লকডাউন সময়ে উদ্ভট স্বপ্ন দেখছে কেন মানুষ

অপূর্ব চৌধুরী

প্রকাশিত : জুন ২৮, ২০২০

করোনা ভাইরাস বছরের অর্ধেক সময় ঘরে আটকে রেখেছে। কাজের কারণে ঘুমের কমতি হতো বলে লোকে যে অভিযোগ করতো, কয়েক মাসে অতিরিক্ত ঘুমানোর সুযোগ পেয়ে অনেকে বলছে, ঠিকমতো ঘুমই তো হচ্ছে না। ঘুমের রাজ্যেও হানা দিয়েছে ভাইরাসের ডানা। কিন্তু সমস্যা এখানেই শেষ হলে চলতো। ইদানীং রোগী ও কিছু শুভাকাঙ্খী বললেন, করোনা পরিস্থিতির এই দুঃসময়ে তারা আগের চেয়ে অনেক বেশি উল্টোপাল্টা স্বপ্ন দেখছেন। খুব কাছের মানুষ ছাড়া স্বপ্ন নিয়ে লোকে কম কথা বলে। সামাজিক বিড়ম্বনা এবং অস্বস্তি এর কারণ।

প্রশ্ন দাঁড়ালো, এমন বেশি বেশি উল্টাপাল্টা স্বপ্ন দেখার কারণ কি? এ নিয়েই আজকের আলোচনা, করোনা দুঃসময়ে মানুষ অনেক বেশি Vivid Dream কেন দেখছে। Vivid মানে bright বা graphic! গুগলে বাংলা করে দেখলাম, প্রাণবন্ত। কিন্তু কেন জানি বাংলা অর্থটি অপূর্ণ মনে হলো। মনে হয়, জলজ্যান্ত শব্দটি সঠিক অর্থ হতে পারে। একেবারে স্বপ্নটি যেন জীবন্ত। কেবল রোগী বা শুভাকাঙ্খীরাই এই দলে একা নয়। Kings Collage London ইংল্যান্ডের একটি ভালো ইউনিভার্সিটি। Ipsos Mori ইংল্যান্ডের বিখ্যাত একটি ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট রিসার্চ এজেন্সি। Ipsos এবং Mori নামের দুটো প্রতিষ্ঠান ২০০৫ সালে এক হয়ে বৃহৎ পোলিং রিসার্চ প্রতিষ্ঠানটি হয়েছে। সম্প্রতি কিংস কলেজ এবং Ipsos Mori যৌথভাবে ২০৫৪ জন ব্রিটিশ অধিবাসীদের উপর জরিপ চালিয়েছে।

জরিপ গবেষণায় দেখতে পেল, প্রতি পাঁচজনের দুজন আগের চেয়ে স্বপ্ন দেখছে বেশি। আবার স্বপ্নগুলো যেন স্পষ্ট ছবির মতো। সাথে যারা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে একটু ভীত, তারা অন্যদের চেয়ে এমন স্বপ্ন দেখছে দ্বিগুণ।  ফ্রান্সের Lyon Neuroscience Research Center এই নিয়ে আরেকটি জরিপে দেখেছে যে, অধিবাসীদের মধ্যে নেগেটিভ স্বপ্ন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ১৫% বেড়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী এরকম আরো কিছু গবেষণার কথা বলা যায়। সেগুলো না বলে দুটো বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। স্বপ্ন কি এবং কেন এই মুহূর্তে বিশেষ ধরনের স্বপ্ন বারবার মানুষ দেখছে।

স্বপ্ন কি ভাবতে গিয়ে মনে হলো, স্বপ্ন নিয়ে যত পড়ি তত কঠিন হয়ে যায় তাকে নিয়ে বলাবলি। যেদিন থেকে মানুষ নিজেকে বুঝতে শেখে যে সে মানুষ, সেদিন থেকে সে স্বপ্ন দেখে এবং বুঝতে পারে এটি বাস্তব নয়, অন্যকিছু। প্রাণীরাও কি স্বপ্ন দেখে? জানা নেই। প্রাচীনকালে ভাবা হতো, স্বপ্ন মানে ঈশ্বরের সাথে মানুষের দেখা হওয়ার একটি জায়গা। এজন্য অনেক ধর্মে দেখা যায় স্বপ্নে অদৃষ্ট হন দৈববাণী কিংবা দেবতা। স্বপ্ন হলো মনের খেলা। স্বপ্ন হলো বাস্তবে ঘটে যাওয়া ক্রিয়ার কারণে মনোজগতে একটি প্রতিক্রিয়ামূলক খেলা। যেভাবেই বলি না কেন, কথা যেন অপূর্ণ থেকে যায়।

একশো বছর স্বপ্ন নিয়ে যত ভাবনা তাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
1. Activasion Synthesis
2. Threat Stimulation
3. Unconsious Conflict

সবচে পুরনো এবং পরিচিতি সিগমন্ড ফ্রয়েডের Unconsious conflict theory। ফ্রয়েড স্বপ্নের ব্যাখ্যা করেছেন, এটি দেশি লোকজনের একটি ভুল ধারণা। ফ্রয়েডের সাইকোএনালাইসিসের অনেকগুলো ইন্টারপ্রিটেশন এবং ইস্যু আছে। তার একটি মাত্র হলো স্বপ্ন। তার মতে, স্বপ্ন হলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ইচ্ছা দমনের ছবি। আর এই ইচ্ছা, কামনা, বাসনা, চাহিদা, সব তৈরি হয় ছোটবেলায়। কিন্তু বড় হয়ে সেগুলো ভুলে যায়। দমনপীড়নে ক্ষতের উৎস ভুলে গেলেও সেগুলোই মনের অগোচরে বাকি জীবনের মানদণ্ড হয়ে প্রতিমুহূর্তে বাগড়া দেয়। তাতে বাহ্যিকভাবে লোকে একধরনের প্রকাশ নিলেও মনের ভিতর আসল প্রকাশ করার একটি ছায়া ছাপ হয়ে বসে থাকে। যাকে তিনি বলেছেন Unconsious Mind।

ঘুমের সময় মনের সেই স্তরের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াগুলো ছবি হয়ে রিলে হতে থাকে মুভির মতো স্বপ্নের মধ্যে দিয়ে। স্বপ্ন হলো মনের সিনেমা হল। এ নিয়ে নানা জনের নানা অভিমত আছে। সেগুলো আজকের আলোচনার বিষয় নয়। তাই এসব সংক্ষেপেই বলছি। ফ্রয়েডের সাথে যারা একমত হলেন না, তাদের কিছু মতামত বা থিয়োরিগুলোকে সহজ করে বলা যায় Threat Stimulation theory। অনেক সময় দেখা যায় যে, খুব দ্রুত কোনো একটি পরিস্থিতি মানিয়ে নিয়েছে। হঠাৎ একটু হচকিত হলেও মুহূর্তে নিজেদের সামলে নিচ্ছে। কিন্তু কাজটি কি করে বোধের অজান্তে হয়, না বুঝতে পারে লোকে, না বুঝতে পারে মন। স্বপ্ন এটি তৈরি করে মস্তিষ্কে। স্বপ্নের বিভিন্ন স্টিমুলেশন মস্তিষ্কের বিভিন্ন স্তরকে এই অপ্রস্তুত অবস্থা গ্রহণীয় করতে প্রস্তুত রাখে। এমনকি ছোটবেলায় মস্তিষ্কের বিভিন্ন পরিবর্তনগুলো হতে প্রতিমুহূর্তে স্বপ্ন সাহায্য করে মস্তিষ্ককেই।

যেখানে গাদা গাদা বই লেখা হয়ছে এসব বিষয়ে, ছোট করে বোঝানো মুশকিল বিষয়গুলো নিয়ে। এবার আসি স্বপ্ন নিয়ে একুশ শতকের চিন্তা। এই শতকের Activation থিয়োরি অনুযায়ী সহজভাবে স্বপ্ন হলো, অর্থহীন কিছু ব্যাপার স্যাপার। স্বপ্ন হলো ব্রেইনের ইলেকট্রিক্যাল ইমপালস। ঘুমের সময় মস্তিষ্ক যখন সারা দিনের কাজগুলোকে সুবিন্যাস্ত করে, মস্তিষ্কে তখন কিছু এলোমেলো ইলেক্ট্রিক্যাল ইম্পালস তৈরি করে, ইলেকট্রিক্যাল ইম্পালসগুলো একচেঞ্জের সময় কিছু দৃশ্য-ছবি-কথা-ঘটনা এলোমেলো চলে আসে। স্বপ্ন দেখার সময় এই দৃশ্যগুলোর কোনও অর্থ থাকে না। স্বপ্ন দেখার সময় দৃশ্যগুলো কোনো অর্থ দেয় না। যদিও নিজেদের মনে হয় স্বপ্নগুলো দেখতে বা বুঝতে পারছে সে। আসলে মস্তিষ্ক স্বপ্ন দেখার সময় সেটা বুঝতে পারে না। এই থিওরী অনুযায়ী স্বপ্নের দৃশ্যগুলো মস্তিষ্ক সমন্বয় করে ঘুম থেকে ওঠার পরে। স্বপ্নের সময় ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন দৃশ্য, কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার পর দৃশ্যগুলো সমন্বিত হয়ে একটি ঘটনা হয়ে ওঠে।

যদি কখনো শুটিং দেখে থাকেন, সিনেমার বিচ্ছিন্ন একটি শুটিং একটি হাস্যকর ব্যাপার। এরকম অনেকগুলো শুটিং হবার পর সেগুলোকে একটি ক্রমোন্নয়তা দিয়ে যখন একটা কিছু তৈরি করা হয়, সেটি হয়ে দাঁড়ায় একটি সিনেমা। বিচ্ছিন্ন শুটিং হয়ে ওঠে অর্থবোধক কিছু একটা। স্বপ্ন ঠিক এমনটা। কখন স্বপ্ন দেখে তাহলে! ঘুমের দুটি স্টেজ। শুরুতে ঘুম ঘুম ভাব, তারপর পুরো ঘুমের ভাব। বিজ্ঞানের ভাষায় ঘুম ঘুম ভাবকে বলে non REM এবং পুরো ঘুমকে বলে REM। REM মানে হলো Rapid Eye Movement। জেগে থাকলে চোখের বল এদিক-ওদিক ঘোরে। ঘুম ঘুম ভাবের সময় চোখ বন্ধ করলে চোখের বল ঘোরা থেমে যায়। ঘুম ঘুম ভাবের সময় এই চোখ না ঘোরাকে বলে non REM। এই সময় ঘুম হয় না, ঘুমের চেষ্টা করা হয়। ঠিক তখন চোখের বল ঘুরতে থাকে। এজন্যে এই স্টেজকে বলে REM। আর এই স্টেজটাই আসল ঘুম। এই সময়ে শরীর ঘোরে না, কিন্তু চোখ ঘোরে। কারণ হলো, এই সময়ে মস্তিষ্কের ভেতর যা ঘটতে থাকে, চোখ যেন তাকে দেখতে থাকে। আর এই মস্তিষ্কের কাণ্ডটি হলো স্বপ্ন। জাগ্রত অবস্থায় চোখ যেমন ঘোরে, ঘুমন্ত অবস্থায় তেমনি স্বপ্ন দেখতে চোখ ঘোরে।

দেখা গেছে, ঘুমের এই দুই স্টেজের মধ্যে পঁচাত্তর ভাগ হলো ঘুম ঘুম ভাবের non REM। বাকি পুরো ঘুমের REM হলো মাত্র ২৫ ভাগ। পুরো দুই স্টেজের সাইকেলটি একবার শেষ হতে দুই ঘণ্টা সময় লাগে। আট ঘণ্টা ঘুমোলে চার বার এমন সাইকেল ঘটে। তার মানে, আট ঘণ্টা ঘুমের মাত্র দুই ঘণ্টা প্রকৃত ঘুমে কাটে। করোনা ভাইরাসের কারণে পুরো পৃথিবীটাই যেন একটি জেলখানা এখন। ঘরের চৌহদ্দিটাই পৃথিবী। করোনা পরিস্থিতির আগে দৈনিক কিছু প্ল্যান তাকে চালাতো, এখন তাকে নিজেকে চালাতে হয় দৈনিক কি করবে। ঘুমোতে গেলে ঘুম আসে না। আবার ঘুম থেকে উঠলে মনে হয় কাল রাতে কি কি বিদঘুটে স্বপ্ন যেন দেখেছে। করোনাকালীন এমন দুটি জিনিসের মুখোমুখি হচ্ছে অনেকে ।

এক. আগের চেয়ে বেশি বিদঘুটে স্বপ্ন দেখছে
দুই. স্বপ্নগুলো আগের চেয়ে অধিকতর স্পষ্ট

অন্য সময়ে কমবেশি প্রতিরাতেই হয়তো স্বপ্ন দেখে। অন্য সময়ে সেগুলোর রূপ ঠিক তার বিপরীত। স্বপ্নগুলো অদ্ভুত না হলেও এবড়োথেবড়ো কিংবা বিচ্ছিন্নভাবে দিনের চিন্তারই একটি অংশ। সাথে স্বপ্নগুলো অস্পষ্ট বলে মনে থাকে না বেশিক্ষণ। ঘুম থেকে উঠে মাঝে মাঝে মনে হয় কিছু একটা দেখেছিল, এতটুকুই মনে হয়, কিন্তু কি দেখেছিল, ঘুম থেকে ওঠার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ভুলে যায়। কিন্তু করোনা বন্দি সময়ে স্বপ্নগুলো স্পষ্ট হয়, ভয়ংকর হয়, দিনভর ক্ষণে ক্ষণে মনে পড়ে, চিন্তার সাথে কোথাও মেলে না, এমনসব কিছুই যেন সে দেখছে। কখনো দেখছে কোনো জন্তু তাকে দৌড়োচ্ছে, কখনো দেখছে সে আকাশে উড়ছে, কখনো দেখছে একটি বিল্ডিংয়ের উপর থেকে পড়ে যাচ্ছে, কখনো দেখছে হঠাৎ করে রাস্তার মাঝখানে সে দিগম্বর হাঁটছে। কখনো দেখছে দাঁত পড়ে গেছে, কখনো দেখছে সবাই তাকে ধরে পেটাচ্ছে, কিন্তু মরছে না, মাইর খেয়ে ধীরে ধীরে হেঁটে যাচ্ছে। কখনো দেখছে পার্টনারকে রান্নার দা-বটি -ছুরি দিয়ে... বাকিটা বললাম না।

হয়তো দেখলেন, কেউ একজন গেস্ট এলো আপনার ঘরে, কিন্তু তাকে আপনি চেনেন না, অবলীলায় গল্প করছেন তারসাথে, রসালো স্বপ্ন হলে অন্য লীলাও হয়তো দেখছেন। করোনা ভাইরাসের বন্দি সময়ে লোকে এমন স্বপ্নগুলো বেশি বেশি এবং স্পষ্ট কেন দেখছে? যা একদিকে মনে হয় স্পষ্ট, আবার জীবন ঘনিষ্ট নয়, আরেকদিকে ভাবলে মনে হয়, এমন কিছুই তো ভাবেনি সে, এমন দেখলো কেন তাহলে?

এক.
আগের চেয়ে বেশি ঘুমাচ্ছে লোকে। ঘুমের এই সাইকেল যত দীর্ঘ হয়, স্বপ্ন দেখার হার তত বেড়ে যায়।

দুই.
দীর্ঘঘুমে বারবার ঘুম ভাঙলে সেই সময়ে দেখা স্বপ্ন বেশি স্পষ্ট মনে হয় এবং মনে থাকে। এইজন্যে অনেকে বলে ভোরবেলার স্বপ্ন সত্যি হয়! আসল হলো, ভোরের ঘুম ভাঙার আগে দেখাস্বপ্নটি স্পষ্ট বেশি মনে থাকে, ঘুমের বাকি অংশগুলো ভুলে যায়।

তিন.
আগে মস্তিষ্ক অনেকগুলো এবং অনেক ধরনের বাহিরের ইন্টার অ্যাকশনের কারণে এক ধরনের আচরণ করতো, একভাবে স্টিমুলেটেড হতো। এখন সামাজিক এবং বাহির বিচ্ছিন্নতার কারণে মস্তিষ্কের স্টিমুলেশন, ইন্টারএকশন ভিন্ন হচ্ছে ।

চার.
আগে স্ট্রেস ডেলিভারি দেবার জন্যে অনেক ক্ষেত্র থাকতো। এখন মস্তিষ্ক নিজেই স্ট্রেসের ডিপো হয়ে গেছে এবং সারাদিন সেগুলোর ওলোটপালোট ভাবনা মনের ভিতরে ঘটতে থাকে।

পাঁচ.
এখন মিডিয়ায় যে কোনো নিউজের চেয়ে করোনা সংক্রান্ত নিউজ বেশি, সেটা সব মাধ্যমেই ঘটছে। চোখ, কান এবং মস্তিষ্ক একই ধরনের কন্টেন্টস বারবার গিলছে।

ছয়.
মানুষ যে ইস্যুটি কন্ট্রোল করতে পারে, সেটাতে উদ্বিগ্নতা কমে। করোনা পরিস্থিতি এমন যে, এটাতে কারো কন্ট্রোলের হাত নেই। মস্তিষ্ক ক্রমাগত উদ্বিগ্নতায় এটি কন্ট্রোলের পথ খোঁজে, যা প্রতিনিয়ত মনের অগোচরেই ভাবনার ঘরে চলে। সারাদিনে একই ভাবনার অনেক রকম প্রস্তাবনা মাথায় আসে আর যায়। মন সেগুলোর সজ্ঞান গোচরে না হলেও মস্তিস্ক সেগুলোর ফিঙ্গারপ্রিন্ট ঠিকই নিতে থাকে। দিনের চিন্তার সেগুলো রাতে অপভ্রংশ হয়ে পুনঃমুদ্রণ হয়, সিম্বলিক চিত্রটি স্পষ্ট ছবির মতো হয়, প্রতিনিয়ত একই উদ্বিগ্নতার ইন্টার মিক্সিংয়ে কোনো একটা সিম্বলের মধ্যে দিয়ে সেটা ব্রেন ডেলিভারি করে, ব্রেন তার চাপ কমায় এবং ব্রেন পরের দিনের জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করে।

আগের চেয়ে বেশি ঘুমায়, আগের চেয়ে ব্রেইন কম একটিভ, আগের চেয়ে ব্রেইন কম জিনিসে দখল। ফলে মনের সেই শূন্যস্থান পূরণ হয় মনের অগোচরেই। পুরোনো জিনিস মস্তিষ্কে ফিরে আসে, বারবার ঘুম ভেঙে স্বপ্নের ছবিটাকে স্পষ্ট করে ফেলে। দিনভর উদ্বিগ্নতা, দিনভর মস্তিষ্কের কর্মহীনতা, দিনভর অকর্মন্য মস্তিষ্কে পুরোনো জিনিসের হানা, এসব একসময় বিচ্ছিন্ন কিছু সিম্বলের মধ্যে দিয়ে স্বপ্নে আসতে থাকে। ঘুম থেকে উঠে সে দৃশ্যগুলোর একটি সমন্বয়ের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট একটি স্বপ্নকে দাঁড় করায়। স্লিপিং ব্রেইন বিজ্ঞানের একটি রহস্য এখনো। আর স্বপ্নটি সেই স্লিপিংয়েই ঘটে। একদিন ব্রেইনের সেই রহস্য ভাঙবে, সাথে স্বপ্নের জটলাটিও খুলে যাবে।

লেখক: চিকিৎসক। জন্ম বাংলাদেশে। বসবাস ইংল্যান্ডে। প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ৭। উল্লেখযোগ্য বই: অনুকথা, জীবন গদ্য, বৃত্ত