পাবনায় গণপূর্ত দপ্তরে অস্ত্রের মহড়া

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : জুন ১৩, ২০২১

৬ জুন পাবনায় গণপূর্ত বিভাগে অস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগের একদল ঠিকাদার নেতার মহড়া দেয়। সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা একটি ভিডিও সম্প্রতি প্রকাশ হলে এটা আলোচনায় আসে। ভিডিওতে দেখা যায়, ৬ জুন বেলা ১২টার দিকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ফারুক হোসেন জামার হাতা গুটিয়ে সদলবলে পূর্ত ভবনে ঢুকছেন।

তার পেছনে শটগান হাতে পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ আর খান মামুন এবং জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালু। অস্ত্র নিয়েই তাদের কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষে ঢুকতে দেখা গেছে। ওই সময় তাদের সঙ্গীরা বাইরে অপেক্ষায় ছিল। ১২টা ১২ মিনিটে তারা ফিরে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গণপূর্তকর্মী বলেন, এসব মহড়ায় আমাদের আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। প্রভাব বলয় তৈরি করে বিভিন্ন কাজের দরপত্র নিজেদের আয়ত্তে নিতে চেষ্টা করেন ক্ষমতাসীন দলের ঠিকাদার নেতারা। তাদের দাপটে অন্য ঠিকাদাররা দরপ্রস্তাব জমা দিতে পারছেন না।

পুলিশে কোনো অভিযোগ না দেয়ার বিষয়ে কর্মকর্তারা জানান, আওয়ামী লীগ নেতারা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এলেও কোনো হুমকি দেননি।

পাবনা গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ঠিকাদাররা আমার কক্ষে এসেছিলেন। আমার টেবিলে অস্ত্র রেখে নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের কাছে এসেছেন বলে জানান তারা। খারাপ আচরণ বা গালাগালি করেননি।

বিল কিংবা দরপত্রকে কেন্দ্র করে এই মহড়া কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাবনায় নতুন যোগ দিয়েছি। এসব বিষয়ে আমার জানা নেই।

নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম বলেন, ঘটনার সময় আমি অফিসের বাইরে ছিলাম। তবে সিসিটিভি ফুটেজে অস্ত্র হাতে অনেকে এসেছে দেখেছি। তারা আমাকে সরাসরি বা ফোনে কোনো হুমকি দেয়নি। কথাও হয়নি। তাই আমরা লিখিত অভিযোগ করিনি।

সদলবলে গণপূর্ত বিভাগে যাওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেন বলেন, আমি গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদার নই। বিল সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে মামুন ও লালু আমাকে সেখানে নিয়েছিল। তবে এভাবে যাওয়া আমাদের উচিত হয়নি।

মামুন বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে বৈধ অস্ত্র নিয়ে আমি ব্যবসায়িক কাজে ইটভাটায় যাচ্ছিলাম। পথে নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিমের সঙ্গে কথা বলতে গণপূর্ত বিভাগে যাই। কিন্তু তিনি না থাকায় আমরা ফিরে আসি। তাকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়নি। প্রতিপক্ষ ঠিকাদাররা বিষয়টিকে অন্যদিকে নেয়ার চেষ্টা করছে।

যুবলীগ নেতা শেখ লালু বলেন, ভুলবশত আমরা অস্ত্র নিয়ে অফিসে ঢুকে পড়েছিলাম।

পাবনার পুলিশ সুপার মুহিবুল হক খান বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। অস্ত্র আইনের শর্ত ভঙ্গ হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পাবনার ডিসি কবীর মাহমুদ বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি তদন্ত করছে। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।