অলঙ্করণ: পাপিয়া জেরীন

অলঙ্করণ: পাপিয়া জেরীন

বাশার মাহফুজের ৪ কবিতা

প্রকাশিত : আগস্ট ২৪, ২০১৯

পরজীবী

আমার সমস্ত পৃথিবীটাই প্রয়োজন।
অযথা কেন ভাগ চাও
অসুখের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা একটা রাতকে আমার পৃথিবী মনে হয়।
শোকবার্তা নিয়ে আলো ফোটা একটা সকালকে আমার বন্ধু মনে হয়!

সুখগুলো জড়ো করলে হাতের মুঠোই জোছনা ফোটে
আর হাত ধরে তুমি বলে ওঠো, আমার চাঁদ প্রয়োজন নেই!

আমার সমস্ত পৃথিবীটাই প্রয়োজন।
অর্ধেক দিলে আমার সব কিছুই অর্ধেক হয়ে যায়
এভাবে ভাগ করে ফেলো ফুলের সুভাস
ভাগ করো সৌন্দর্য
আর অর্ধেক চোখ নিয়ে আমাকেও ভাগ করে ফেলো বহুবার!

মাটি কাটতে কাটতে নদী প্রবাহিত
নদী চলতে চলতে সমুদ্র।
মাটি তোমার নদী তোমার সমুদ্র তোমার
তবে বন্ধু শব্দের অর্থ কি!

বদনাম

বদনাম করতে করতে পুরো শহরটা তোমার হয়ে গেল
এভাবে মাছের কাছে জলের বদনাম
জলের কাছে নদীর বদনাম
মাথার কাছে ভুলের বদনাম
ভুলের কাছে শুদ্ধর বদনাম!

নিজের বদনাম করতে-করতে সারারাত মৃত্যু তোমাকে ঘুমাতে দেয়নি!

দেয়াল টপকালে নদী

চোখ দুটোই নিতে চেয়েছো— নিষেধ করেছি বারবার
এমন সুবুজ পৃথিবী দেখার জন্য মনটা হন্যে হয়ে আছে
এমন লকলকে মমতা দেখার জন্য সমস্ত দুপুর বৃষ্টিতে ভিজছে।
অধ্যাপিকা, অসংখ্যবার চোখ দুটো ফেরত চেয়েছি
অথচ চোখ দুটো খুলে নিয়ে বসিয়ে রেখেছো পাথরের দেয়ালে
দেয়াল টপকালে নদী
সেখানে জল চলে নিরবধি!

শিকার

বন চলে এসেছে তোমার ভেতর
তুমি রোজ তাকে নিয়ে অফিসে যাও
ক্লান্ত হলে তাকে নিয়ে নিরিবিলি লেগের ধারে বসো
সে তোমার ভেতর বাঘ ছেড়ে দেয়
আর তুমি একটা বাঘ হয়ে যাও
সে তোমার ভেতর একটা হরিণ ছেড়ে দেয় আর তুমি হরিণ হয়ে যাও
অতঃপর তোমার সামনের মানুষগুলোকে তোমার খাদ্য মনে হয়
অতঃপর তোমার হরিণ বুকে অন্যরা খাবলে দেয়
খুব সহজেই তুমি হজম হতে থাকো
খুব সহজেই তুমি নেই হয়ে যাও!