মেহেদি আশরাফের ৫ কবিতা

প্রকাশিত : জানুয়ারি ২৭, ২০২০

স্থানচ্যুত নক্ষত্রের শরীর

অদৃশ্য পানকৌড়ি কাঁদে মহাকাল জোছনায়
জলে ভাসা ধানগাছের মতো—
বেড়ে ওঠে স্থানচ্যুত নক্ষত্রের বিবসন বিরহ।
সমান্তরালে মানুষ বলছে—
ধাবমান সভ্যতার অভিমুখী নগরায়ন,
নৈঃশব্দ্যের দোলাচলে ধাতব মুদ্রার পেটে
জমাট ধূলির মতো
বৃত্তবন্দি হয়ে আছে প্রাম্ভের নৈসর্গিক জীবন।

আরোহী সময়

অসময়ে স্বপ্ন দেখে মানুষ, পদ্মপাতায় জলময়ূরের মতো
নীল আঁধারের জোনাক বাতি, বৃষ্টিস্নাত কলমিফুল হয়ে

এইতো সেদিন বছর পাঁচেক আগে
আমি রোজ স্বপ্ন দেখতাম—
যশের দুয়ারে উড়ছে খই আমন ধানের বর্ণ নিয়ে,
এক একটি রাত আমার জন্য ব্যাকুল
দোহার দোতারে জমিয়ে দিয়েছি উন্মাদনার আসর।

আজও আমি স্বপ্ন দেখি তৃষিত পক্ষী— ডালিম ফুলের মতো
চারিদিকে কেউ নেই একাকী রয়েছি মাটির গর্ভে
সুখের তাজিতে আরোহী হয়ে পার হয়ে যাই লক্ষ্য বস্তুর পথ।

বিমুখী প্রাণের অন্তরালে

অস্নাত খড়ের দুপুরে—
আচমকা বৈকালিক বিরহ নামে
বাতাসে জমছে শীতার্ত নদীর সামিয়ানা,
ঢেউ খেলে বিহঙ্গের প্রকৃত স্বরূপ
বিমুখী প্রাণের অন্তরালে
ঘুমন্ত শিরিশের বনে তবু জমা হয়
মানুষের ছাইপাতা কোলাহল
কে থাকে নিরবিচ্ছিন্ন মানুষের জাগতিক কলহে
ঝুলন্ত ফুলপাতা তবুও
কী এক অচেনা ভাষায় কথা বলে।

ক্রাইসিস

চোখের বিভ্রমে কলহ জোড়া—
নমনীয় পাহাড়ের বেশে শরীর দাঁড়িয়ে আছে
শৈল্পিক জোছনার স্তরের মতো
মেকিদের নিদারুণ মিছিলে— আড়ালেই থাকে
জাগতিক স্বল্পতার ক্রাইসিস।

সোনালি সাইরেন

বর্ণহীন সূতার মতো—
মাটির ঘরে বন্দি হয়ে আছে দুঃখ
পাথর প্রকারে লোভ নেই—
নির্মোহ অসুখ ধরেছে ডালচিনি দুপুরে।
শোকার্ত বৃষ্টির শব্দ আওড়ায় সাইরেনের মতো
চৌচালা ঘরে থাকে অসংখ্য বিবর্ণ প্রাণ,
সাদা ডানার সোনালি ফড়িং যেমন—
খণ্ডিতক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু নয়।