মোহাম্মদ এয়াকুব আলী চৌধুরীর আজ মৃত্যুদিন
ছাড়পত্র ডেস্কপ্রকাশিত : ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫
সাহিত্যিক মোহাম্মদ এয়াকুব আলী চৌধুরীর আজ মৃত্যুদিন। ১৯৪০ সালের ১৫ ডিসেম্বর ফরিদপুরে তিনি মারা যান। রাজবাড়ী জেলার পাংশার মাগুরাডাঙ্গা গ্রামে তিনি ১৮৮৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
পিতা পুলিশ অফিসার এনায়েতুল্লাহ চৌধুরী। পাংশা হাইস্কুল থেকে এমই এবং রাজবাড়ী সূর্যকুমার ইনস্টিটিউশন থেকে এয়াকুব এন্ট্রান্স পাস করেন। কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি ভর্তি হলেও বিএ ক্লাসে পড়ার সময় দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে পড়ায় পড়ালেখা ছাড়তে বাধ্য হন।
প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময় স্বীয় অগ্রজ মাসিক সাহিত্য পত্রিকা কোহিনূর (১৩০৫-১৩০৮, ১৩১১-১৩১৩, ১৩১৮-১৩১৯ ও ১৩২২) সম্পাদক রওশন আলী চৌধুরী রোগাক্রান্ত হয়ে অক্ষম হয়ে পড়লে তিনি ওই পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯১৪-১৫ সালে চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই থানার জোরওয়ারগঞ্জ হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন। এরপর রাজবাড়ী সূর্যকুমার ইনস্টিটিউশনে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯২০-২১ সালে পাংশা হাইস্কুলে শিক্ষকতা করার সময় অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনে যোগদান করেন।
এর ফলে ব্রিটিশ সরকারের হাতে তিনি কারাদণ্ড ভোগ করেন। কারামুক্তির পর শিক্ষকতায় ইস্তফা দিয়ে কলকাতায় যান এবং মেজো ভাই আওলাদ আলী চৌধুরীর সাথে সাংবাদিকতায় যোগ দেন। তিনি বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির (৪ সেপ্টেম্বর, ১৯১১) প্রতিষ্ঠাতাদের একজন।
এ সমিতির সম্পাদক হিসেবেও কয়েক বছর দায়িত্ব পালন করেন। সমিতির মাসিক পত্র সাহিত্যিকের (১৯২৬) যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। এয়াকুব আলী চৌধুরী ও কবি গোলাম মোস্তফার যুগ্ম সম্পাদনায় এটি এক বছর ধরে প্রকাশিত হয়।
রওশন আলী চৌধুরী ও আওলাদ আলী চৌধুরীর অকাল মৃত্যুতে তাদের পরিবারের দায়িত্ব নেন এয়াকুব আলী। শোক-দুঃখ-দারিদ্র্যে নিপতিত হয়ে তিনি ৪৭-৪৮ বছর বয়সে ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হন। শেষ জীবনের চার-পাঁচ বছর জীবনমৃত অবস্থায় গ্রামের বাড়িতে বাস করেন।
মৃত্যুর দুই বছর আগে বঙ্গীয় সরকার মাসিক ২৫ টাকা হিসেবে সাহিত্যিক বৃত্তি মঞ্জুর করেন তার জন্য। এয়াকুব আলী চৌধুরী শিক্ষা সংস্কারের মাধ্যমে পশ্চাৎপদ মুসলমানদের অগ্রগামী করেন।
ইসলামি দর্শন ও সংস্কৃতি তার রচনার মূল উপজীব্য। বক্তব্যের বলিষ্ঠতায়, ভাষার মাধুর্যে ও ভাবের গাম্ভীর্যে তার রচনাবলি বিশেষ মর্যাদার দাবিদার। হিন্দু-মুসলমানের সমপ্রীতিতে তিনি ছিলেন বিশ্বাসী। বিশ শতকের প্রথম দিকে বাঙালি মুসলমানের মাতৃভাষা বাংলা না উর্দু- এ বিতর্কে তিনি বাংলা ভাষার পক্ষাবলম্বন করেন। সুবক্তা হিসেবেও খ্যাত।
তার প্রকাশিত গ্রন্থ হচ্ছে, ধর্মের কাহিনী (১৯১৪), নূরনবী (১৯১৮), শান্তিধারা (১৯১৯) ও মানব মুকুট (১৯২২)। এছাড়া বাংলা একাডেমি প্রকাশ করেছে এয়াকুব আলী চৌধুরী অপ্রকাশিত রচনা নামের একটি গ্রন্থ। এর সম্পাদক আমীনুর রহমান।
























