে খুবই সন্তর্পণে অগ্রসর হতে হবে। আগামীতে যারা যারা ক্ষমতায় আসবেন বা যেতে চান তাদেরকে বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ ও আল্লাহর কাছে জবাবদিহীর অনুভূতি নিয়ে সব কাজ সম্পাদন করতে হবে। কারণ, সবাইকে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হলেও আল্লাহকে ফাঁকি দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন এক ইনসাফপূর্ণ নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে সবাই সব প্রকার ভয় ও শঙ্কামুক্ত থাকবেন। অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা জনগণকে ভয়ভীতিমুক্ত পরিবেশ উপহার দিতে পারেননি। তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমাদেরকে জেনে-বুঝে আগামীর বাংলাদেশের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জনগণ সত্যের পক্ষে রায় দিলে ৫ বছরের মধ্যেই দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত করাসহ ইতিবাচক পরিবর্তন করা সম্ভব।”

জামায়াত আমির বলেন, “দেশীয় চিকিৎসায় যাতে সাধারণ মানুষ আস্থা রাখেন এবং চিকিৎসকরাও নিজেদের প্রতি আস্থা ফিরে পান সেজন্যই আমি দেশেই চিকিৎসা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। মূলত, সুস্থতা-অসুস্থতা আল্লাহর হাতে। আমারা দেখেছি, বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে অনেকেই কফিনবন্দি হয়ে ফিরছেন। আবার দেশেই চিকিৎসা নিয়ে অনেকেই পূর্ণ সুস্থ্যতা লাভ করছেন। তাই আল্লাহ চাইলে সব জায়গায় তার বান্দাদের সুস্থ রাখতে পারেন।”

তিনি আরও বলেন, “চিকিৎসা বা চিকিৎসক উসিলা মাত্র। মূলত, আল্লাহ যাতে সুস্থ রাখতে চান, চিকিৎসকের উসিলায় তাকে সুস্থ রাখেন। তাই দেশীয় চিকিৎসার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরাতে আমি দেশেই চিকিৎসা গ্রহণ করেছি। এতে দেশীয় চিকিৎসকরাও উজ্জীবিত হবেন। কারণ, সাধারণ মানুষের পক্ষে বিদেশে ব্যয়বহুল চিকিৎসা গ্রহণ সম্ভব নয়।”

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “চিকিৎসা একটি মহান ও সেবামূলক পেশা। তাই চিকিৎসকদের সেবার মানসিকতা নিয়ে সব শ্রেণির মানুষের চিকিৎসা করতে হবে। দেশের চিকিৎসার মান উন্নয়নের জন্য চিকিৎসা বিষয়ক শিক্ষাকে বৈশ্বিক মানসম্পন্নকরণ এবং দেশীয় হাসপাতালগুলো সর্বাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামে সমৃদ্ধ করা জরুরি। একই সঙ্গে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোকে রোগীবান্ধব সেবা দেওয়াও দরকার। দেশিয় চিকিৎসায় সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরাতে চিকিৎসা সহজলভ্য ও উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই দেশীয় চিকিৎসার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরে আসবে।”

থানা আমির অধ্যাপক আনোয়ারুল করিমের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মো. শহিদুল্লাহ, শাহ আলম তুহিন।